সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা, কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) : নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার সান্দিকোনা ইউনিয়নের বাঘবেড় গ্রামের একটি ফসলী জমি দখল নিতে দফায় দফায় হামলা চালায় জমির মালিক দাবীদার আব্দুর রশিদ গং রা। অবশেষে শনিবার পুলিশের আহবানে এক শালিসের মাধ্যমে জমিতে যেতে মানা করা হয়েছে তাদের। 

নেত্রকোনা ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল আদালতে বিচারাধীন একটি মামলার ০.৮৭ শতাংশ জমি দখল নিতে দফায় দফায় সশস্ত্র অবস্থায় হামলা চালায় উপজেলার সান্দিকোনা ইউনিয়নের বাঘবেড় গ্রামের আব্দুর রশিদ গংরা। তবে মামলার বাদী একই গ্রামের মনজুরুল হক ভূঞা আইন শৃংখলা পরিস্থিতি সুন্দর রাখার স্বার্থে থানা পুলিশের সহায়তা চান।

এ সূত্র ধরেই গত শনিবার দুপুরে কেন্দুয়া থানা প্রাঙ্গনে এক শালিস বসে। এতে সভাপতিত্ব করেন, পৌরসভার মেয়র মো: আসাদুল হক ভূঞা, শালিসে অংশ নেন, কেন্দুয়া থানার ওসি ইমারত হোসেন গাজী, এস.আই আবুল বাশার, এডভোকেট নূরুল আলম, এডভোকেট রফিকুল ইসলাম, এডভোকেট শহিদুল হক ফকির বাচ্চু, প্রভাষক আব্দুল মান্নান ভূঞা, পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি কামরুল হাসান ভূঞা, গড়াডোবা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান খান সোহাগ, উপজেলা নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি রইছ উদ্দিন মাষ্টার, সান্দিকোনা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক কামরুজ্জামান কাজল।

শালিসের সূত্র ধরে কেন্দুয়া থানার এস.আই আবুল বাশার বলেন, আদালতে বিচারাধীন মামলার জমিটিতে দখলে যেতে আব্দুর রশিদ গংদের মানা করা হয়েছে। যদি মামলার বাদী মনজুরুল হক ভূঞা মামলায় হেরে যান সেক্ষেত্রে শালিসের মাধ্যমে তিনি ওই জমি আব্দুর রশিদ গংদের বুঝিয়ে দেবেন বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।বাঘবেড় মৌজা ৩১ খতিয়ানের ৩২৭ দাগের ৮৭ শতাংশ জমির মালিক সি.এস. আর ও আর মূলে মমরুজ আলী ভূঞা, ইয়াকুব আলী ভঞা ও উমেদ আলী ভূঞা।

ইয়াকুব আলী ভূঞার নাতী মনজুরুল হক ভূঞা দাবী করেন এই জমি ভুলক্রমে আব্দুর রাশিদ, আব্দুর খুরশেদ, জাহেরা খাতুন, সূর্যবানু, সাহেরা খাতুন ও হাজেরা খাতুনদের নামে বি.আর.এস রেকর্ড ভূক্ত হয়। এরই প্রেক্ষিতে তিনি (মনজুরুল হক) বাদী হয়ে ২০১৪ সনে নেত্রকোনা ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটি আদালতে বিচারাধীন অবস্থায় আব্দুর রাশিদ গংরা বার বার জমি দখলে নেয়ার জন্য সশস্ত্র অবস্থায় হামলা চালায়। অথচ ওই জমির খারিজ মূলে খাজনা দীর্ঘদিন ধরে পরিশোধ করছেন তিনি।

মনজুরুল হক আরো জানান, ল্যান্ড সাভে ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়েরের আগে আব্দুর রাশিদ গংরা বাদী হয়ে আদালতে ১৪৫ ধারা মোতাবেক ৩০৮/১৩ একটি মোকদ্দমা দায়ের করেন। পরে পুলিশ তদন্তক্রমে আদালতে একটি রিপোর্ট দাখিল করেন। এরই প্রেক্ষিতে আদালত বাদীর বিপক্ষে সকল বিবাদীদের পক্ষে দুতরফা সূত্রে খরচ সহ মামলা খারিজের নির্দেশ দেন।

শালিসে অংশগ্রহণকারী কেন্দুয়া কলেজের প্রভাষক আব্দুল মান্নান ভূঞা বলেন, শালিসের মাধ্যমে শান্তিশৃংখলা রক্ষায় সুন্দর একটি সিদ্ধান্ত এসেছে। যে সিদ্ধান্তটি উভয় পক্ষের জন্যই মঙ্গল জনক।

(এসবি/এসপি/জুলাই ১৬, ২০১৮)