সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : সিরাজগঞ্জ কাজিপুর উপজেলার যমুনা পূর্ব চরগিরিশ ইউনিয়নের ভেটুয়া ঘাটের জুড়ান মাঝি, বয়স প্রায় ৮০ বছরের বেশি। দীর্ঘ প্রায় ৩০-৩৫ বছর থেকে নৌকার হাল এবং পাল তুলে নদীতে পারাপার করেছেন শত শত মানুষ ও ছাত্র-ছাত্রী।

প্রখর রোদ উপেক্ষা করে শুধুমাত্র মানুষের সুখের তরী বয়েছেন।কিন্তু বয়সের কারণে এখন তিনি নুঁয়ে পড়েছেন। জুড়ান মাঝির দম্পতি জীবনে ৮ সন্তান জন্ম দিলেও তাদের সংসারে দু’সন্তান বেঁচে আছে। সেই সন্তান আঃ করিম ও আঃ খালেকও বৃদ্ধ বাবা মাকে ছেড়ে চলে গেছেন।

এখন জুড়ান মাঝির একমাত্র অবলম্বন তার স্ত্রী কদভানু খাতুন (৭০)। সেও নিতান্ত বৃদ্ধা, কিন্তু জীবনের তাগিদে জুড়ান মাঝির জীবন জুড়ে আছেন তিনি। রাস্তার ধারে ছোট একটি কুঁড়ে ঘরে কুঁপির আলোতেই কেটে যাচ্ছে সীমাহীন কষ্টের জীবন।

এ যেন অকৃত্রিম ভালোবাসা। এলাকার মানুষ টুকটাক বাজার করে দেয়, আর জুড়ান মাঝির স্ত্রী অতি কষ্টে রান্না করেন। কখনো খেয়ে আবার কখনো না খেয়ে কাটাতে হয় দিন। জীবনে অসংখ্য মানুষের স্বপ্নের সারথী ছিলেন জুড়ান মাঝি।

কিন্তু সেই জুড়ান মাঝি আজ বড়ই অসহায়। শেষ নিঃশ্বাসের প্রহর গুনছে এ দম্পতি। জানা যায়, কাজিপুর উপজেলার ৮নং ভেঁটুয়া জগনাথপুর ঘাটে জুড়ান মাঝি ৩৫-৪০ বছর নৌকায় করে শত শত মানুষ, ছাত্র-ছাত্রী, পারাপার করেছেন।

এলাকার রাস্তা-ঘাট,বিদ্যুত সহ বিভিন্ন বিষয়ে উন্নয়ন হয়েছে, কিন্তু জুড়ান মাঝির সংসারে উন্নতির স্পশ্য পায়নি। তাছাড়া দৈনন্দিন বাজারের জন্য মানুষের মুখপ্রাণে চেয়ে থাকতে হয় তাদের। এলাকার মানুষরাও তাদের সাধ্যমত সাহায্য করেন।

প্রতিবেশী শুকুর আলী মোল্লা জানান,কাজিপুর উপজেলার চরগিরিশ ইউনিয়নের চর মোমিন গ্রামের বাসিন্দা জড়ান মাঝি। তিনি ভেঁটুয়া জগ্নাথপুর খেয়াঘাটে যমুনা নদীতে দীর্ঘ ৩০-৩৫ বছর মাঝি হিসেবে নৌকায় মানুষ পারাপারের কাজ করেছেন।

বর্তমানে অসুস্থ এবং অসহায় জুড়ান মাঝি ও তার স্ত্রী। দুই ছেলে থাকলেও বৃদ্ধ বাবা মায়ের খোঁজ খবর রাখে না। এলাকার মানুষ একটু দেখভাল করে।এই ভাবেই চলছে বৃদ্ধ জুড়ান মাঝি জীবন সংসার।

(এমএএম/এসপি/জুলাই ১৯, ২০১৮)