উজ্জ্বল হোসাইন, চাঁদপুর : হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাবেদুল ইসলামের প্রচেষ্টায় পুরো ৮দিন পর শিশু বিলকিস (৫) পেলো আপন ঠিকানা। এ কদিন দেশের বিভিন্ন থানা আর বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ খবর নিয়ে লোক পাঠিয়ে বিলকিসের পিতা-মাতার সন্ধান লাভ করেন ওসি জাবেদুল ইসলাম। খবর দিয়ে আনা হয় পৃথক থাকা শিশুটির বাবা-মাকে। এর পরেই গত শনিবার রাতে শিশুটিকে তার মা-বাবার কাছে বুঝিয়ে দেন এই কর্মকর্তা। গত ১৪  জুলাই শনিবার বিকেলে টয়লেটে যাওয়ার কথা বলে শিশুটিকে তার মা মায়া বেগম হাজীগঞ্জ বড় মসজিদের সামনে রেখে পালিয়ে যায়।

থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, হাজীগঞ্জ বড় মসজিদের সামনে শিশুটিকে কান্নাকাটি করতে দেখে স্থানীয় লোকজন। এরপর বিভিন্নভাবে খোঁজ-খবর নেয়া হয় শিশুটির সাথে আসা মায়ের। শেষ পর্যন্ত কোনো হদিস না পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দিয়ে শিশুটিকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। শিশুটি তার বাবা-মায়ের নাম এবং তাদের বাড়ি বানেশ্বর বলে জানায়।

এটুকু ঠিকানায় পুলিশ কোনোভাবেই কুলকিনারা পাচ্ছিল না। শেষ পর্যন্ত অফিসার ইনচার্জ জাবেদুল ইসলাম-এর পেছনে লেগে থাকার কারণে শিশুটির বাবা-মায়ের খোঁজ মিলে এবং খবর দিয়ে তাদেরকে হাজীগঞ্জ থানায় আনা হয় আর বাবা-মার কাছে শিশুটিকে বুঝিয়ে দেয়া হয়।

পুলিশ সূত্রে আরো জানা যায়, শিশুটির বাবা হাজীগঞ্জ উপজেলার ৫নং সদর ইউনিয়নের বেতিয়াপাড়া গ্রামের আবুল বাশার ওরফে বাদশা ড্রাইভার। আর মা হচ্ছে রাজশাহী জেলার পুটিয়া থানার বানেশ^র (ঠা-ারপাড়া) গ্রামের মোসাঃ মায়া বেগম । শিশুটির জন্মের ১৮ দিন পর তার মা মায়া বেগম শিশুটিকে নিয়ে স্বামীর বাড়ি ত্যাগ করে রাজশাহী চলে যান। আর্থ-সামাজিক অবস্থা আর অর্থনৈতিক দূর্বলতার কারণে গত ১৪ জুলাই (শনিবার) হাজীগঞ্জ বড় মসজিদের সামনে শিশু কন্যা বিলকিছকে রেখে তার মা (মায়া বেগম) পালিয়ে যায়।

এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ জাবেদুল ইসলাম জানান, শিশুটির বাবা-মার সেফারেশনের কারণে সে তার বাবাকে চিনতে পারেনি আর এ কারণে সে তার বাবার সাথে না যেতে চাওয়ায় তাকে তার মায়ের কাছে দেয়া হয়। মা মায়া বেগমের বিয়ে না হওয়া পর্যন্ত শিশুটি তার কাছে থাকবে। শিশুটির বাবা এজন্যে প্রতি মাসে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা করে দিবে এবং মায়ের বিয়ে হলে শিশুটিকে বাবার কাছে হস্তান্তর করা হবে। এসব বিষয় লিখিত অঙ্গীকারনামায় বাবা-মার স্বাক্ষর রেখে শিশুটিকে বুঝিয়ে দেয়া হয়।

(ইউএইচ/এসপি/জুলাই ২৩, ২০১৮)