কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : “মেয়েকে লেখাপড়া করাবো, বাল্য বিয়ে দেব না”, “কোন কিশোরীকে বিয়ে করবো না এবং কোন মেয়েকে উত্যক্ত করবো না” সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীর বিয়ের আয়োজন করতে গিয়ে প্রশাসনের কাছে এ মুচলেকা দিয়ে রক্ষা পেল কনের বাবা-মা এবং বর ও তার পিতা।

পটুয়াখালীর কলাপাড়ার চম্পাপুর ইউনিয়নের মাছুয়াখালী গ্রামে শনিবার দুপুরে এ বিয়ের আয়োজন ভেস্তে যায় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপে। বাল্যবিয়ে থেকে রক্ষা পায় আল অমিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী মোসা. কল্পনা।

জানা যায়, কলাপাড়ার চম্পাপুর ইউনিয়নের মাছুয়াখালী গ্রামের আনেছ সিকদার ও লাভলী বেগমের মেয়ে কল্পনার বিয়ের আয়োজন করে গলাচিপা উপজেলার ডাকুয়া গ্রামের খলিল হাওলাদারের ছেলে পোষাক কারখানার শ্রমিক রুমান হাওলাদারের সাথে। কল্পনার অমতে দুই পরিবার এই বিয়ের আয়োজন করে।

শনিবার সকালে স্কুলে যাওয়ার পথে কল্পনা জানতে পারে আজ তার বিয়ে। এতে ভেঙ্গে পড়ে কল্পনা। দুপুরে বরপক্ষও উপস্থিত হয়। স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে বিয়ে বন্ধ করে দেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান।

ইউপি চেয়ারম্যান রিন্টু তালুকদার জানান, বাল্যবিয়ের খবর শুনে উভয়কে ডেকে নিয়ে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তানভীর রহমানকে বিষয়টি অবহিত করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কলাপাড়া থানার ওসিকে বাল্যবিয়ে বন্ধ করে আইনী পদক্ষেপ নেয়ার কথা বললে পুলিশ বিকালে বর-কনেসহ উভয় পরিবারকে কলাপাড়ায় থানায় নিয়ে যায়।

কল্পনা জানায়, তার ইচ্ছা লেখাপড়া করার। কিন্তু হঠাৎ বিয়ের খবর শুনে কি করবে ভেবে পাচ্ছিলেন না। প্রশাসন এ বিয়ে বন্ধ করায় সে খুবই খুশি। খুশি তার সহপাঠীরাও।

আল অমিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বাবুল মৃধা জানান, তাদের বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর বাল্যবিয়ের খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও প্রশাসনকে তারা অবহিত করেন। প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপে এ বিয়ে বন্ধ হওয়ায় খুশি স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক ও এলাকার লোকজন।

কলাপাড়া থানার ওসি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন সাংবাদিকদের জানান, ছেলে-মেয়ের পরিবার বাল্য বিয়ে দিবে না এবং বাল্য বিয়ে করবে না এ মুচলেকা দেয়ায় তাদের রাতে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

(এমকেআর/এসপি/জুলাই ২২, ২০১৮)