রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : পূর্বজন্ম সূত্রে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ শাণদিপনী মুনির কাছে দীক্ষা নিয়েছিলেন। সেই গুরুদেবের মেয়ে ছিলেন রাজর্ষী মহর্ষি ইন্দ্রদ্যুম রাজার স্ত্রী গণ্ডিচা বা শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের মাসি। আষাঢ় মাসের শুক্লাপক্ষের পূর্ণিমা তিথিতে জগন্নাথদেবের ভক্তরা মাতুলালয়ে জলকেলী বা পূণ্যস্নান করান। এতে জগন্নাথদেবের সর্দি কাশি ও জ্বর হওয়ায় ১৫ দিনের বিশ্রামের পর অমাবস্যার দ্বিতীয়ায় রথে চড়িয়ে তাকে তার মাসি গণ্ডিচার বাড়িতে আনা হয়। সেখান থেকে আট দিন পর তাকে আবারো মাতৃলয়ে আনা হয়। ভগবানের যত রকম বিগ্রহ আছে তা দেখে যতটা না পূর্ণ হয় জগন্নাথ দেবের অসম্পূর্ণ বিগ্রহ দেখে তার চেয়ে শতগুন পূর্ণ হয়। জগতের সকল জীবকে দর্শণ দেওয়ার জন্য প্রতি বছর জগন্নাথ দেব রাজপথে নেমে থাকেন। দ্বৈবযুগে ব্রহ্মার পঞ্চমাত্মক পুরুষ থেকে মর্তে রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। শুধুমাত্র কলিযুগ নয়, জগতের কল্যানে আগামিতে যুগ যুগ ধরে জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে।

রবিবার বিকেলে পুরিতন সাতক্ষীরা মায়ের বাড়িতে শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের উল্লো রথ উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।

জয়মহাপ্রভু সেবক সংঘের আয়োজনে সংগঠণের সভাপতি বিশ্বনাথ ঘোষের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাংসদ মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি। উদ্বোধক হিসেবে বক্তব্য রাখেন শ্যাম সুন্দর মন্দিরের অধ্যক্ষ পরম পুরুষ কৃষ্ণদাস ব্রক্ষ্মচারী। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন জেলা জয়মহাপ্রভু সেবক সংঘের সহ-সভাপতি গোষ্ঠ বিহারী মন্ডল, জেলা হিন্দু বৈদ্ধ্য খ্রিষ্ট্রান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক স্বপন কুমার শীল, জেলা মন্দির সমিতির সাধারণ সম্পাদক রঘুজিৎ গুহ, জেলা মন্দির সমিতির সাবেক সভাপতি ধীরু ব্যাণার্জী, ডা. সুশান্ত ঘোষ, জেলা জয়মহাপ্রভু সেবক সংঘের সহ-সভাপতি বিকাশ দাস, জেলা সহকারি শিক্ষা অফিসার অলোক কুমার তরফদার, ডা. প্রশান্ত কুমার কুন্ডু, জেলা জয়মহাপ্রভু সেবক সংঘ যুব কমিটির সভাপতি রনজিৎ সরকার, সাধারণ সম্পাদক মিলন কুমান বিশ^াস, সদর উপজেলা জয়মহাপ্রভু সেবক সংঘ যুব কমিটির সভাপতি অসীম বিম্বাস, সাধারণ সম্পাদক বাসুদেব দাস, জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শেখ নুরুল হক, জেলা বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি মকসুমুল হাকিম প্রমুখ।

বিকেল ৫টায় মন্দির প্রাঙ্গনে ফিতা কেটে শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের উল্টোরথযাত্রা উৎসবের র‌্যালির উদ্বোধন করা হয়। র‌্যালিটি মন্দির থেকে বের হয়ে সাতক্ষীরা শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে অবারো মায়ের বাড়িতে এসে শেষ হয়। তবে হালকা হালকা বৃষ্টিতে ভিজে কয়েক হাজার পূণার্থীদের আনন্দ সাতক্ষীরা শহরবাসীকে আকৃষ্ট করে।

সমগ্র অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন জেলা জয়মহাপ্রভু সেবক সংঘের সহ-সভাপতি নিত্যানন্দ আমিন।

এছাড়া কলারোয়া, ঝাউডাঙা, তালা সদর, গোপালপুর, কালিগঞ্জের গোবিন্দকাটি, চম্পাফুল কালিবাড়ি, শ্যামনগর সদর, আশাশুনির কয়েকটি স্থানে যথাযোগ্য মর্যাদায় উল্টো রথ পালিত হয়েছে।# সাতক্ষীরা প্রতিনিধি।

(ওএস/এসপি/জুলাই ২২, ২০১৮)