নবীগঞ্জে কলেজ অধ্যক্ষকে ছুরিকাঘাত, ছাত্রদের বিক্ষোভ মিছিল
নবীগঞ্জ প্রতিনিধি : হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলায় বহিরাগত বখাটেদের ছুরিকাঘাত ও হামলায় নবীগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ গোলাম হোসেন আজাদসহ ৩ জন গুরুতর আহতের ঘটনায় বুধবার দুপুরে সাধারণ ছাত্ররা কলেজ ক্যাম্পাস থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে নবীগঞ্জ শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থান নতুন বাজার মোড়ে সড়ক অবরোধ করে মিছিল ও সমাবেশ করেছে।
প্রায় দেড় ঘন্টা অবরোধ চলাকালে অসহনীয় যানযটের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে নবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, সহকারী পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থলে পৌঁছে আন্দোলনকারীদের সন্ত্রাসী গ্রেফতারের আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেয় ছাত্ররা। তবে তারা আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়। এদিকে আল্টিমেটামের ২৪ ঘন্টা শেষ হয়ে গেলেও মুল হামলাকারী মুন্নাকে গ্রেফতারে পুলিশ ব্যর্থ হলে গতকাল বুধবার পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচী অনুযায়ী কলেজের সাধারণ ছাত্ররা দুপুরে কলেজ ক্যাম্পাস থেকে এক বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বের করে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন করে নবীগঞ্জ নতুন বাজার মোড়ে এসে সমাবেশে মিলিত হয়। সমাবেশ চলাকালে নতুন বাজার মোড় অবরোদ্ধ হয়ে পড়ে।
অবরোধের কারণে বিভিন্ন ধরনের হাজার হাজার যানবাহন আটকা পড়ে অসহনীয় যানযটের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে নবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এডভোকেট আলমগীর চৌধুরী, সহকারী পুলিশ সুপার পারভেজ আলম চৌধুরী, নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ এস.এম.আতাউর রহমানসহ বিভিন্ন নের্তৃবৃন্দ ঘটনাস্থলে পৌঁছে আন্দোলনকারীদের সন্ত্রাসী মুন্নাকে গ্রেফতারের আশ্বাস দিয়ে বক্তব্য প্রদান করেন। তাদের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে অবরোধ তুলে নেয় ছাত্ররা তবে তারা আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয় তারা।
ঘটনার ব্যাপারে নবীগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ গোলাম হোসেন আজাদ বাদি হয়ে নবীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। গ্রেফতারকৃত সন্ত্রাসী হুমায়ুন কবিরকে আদালতে সোপর্দ করে ৫ দিনের রিমান্ড চেয়েছে পুলিশ। মুল সন্ত্রাসী মুন্নাকে গ্রেফতারে পুলিশ জোর তৎপরতা চালিয়েছে বলে জানিয়েছেন হবিগঞ্জের সহকারী পুলিশ সুপার পারভেজ আলম চৌধুরী।
উল্লেখ্য, গত সোমবার সকালে কলেজ ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে বহিরাগত সন্ত্রাসী মুন্না অনার্স ২য় বর্ষের জনৈকা ছাত্রীর সাথে জোরপুর্বক মোবাইলে সেলফি তোলার চেষ্টা করে। এ ঘটনায় ওই ছাত্রী কলেজের অধ্যক্ষ গোলাম হোসেনের নিকট অভিযোগ দিলে অধ্যক্ষ ঘটনার বিষয়ে মুন্নার প্রতি ক্ষুব্ধ হন। এ ঘটনার জের ধরে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে নবীগঞ্জ ডিগ্রী কলেজে অর্নাস পরীক্ষা হলে পরিদর্শনে যাওয়ার পথে বখাটে মুন্না তার দলবল নিয়ে ধারালো ছুরি দিয়ে কলেজ অধ্যক্ষ গোলাম হোসেন আজাদের গলায় ও হাতে ছুরিকাঘাত করে।
এ সময় অধ্যক্ষ’কে বাচাঁতে কলেজ দপ্তরী কলেজ পাড়া এলাকার মজিদ উল্লার ছেলে ফয়জুর রহমান এগিয়ে আসলে সেও ছুরিকাঘাতের শিকার হয়। প্রাণ বাচাঁতে দিকবেদিক ছুটোছুটি করতে গিয়ে সিড়ি থেকে পড়ে আহত হয় অনার্স ২য় বর্ষের ছাত্রী চৈতী। মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১১ টার দিকে নবীগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ক্যাম্পাসে আহতদের মধ্যে ২ জন’কে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। অপর আহত কলেজ ছাত্রী চৈতী (১৮)কে নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
এদিকে ঘটনার প্রতিবাদে কলেজের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা শহরে বিক্ষোভ মিছিল এবং প্রায় ২ ঘন্টা রাস্তা অবরোধ করে রাখে। পরে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়ে অবরোধ তোলে নেয়া হয়। ঘটনার পরপরই হামলাকারী দিপন আহমেদ মুন্না মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও তার সহযোগী হুমায়ুন কবির নামের এক বখাটেকে আটক করে পুলিশে সোর্পদ করা হয়।
(এমআরএম/এসপি/জুলাই ১৮, ২০১৮)