স্পোর্টস ডেস্ক : এক ম্যাচের ইতিবাচক ফলাফল পুরো একটি দলের চেহারা কতটা বদলে দিতে পারে, সেটা এই বাংলাদেশ দলকে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। ওয়েস্ট ইন্ডিজ যাওয়ার আগের মাসে ভারতের দেরাদুনে গিয়ে আফগানিস্তানের সঙ্গে টি-টোয়েন্টিতে হোয়াইটওয়াশ, ওয়েস্ট ইন্ডিজ গিয়ে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে দাঁড়াতেও না পারা দলটি ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে এসেই পেলো জয়ের দেখা। এই একটি জয়েই পুরোপুরি বডি ল্যাঙ্গুয়েজ বদলে গেলো টাইগারদের।

গায়ানার প্রোভিডেন্ট স্টেডিয়ামেই যে আবার স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মাঠে নামছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। আগের ম্যাচের মত এই ম্যাচটা দিনের আলোয় নয়, দিবারাত্রির। তবুও টাইগারদের ভয়ের কিছু নেই। কারণ, এই মাঠেই তো আগের ম্যাচে জয়ের ভিত রচিত হয়েছিল বাংলাদেশের। সুতরাং, দ্বিতীয় ম্যাচে টাইগারদের দারুণ উজ্জীবিত একটি দলই মাঠে নামবে।

পুরো দলটাই বলতে গেলে বদলে গেছে অধিনায়ক মাশরাফির জাদুর ছোঁয়ায়। মাশরাফি দলে যোগ দেয়ার পরই বদলে গেলো পুরো দলের চেহারা। দারুণ উজ্জীবিত একটি দল এখন ‘টিম বাংলাদেশ’। যে কারণে দেখা গেলো প্রোভিডেন্স স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরুতে এনামুল হক বিজয়ের উইকেট হারানো সত্ত্বেও দুই সিনিয়র ব্যাটসম্যান সাকিব এবং তামিমের দৃঢ়তায় ২০৭ রানের বিশাল জুটি গড়ে ওঠে। শেষে তামিমের সেঞ্চুরি এবং মুশফিকের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ২৭৯ রানের বড় স্কোর গড়ে তোলে বাংলাদেশ।

মাশরাফি আগেও সাকিব আল হাসানকে ওয়ানডাউনে ব্যাট করিয়ে সাফল্য পেয়েছেন। সেই কৌশল তিনি গায়ানায়ও কাজে লাগালেন এবং সফল হলেন। পরে তো বোলিংয়ে নিজে এবং ক্যাপ্টেন্সিতে পুরোপুরিভাবেই ক্যারিবীয়দের বিধ্বস্ত করলেন মাশরাফি। ম্যাচ শেষে উজ্জীবিত বাংলাদেশের রহস্য জানা গেলো মাশরাফির মুখেই। তিনি জানিয়েছেন, ‘খেলোয়াড়দের বলেছি ভয়-ডরহীন ক্রিকেট খেলতে। দেশের জন্য নিজেদের উজাড় করে দিতে। সে কারণেই সম্ভব হয়েছে, এমন জয় পাওয়া।’

বোঝাই যাচ্ছে মাশরাফি কিভাবে উজ্জীবিত করেছেন পুরো দলকে। সেই দলটিই, সেই স্পিরিট নিয়ে একই মাঠে নামবে একই প্রতিপক্ষকে মোকাবেলা করার জন্য। নিশ্চিতভাবেই আজ আরও উজ্জীবিত থাকবে বাংলাদেশ দল এবং তারা চাইবে এই সেন্ট কিটসে যাওয়ার আগে এই গায়ানা থেকেই সিরিজ নিশ্চিত করে ফেলার।

দলের সিনিয়র ক্রিকেটার এবং সহ-অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের কণ্ঠেও শোনা গেলো একই কথা। তিনিও জানিয়েছেন, গায়ানা থেকেই সিরিজটা নিশ্চিত করেই সেন্ট কিটসে যাওয়ার। ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে মাঠে নামার আগেরদিন মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে সাকিব আল হাসানও জানিয়েছেন এই ইচ্ছার কথা।

যদিও, সাকিবের বিশ্বাস, প্রথম ম্যাচ হেরে যাওয়ার কারণে, এই ম্যাচে খুব শক্তিশালী মানসিকতা নিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করবে স্বাগতিকরা। সুরতাং, এ বিষয়টা নিয়ে তারা খুব সতর্ক। সাকিব আল হাসান বলেন, ‘আমি শিউর যে ওয়েস্ট ইন্ডিজ আরও শক্তিশালীভাবে কামব্যাক করার চেষ্টা করবে। সুতরাং, আমাদেরকে আরও বেশি সতর্ক থাকতে হবে এবং আরও বেশি এফোর্ট দিতে হবে।’

এই ম্যাচেই সিরিজ জয়ের দারুণ সুযোগ। সেই সুযোগটা নেয়ার জন্য কতটা প্রস্তুত বাংলাদেশ? সাকিব আল হাসান বলেন, ‘অবশ্যই, আমাদের তো প্রস্তুতি আছেই যেন প্রতিটা ম্যাচ জিততে পারি। আমরা যখন খেলতে পারি, তখন এ চিন্তা করেই নামি যে, যেন আমরা প্রতিটি ম্যাচে জিততে পারি। আমরা যদি এই ম্যাচটা জিতে রাখতে পারি, তাহলে সেন্ট কিটসে পরের ম্যাচের জন্য টেনশন করতে হবে না। আমরা চাইবো যেন ওই ম্যাচটাও জিততে পারি। তবেম, তার আগে আমাদের জন্য এই ম্যাচটা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের চেষ্টা থাকবে যেন যতটা সম্ভব আমরা এখানেই ভালো করতে পারি।’

(ওএস/এসপি/জুলাই ২৫, ২০১৮)