স্টাফ রিপোর্টার : নওগাঁর বিচ্ছেদ হওয়া পরিবারের এক গহবধূকে উদ্দেশ্য করে হাইকোর্ট বলেছেন, শাশুড়িরা হচ্ছেন মায়ের মতো, তাদের সেবা করবেন, শাশুড়ির সঙ্গে মিলেমিশে থাকবেন।

এ সময় আদালত গহবধূ তৌহিদা আক্তার ও তার স্বামী পারভেজকে উদ্দেশ্য করে আরও বলেন, ভাঙা সংসারে শিশুর শারীরিক বিকাশ ঘটলেও মানসিক বিকাশ ঘটে না। স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রীর মামলা করার প্রসঙ্গ টেনে আদালত বলেন, মামলা করে সংসার করা যায় না।

নওগাঁ সদর উপজেলার বাংগাবাড়িয়া গ্রামের বিচ্ছেদে থাকা ওই দম্পতিকে উদ্দেশ্য করে মঙ্গলবার বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এমন মন্তব্য করেন।

এ সময় আদালত স্বামী-স্ত্রী উভয়পক্ষকে নিজেদের মধ্যে আপস করে বিচারাধীন মামলা প্রত্যাহারের পদক্ষেপ নিয়ে আদালতকে জানানোর জন্য বলেছেন।

আদালতে শিশুর মায়ের পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটির প্যানেল আইনজীবী অমিত দাস গুপ্ত। স্বামীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এএসএম শাহরিয়ার কবির।

পরে অমিত দাসগুপ্ত বলেন, আদালত উভয়পক্ষকে পারস্পরিক বোঝাপড়া করতে সময় দিয়েছেন। এ মামলার পরবর্তী আদেশের জন্য ৫ আগস্ট দিন রেখেছেন।

উল্লেখ্য ২০০৮ সালের ২৭ জুন নওগাঁ সদর উপজেলার বাংগাবাড়িয়া গ্রামের মো. সাজ্জাদুর রহমানের সঙ্গে একই উপজেলার কুসুমদি গ্রামের তৌহিদা আক্তারের বিয়ে হয়। পরে জন্ম নেয় মেয়ে সাজফা সাজিদা। দাম্পত্য কলহের কারণে গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। সন্তানকে নিজ হেফাজতে নিতে হাইকোর্টে রিট করেন সাজ্জাদুর। গত ৩০ মে হাইকোর্ট শিশুটিকে আদালতে হাজির করতে নওগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেন। এরপর ২৭ জুন শিশুটিকে আদালতে হাজির করা হয়। একইসঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বাবা-মাও।

ওইদিন শিশু সাজফা সাজিদাকে (৮) আপাতত মায়ের হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। তবে তার বাবা সপ্তাহে কমপক্ষে একদিন সন্তানকে দেখতে পারবেন। তবে এ সময়ের মধ্যে স্বামী-স্ত্রীর দ্বন্দ্ব নিরসন করা যায় কি-না সে বিষয়ে উভয় পক্ষকে প্রচেষ্টা চালাতে বলেছেন আদালত।

অমিত দাসগুপ্ত বলেন, আদেশ অনুসারে শিশুটির বাবা দুইবার তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছে। শিশুটির সঙ্গে সম্পর্ক হয়েছে। এখন বাবা শিশুর ভরণ পোষণের জন্য ৫ হাজার টাকা করে দিতে প্রস্তুত রয়েছে। এরপর আদালত বাবা-মায়ের পারস্পরিক বোঝাপড়ার জন্য আরও সময় দিয়ে ৫ আগস্ট আদেশের দিন রেখেছেন।

তিনি আরও বলেন, ‘বিচ্ছেদের পর শিশুটির মা তার বাবার বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেছেন। এ বিষয়ে আদালত বলেছেন, মামলা করে সংসার করা যায় না। এছাড়াও আদালতে শিশুটির বাবা বলেছে, সে (সাবেক স্ত্রী) আমার মায়ের সঙ্গে থাকতে চায় না। তখন আদালত বলেন, শাশুড়ি হচ্ছে মায়ের মতো। তাকে নিয়েইতো সংসার করতে হয়।

(ওএস/এসপি/জুলাই ২৪, ২০১৮)