গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি : ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার মাওহা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপসহকারি কর্মকর্তা আজিজুল হককে মারধর করে অফিস থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগে পাওয়া গেছে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রমিজ উদ্দিনের বিরুদ্ধে। বুধবার বিকালে চেয়ারম্যান ওই কর্মকর্তাকে ভূমি অফিসের ভেতর প্রকাশ্যে মারধর করে তাকে অফিস থেকে বের করে দেয়। পরে ওই কর্মকর্তা বাদী হয়ে বুধবার রাতেই ইউপি চেয়ারম্যান রমিজকে আসামি করে গৌরীপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। রমিজ উদ্দিন মাওহা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান।

স্থানীয় ও ভূমি অফিস সূত্রে জানা গেছে, মাওহা ইউনিয়নের করমড়িয়া গ্রামের এক নারী বুধবার বিকালে মাওহা ইউনিয়ন ভূমি অফিসে জমির খাজনার টাকা পরিশোধ করতে যান। এসময় ভূমি অফিসের উপসহকারি কর্মকর্তা আজিজুল হক ভূমির খাজনা বাবদ ১৬৭০ টাকা আদায় করেন ওই নারীর কাছ থেকে। এর কিছুক্ষণ পর চেয়ারম্যান রমিজ ভূমি অফিসে গিয়ে আজিজুল হককে ওই নারীর খাজনার টাকার পরিমাণ কমানোর কথা বলেন।

এ নিয়ে দুজনের মধ্যে বাক-বিতন্ডা হলে রমিজ ওই কর্মকর্তাকে অফিসের ভেতরেই কিল, ঘুষি, চড়-থাপ্পড় মারতে থাকেন। এক পর্যায়ে রমিজ তাকে শার্টের কলার ধরে টেনে-হিচড়ে অফিসের গেট দিয়ে বাইরে বের করে দেন। পরে ওই কর্মকর্তা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর পর সেখান থেকে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়।

উপসহকারি কর্মকর্তা আজিজুল হক বলেন, চেয়ারম্যান রমিজ এক নারীর ভূমির খাজনা ১৬৭০ টাকার পরিবর্তে মাত্র ১০ টাকার রশিদ কাটতে বলেন। আমি অস্বীকৃতি জানালে তিনি আমাকে অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ করে অফিসের ভেতরেই কিল, ঘুষি, চড়-থাপ্পড় মারতে থাকেন। পরে আমাকে প্রকাশ্যে শার্টের কলার ধরে টেনে-হিচড়ে অফিসের গেট দিয়ে বাইরে বের করে দেন।

ইউপি চেয়ারম্যান রমিজ উদ্দিন জানান, ওই ভূমি কর্মকর্তা ঘুষ ছাড়া অফিসে কোনো কাজ করে না। ঘুষ না দিলে সে সেবা নিতে আসা লোকজনকে হয়রানি করে। এলাকাবাসী বিষয়টি আমাকে জানালে আমি ওই কর্মকর্তাকে ঘুষ নিয়ে কাজ করতে নিষেধ করি। কিন্তু উনি আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করায় আমি তাকে অফিস থেকে বেরিয়ে যেতে বলি। তাকে মারধরের অভিযোগ সত্য নয়।

গৌরীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ দেলোয়ার আহম্মদ বলেন, মারধরের শিকার ওই কর্মকর্তা রমিজ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে। রমিজকে গ্রেফতার করতে পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

ইউএন ফারহানা করিম বলেন, ভূমি কর্মকর্তার কোনো ত্রুটি থাকলে চেয়ারম্যান আমাদের বিষয়টি জানাতে পারতেন। কিন্তু তা না করে চেয়ারম্যান নিজেই আইন হাতে তুলে নিয়ে নিয়েছেন। বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখ জনক।

উল্লেখ্য, চেয়ারম্যান রমিজ উদ্দিন ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে স্থানীয় দুইজন সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করেন এবং ২০১৭ সালের জুন মাসে ৪তারিখ স্থানীয় দুই যুবককে আটক করে প্রকাশ্যে খুটিতে বেধে মারধর করে নির্যাতনের ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছিল। যা ৭জুন দৈনিক ইত্তেফাকসহ বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল।

(এসআইএম/এসপি/জুলাই ১৯, ২০১৮)