রঞ্জন কৃষ্ণ পন্ডিত, টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার দশকিয়া ইউনিয়নের খাস মগড়া গ্রামের সহায় সম্বলহীন অসহায় মিষ্ট ঋষিল স্ত্রী সাগরি ঋর্ষি (৩৫)। মৃত স্বামীর পৈতৃক সুত্রে পাওয়া দু-চালা একটি ঘর থাকলেও সংসারের অভাব অনটনের কারনে ঘরটি কখনও মেরামত করতে পারেনি। দীর্ঘ দিনের ইচ্ছে ছিলো একটি ভাল ঘরে থাকার কিন্তু কথনও এই বিধবার স্বপ্ন পূরণ হয়নি।

গত ৭ মাস পূর্বে স্থানীয় ইউপি সদস্য আঃ কাদের জানায়, ২০ হাজার করে টাকা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী অসহায় মানুষদের ২ মাসের মধ্যে ১লাখ টাকা মূল্যের একটি করে ঘর তৈরি করে দিচ্ছে। স্থানীয় ওই মেম্বারের কথামত দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন পুরনের লক্ষ্যে ৬ হাজার টাকা হাঁস, মুরগী, ছাগল বিক্রী করে সংগ্রহ করে এবং বাকী টাকা স্থানীয়ভাবে ধার দেনা করে সংগ্রহ করে এক মাসের মধ্যে তাকে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেই। আজও প্রধানমন্ত্রীর সেই প্রকল্পের ঘরের দেখা মেলেনি, টাকাও ফেরৎ পাচ্ছেনা গৃহবধূ সাগরি ঋৃষি। অন্য একজন কালিহাতি উপজেলার দশকিয়া পূর্বপাড়ার জয়নাল আবেদীন এর স্ত্রী মালেকা বেগম।

পঙ্গু স্বামী নিয়ে কয়েকটি টিন দিয়ে একচালা একটি ঘর তৈরি করে কোন রকমে বসবাস তাদের। তিনিও ভাল একটি ঘর পাওয়ার আশায় স্থানীয় আরেক দালালকে ২০ হাজার টাকা দিয়ে ঘরের দেখা পাচ্ছেনা টাকাও ফেরৎ পাচ্ছে। এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে একটি সংঘবদ্ধ দালাল চক্র অসহায় দরিদ্র মানুষের নিকট থেকে ঘর পাইয়ে দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। দশকিয়া ইউপি সদস্য আঃ কাদের খাসমগড়া ঋৃষি বাড়ীর ৩০ টি পরিবারের কাছ থেকে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। ফলে একদিকে সরকারের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে অন্যদিকে অসহায় দরিদ্র মানুষরা প্রতারিত হয়ে সর্বসান্ত হচ্ছে। কর্তৃপক্ষকে দ্রুত বিষয়টি তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবী ভুক্তভোগীদের।

এদিকে স্থানীয় দালালদের কেউ কেউ অসহায়দের কাছ থেকে টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করলেও তারা নিজেরাও অন্য দালালের কাছে টাকা দিয়ে বিপদে পড়েছে। ঘরও পাচ্ছেনা টাকাও ফেরৎ পাচ্ছেনা অন্য দিকে স্থানীয়দের টাকার চাপে অনেকটাই বাড়ি ছাড়া হয়ে পড়েছে তারা।

এবিষয়ে কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোসাম্মৎ শাহিনা আক্তার জানান, প্রধানমন্ত্রীর জমি আছে ঘর নেই নামের আশ্রায়ন প্রকল্পটি অসহায় দরিদ্র মানুষদের বাসস্থানের ব্যবস্থা করা। এ প্রকল্পের নাম করে যদি কোন ব্যক্তি টাকা পয়সা নিয়ে থাকে এ বিষয়ে আমার জানা নেই। তবে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

(আরকেপি/এসপি/জুলাই ২৩, ২০১৮)