নাটোর প্রতিনিধি : নৌকা আছে, মাঝি নেই। নেই ব্রীজও বা পারাপারের অন্য কোন উপায়। নাটোরের গুরুদাসপুরের নন্দকুঁজা নদীর বিয়াঘাট-মোল্লাবাজার  খেয়া ঘাট এটি। পারাপারের জন্য একটি নৌকা থাকলেও নেই কোন মাঝি। যাত্রীরা নিজেরাই দড়ি টেনে এপার ও ওপাওে যাতায়াত করে। আর এর জন্য এপারের ঘাট থেকে ওপারের ঘাট পর্যন্ত টানিয়ে দেওয়া হয়েছে নাইলনের দুইটি মোটা দড়ি।  যাত্রীরা সেই দড়ি টেনে পারাপার হয়ে থাকেন।  প্রায় আট বছর ধরে এমন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন এপার-ওপারের দশ গ্রামের প্রায় প্রায় ৫০ হাজার মানুষ।

উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়নের বিয়াঘাট হাট সংলগ্ন পয়েন্টের খেয়া ঘাটে দড়ি টেনে নৌকা পারাপার হচ্ছে। অথচ যাত্রী পারাপারের জন্য বিয়াঘাট ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ১২ হাজার টাকা বছর চুক্তিতে ইজারা নেওয়া হয়েছে। মো. আসাদুল ইসলাম (৪৫) নামে এক ব্যক্তি এই খেয়া ঘাটটি ইজারা নিয়েছেন।

গত সোমবার সকালে গিয়ে দেখা যায়, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণীপেশারমানুষ দড়ি টেনে খেয়া নৌকায় পারাপার হচ্ছেন। নদীটির উত্তরপাশে রয়েছে বাজার, প্রাথমিক, মাধ্যমিক, কারিগরি স্কুল অ্যান্ড কলেজসহ ঘনবসতিপূর্ন পাঁচটি গ্রাম। দক্ষিণ পাশে রয়েছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কারিগরি স্কুল এবং মোল্লাবাজার নামে একটি বাজার। তাছাড়া উপজেলা সদর থেকে জেলা সদরে যাতায়াত করতে খেয়া নৌকাটিই একমাত্র ভরসা।

নদীটির পশ্চিমপাড়ের বাসিন্দা স্কুল শিক্ষক লিটন আহমেদ জানালেন, মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে এখানে একটি ব্রীজ নির্মানের দাবী জানিয়ে স্থানীয় সাংসদসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন নিবেদন করা হয়েছে। ব্রীজ নির্মাণ না হওয়ায় প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে দশ গ্রামের মানুষকে। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে পারাপার হচ্ছে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা।

খেয়াঘাটের মাঝি আসাদুল ইসলাম বলেন, নদীটির উভয় পাশে পাকা সড়ক রয়েছে। জরুরী প্রয়োজনে ওই সড়ক ধরেই চলাচল করে থাকেন। কেবল ছাত্র-ছাত্রী আর স্থানীয়রা নৌকার ওপর নির্ভরশীল থাকে। আগের মতো গ্রামের মানুষ টাকা-পয়সা দেয়না। ইজারা ১২ হাজার টাকা উঠানোই কঠিন হয়ে পড়ে। বিয়াঘাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোজাম্মেল হোসেন বলেন, খেয়াঘাটের ইজাদারের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। মৌখিকভাবে সতর্ক করেও কাজ হচ্ছেনা। তবে বিকল্প ইজারাদার না পাওয়ায় তার ইজারা বাতিলও করা যাচ্ছেনা।

স্থানীয় সাংসদ মো. আবদুল কুদ্দুস বলেন, ওখানে ব্রীজের অনুমোদন হয়েছিল। কিন্তু খেয়াঘাট পয়েন্টের উভয় পাশে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ না করায় ব্রীজের জায়গা সংকট দেখা দেওয়া অনুমোদিত ব্রীজটি অন্যত্র নির্মাণ করা হয়েছে। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জায়গার সমাধান হলেই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ওই জায়গায় ব্রীজ নির্মাণ করা হবে।

(এসবি/এসপি/জুলাই ২৫, ২০১৮)