জামালপুর প্রতিনিধি : জামালপুরে যৌতুকের দাবিতে আঙ্গুরী বেগম (১৯) নামে এক নববধূকে গরম তেল নিক্ষেপ করে হাত-পা ঝলসে দিয়েছে পাষন্ড স্বামী ও তাঁর পরিবার। লোমহর্ষক নারী নির্যাতনের ঘটনাটি ঘটেছে সদর উপজেলার শরিফপুর ইউনিয়নের পিঙ্গলহাটী গ্রামে। অবরুদ্ধ নির্যাতিত গৃহবধূকে মঙ্গলবার রাতে উদ্ধার করেছে সদর থানার পুলিশ ।

নির্যাতিত আঙ্গুরির চাচা এনামুল হক জানান, ২৫দিন পুর্বে (২৯জুন) সদর উপজেলার কেন্দুয়ার দরিদ্র আনোয়ার হোসেনের মেয়ে আঙ্গুরী বেগমের (১৯) বিয়ে হয় শরিফপুরের পিঙ্গলহাটী গ্রামের হুরমুজ আলীর ছেলে বিল্লাল হোসেন সিকদার (২৫) এর সাথে। বিয়েতে ১লাখ ৫০ হাজার টাকা যৌতুকের সিদ্ধান্ত হয়। নগদ ৫০ হাজার টাকা ও প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র দিয়ে আঙ্গুরীকে শশুরবাড়ীতে পাঠায়। বিবাহের পরদিন (৩০ জুন) বাকী টাকা না দেয়ায় নববধূ আঙ্গুরীকে লাঠি দিয়ে পেটানোসহ অমানুষিক নির্যাতন শুরু হয়। খবর পেয়ে আঙ্গুরীর দরিদ্র পরিবার ২০ হাজার টাকা পাঠিয়ে দেয়। তারপরও নির্যাতন থামেনি।

একপর্যায়ে শশুরবাড়ীর লোকজন ফুটন্ত গরম তেল ঢেলে গৃহবধু আঙ্গুরীর হাত পা ঝলসে দিয়ে তালাবদ্ধ করে রাখে। খবর পেয়ে আঙ্গুরীর পরিবার আহত মেয়েকে আনতে গেলে প্রাননাশের হুমকী দিয়ে তাড়িয়ে দেয়। আঙ্গুরীর পরিবার জামালপুর সদর থানায় অভিযোগ করলে মঙ্গলবার রাতে শশুরবাড়ী থেকে অবরুদ্ধ অবস্থায় নির্যাতিতা নববধূ আঙ্গুরীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।

যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনের শিকার আঙ্গুরীর আইনি সহায়তায় পাশে দাঁড়িয়েছে মানবাধিকার কর্মী জাহাঙ্গীর সেলিম। এই অমানবিক নির্যাতনের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ ও দোষীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবী জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে নির্যাতিতার চাচা এনামুল হক বাদী হয়ে জামালপুর সদর থানায় বিল্লাল হোসেন সরকারসহ পরিবারের ৬জনকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

জামালপুর সদর থানার ওসি (তদন্ত) রাশেদুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

(আরআর/এসপি/জুলাই ২৫, ২০১৮)