মাদারীপুর প্রতিনিধি : মাদারীপুর সদর উপজেলার পশ্চিম রাস্তি এলাকার মতলেব সরদারের ছেলে সাব্বির সরদার একই এলাকার এক কিশোরীকে দুই বছর ধরে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে প্রেমের সম্পর্ক তৈরী করে একাধিকবার ধর্ষণ করেছে এবং ৭ মাসের অন্তঃসত্তা বলে অভিযোগ করেছে এক কিশোরী।

এই ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে মাদারীপুর সদর থানায় সাব্বিরকে প্রধান আসমী করে ৪ জনের নাম উল্লেখ করে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে একটি মামলা করেছে ভুক্তোভুগী কিশোরী।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ছোট বেলায় ঐ কিশোরীর বাবা-মা মারা যায়। এরপর ঐ কিশোরী নানা বাড়ীতে থাকতো। ভুক্তোভুগী কিশোরী সাব্বির সরদারের ছোট বোন সোনিয়ার সমবয়সী হওয়ায় মাঝে মধ্যে সাব্বিরদের বাড়ীতে যেত এবং রাতে তার বোনের সাথে একত্রে ঘুমাতো।

এভাবে ঐ বাড়িতে যাওয়া আসায় প্রায় ২ বছর ধরে সাব্বির কিশোরীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করছিল।

একদিন রাতে সোনিয়ার সাথে ঐ কিশোরী ঘুমিয়ে ছিল। ভোরে সোনিয়ার প্রাইভেট থাকায় সে ঘুম থেকে উঠে চলে যায়। এই সুযোগে সাব্বির ঘরে ঢুকে দরজা লাগিয়ে ২০১৭ সালের ২০ ডিসেম্বর ঐ কিশোরীকে জোর করে ধর্ষণ করা চেষ্টা করে। কিশোরী বাধা দিলে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে তাকে ধর্ষণ করে। কিশোরীকে বিয়ে করার আশ্বাস দেয়া হয়। এরপর থেকেই তাকে ভালবাসা ও বিয়ের আশ্বাস দিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করেছে।

বর্তমানে মেয়েটি ৭ মাসের অন্তঃসত্তা। তার মেডিকেল রিপোর্টসহ মাদারীপুর সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা নং-৫৮/৪৮৭।

ভুক্তোভুগী কিশোরী বলেন, আমাকে প্রথমে হত্যার হুমকি দিয়ে করে ধর্ষণ করেছে। এরপর একাধিকবার বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে একই কাজ করছে। আমি যখন ওর সন্তানের মা হতে চলেছি তখন অনেকবার অনুরোধ করেছি আমাকে বিয়ে করার জন্য। আমার আত্মীয়স্বজন দিয়েও অনেকবার বলেছি। এখন আমি সাব্বিরের ৭ মাসের সন্তান গর্ভে নিয়ে অসহায় হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি। তাই বাধ্য হয়ে মামলা করতে হয়েছে। আমি ও আমার সন্তানের সামাজিক স্বীকৃতি চাই।

ভুক্তোভুগী কিশোরীর বড় বোন বলেন, আমার বাবা-মা কেউ বেচে নেই, তাই বাধ্য হয়ে নানা বাড়ীতে আমার বোন ও ভাইকে রেখে পড়াশুনা করিয়ে ছিলাম। তবে অভাবের কারণে বোনের পড়াশুনা করতে পারেনি। আমার বোনের যে অবস্থা তাতে আমাদের মান-সম্মান নিয়ে বেচে থাকা দায়। আমি এখন একটি দাবী করবো, তা হলো আমার বোনকে স্ত্রী হিসাবে সামাজিক স্বীকৃতি দিতে হবে।

অভিযুক্ত সাব্বিরের বাবা মতলেব সরদার বলেন, আমার ছেলে যদি অপরাধ করে থাকে তাহলে তার বিচার হবে। তবে এটাতো ধর্ষণ না, এটা দুইজনের মতামতে হয়েছে। এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে। তবে কেন তারা মামলা করেছে। এখন আমরা কিভাবে আলোচনা করবো।

মাদারীপুর সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুল হাসান বলেন, ধর্ষণের অভিযোগে থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। আমরা অতিসত্তর মামলার তদন্ত করে আসামীকে গ্রেফতার করার চেষ্টা করবো।

(এএসএ/এসপি/জুলাই ২০, ২০১৮)