স্টাফ রিপোর্টার : বছরের পর বছর ধরে লোকসানে নিমজ্জিত সমতা লেদারের শেয়ারের দাম সাত কার্যদিবসে বেড়েছে ১২ টাকা ২০ পয়সা। প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারের এই দাম বৃদ্ধিকে অস্বাভাবিক বলছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কর্তৃপক্ষ। এ জন্য বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করতে মঙ্গলবার তথ্যও প্রকাশ করেছে ডিএসই।

ডিএসই জানিয়েছে, কোম্পানিটির শেয়ারের অস্বাভাবিক দাম বাড়ার পেছনের কারণ জানতে চেয়ে ১৬ জুলাই নোটিশ পাঠানো হয়। এর জবাবে কোম্পানিটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে এ বিষয়ে তাদের কাছে অপ্রকাশিত কোনো মূল্য সংবেদনশীল তথ্য নেই।

তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত ৫ জুলাইয়ের পর থেকেই সমতা লেদারের শেয়ারের দাম টানা বাড়ছে। ৫ জুলাই কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ছিল ৫০ টাকা ৬০ পয়সা। যা টানা বেড়ে ১৬ জুলাই দাঁড়ায় ৬২ টাকা ৮০ পয়সায়।

এর প্রেক্ষিতে ডিএসই থেকে প্রতিষ্ঠানটিকে নোটিশ পাঠানো হয় এবং কোম্পানি কর্তৃপক্ষের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করতে তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। তবে মঙ্গলবারও কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বৃদ্ধির ধারা অব্যহত রয়েছে। দুপুর দেড়টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়েছে ৪০ পয়সা।

শেয়ারের এমন অস্বাভাবিক দাম বাড়লেও ২০১৫ সাল থেকেই লোকসানে নিমজ্জিত রয়েছে সমতা লেদার। ফলে প্রতিষ্ঠানটি বিনিয়োগকারীদের কোনো লভ্যাংশ দিতে পারছে না। যে কারণে পুঁজিবাজারের পঁচা কোম্পানি বা ‘জেড’গ্রুপে স্থান হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির। ১৯৯৮ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত এই কোম্পানিটি সর্বশেষ কবে বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দিয়েছে ডিএসইর ওয়েবসাইটে সে সংক্রান্ত কোনো তথ্যও নেই।

তবে ডিএসইর প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫ সালে সমতা লেদার ব্যবসা পরিচালনা করে ১৫ লাখ ৬০ হজার টাকা লোকসান করে। বছরটিতে শেয়ার প্রতি লোকসান দাঁড়ায় ১৫ পয়সা। পরের বছর ২০১৬ সালে এসে লোকসানের পরিমাণ কিছুটা কমে হয় ৬ লাখ ৪০ হাজার টাকা, শেয়ার প্রতি লোকসান দাঁড়ায় ৬ পয়সা।

এরপর ২০১৭ সালে সমাপ্ত হিসাব বছরে এসে লোকসানের পাল্লা ভারি হয়। বছরটিতে লোকসান বেড়ে দাঁড়ায় ১৭ লাখ ৭০ হাজার টাকা। এতে শেয়ার প্রতি লোকসান হয় ১৭ পয়সা। কোম্পানিটির এ লোকসানের ধারা চলতি হিসাব বছরেও অব্যাহত রয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি-মার্চ সময়ে ব্যবসা পরিচালনা করে লোকসান হয়েছে ৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা।

ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, কোম্পানিটির মোট শেয়ারের ৫০ শতাংশ রয়েছে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের হাতে। বাকি শেয়ারের মধ্যে ৪৬ দশমিক ৯৮ শতাংশ রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে। আর প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে আছে ৩ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ শেয়ার।

(ওএস/এসপি/জুলাই ১৭, ২০১৮)