মাদারীপুর প্রতিনিধি : নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান বলেছেন, আওয়ামীলীগ সরকার যে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করেছে; সে বিচার কাজ শেষ করতে হলে, দেশে জঙ্গী সন্ত্রাস নির্মুল করতে হলে এবং উন্নয়নের ধারা বজায় রাখতে হলে শেখ হাসিনাকে আবারো ক্ষমতায় আনতে হবে। আজকে সামাজিক নিরাপত্তার আওতায় বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, পঙ্গু ভাতা, মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতা রক্ষা করতে হলে আবারো নৌকায় ভোট দিয়ে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখতে হবে। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় না থাকলে এদেশে যুদ্ধারাধীদের বিচার শেষ হবে না। গরীব দুঃখির জন্য দেয়া ভাতা থাকবে না। জামাত বিএনপি ক্ষমতায় এলে দেশটাকে আবারো জঙ্গী রাষ্ট্র বানাবে। তারা দেশের মানুষের উন্নয়ন না করে নিজেদের উন্নয়ন করবে। 

বুধবার সন্ধ্যায় মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার পাইকপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন শেষে স্থানীয় আওয়ামীলীগ আয়োজিত সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দিতে গিয়ে মন্ত্রী এ কথা বলেন।

নৌমন্ত্রী আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ১৯৭১ সালে পাকিস্তান ও এদেশে তাদের দোসরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে আমরা এ দেশ ছিনিয়ে এনেছি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় জন্ম নেয়া আজকের সন্তান কোন মাদকাসক্তে আক্রান্ত হতে পারে না। স্বাধীনতার চেতনায় বেড়ে ওঠা আমাদের সন্তানরা কোন সন্ত্রাস ও জঙ্গী হতে পারে না। স্বাধীনতা বিরোধী জামাত-বিএনপির পৌষ্যরা সন্ত্রাস আর জঙ্গীদের লালন করে। তারা এদেশকে জঙ্গী রাষ্ট্র বানাতে চায়। দেশটাকে রসাতলে নেয়ার জন্য বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করে। স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাসী সন্তানদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে সন্ত্রাস ও জঙ্গী নির্মুল করতে হবে।

শাজাহান খান বলেন, শেখ হাসিনাকে উৎখাত করার জন্য বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া ষড়যন্ত্র করেছিল। আন্দোলনের নামে পেট্রোল বোমা মেরে আগুন দিয়ে এদেশের নিরীহ কৃষক, শ্রমিক, বাস ড্রাইভার, হেলপার, ও সাধারণ মানুষকে হত্যা করেছে। নির্বিচারে গাড়ি পুড়িয়েছে, এদেশের সম্পদ ধ্বংস করেছে। পুলিশ, শ্রমিক, ব্যাংক কর্মচারী, নারী শিশুসহ অসংখ্য সাধারণ মানুষকে পেট্রোল মেরে আগুনে পুড়িয়ে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। আর এ জন্য খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বিএনপি নেতারা বলেন রাজনৈতিক কারণে নাকি খালেদাকে আটকানো হয়েছে। খুন যদি রাজনীতি হয়, এই খুনের রাজনীতি বাংলার মানুষ চায় না। আর যারা মানুষ খুন করবে তাদের বিরুদ্ধে আজ বাংলার জনগণ ঐক্যবদ্ধভাবে দাঁড়িয়েছে।

তিনি আরো বলেন, যারা পবিত্র কোরআন শরীফের দোহাই দিয়ে এদেশের নিরীহ মানুষ হত্যা করেছে তারা মুসলমান নয়। মুসলমান হলো তারা, যাদের হাতে সকল মানুষ নিরাপদ থাকে।

নৌমন্ত্রী প্রশ্ন করে বলেন, স্বাধীনতা বিরোধী জামাত-বিএনপির হাতে কখনো এদেশের মানুষ নিরাপদে ছিল ? এ কারণে ওরা মুসলমান নয়। ওরা সন্ত্রাসী-জঙ্গী। ওরা সরকারকে উৎখাত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। বিএনপি-জামাত পকিস্তানি কায়দায় এদেশে জঙ্গী রাষ্ট্র কায়েম করতে চায়। একমাত্র শেখ হাসিনার আমলেই এদেশের সাধারণ মানুষ নিরাপদে আছে। এ কারণে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থেকে আবারো আওয়ামীলীকে ক্ষমতায় আনতে হবে।

মন্ত্রী বলেন, আগামী ডিসেম্বর মাসের জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি-জামাত রাজাকার জোটকে পরাজিত করে আবারো আমরা বিজয় লাভ করব ও শেখ হাসিনা সরকার গঠন করবে এবং দেশের উন্নয়ন হবে। শেখ হাসিনা আছে বলে দেশের উন্নয়ন হয়। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আগামীতে আবারো সবাইকে একযোগে নৌকার পক্ষে কাজ করার আহবান জানান তিনি।

রাজৈরের পাইকপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. বালা মিয়ার সভাপতিত্বে সুধী সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন রাজৈর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজাহান খান, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এম এ মোতালেব মিয়া, রাজৈর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার শেখ মো. সেকান্দার আলী, মাদারীপুর জেলা পরিষদের সদস্য মো. ইকবাল হোসেন. সাবেক চেয়ারম্যান হাজী মহসিন মিয়া, পাইকপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান মো. শাহাদাত হোসেন প্রমুখ।

(এএসএ/এসপি/জুলাই ১৯, ২০১৮)