রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ঝাউডাঙা ইউনিয়নের তুজুলপুর হাইস্কুল মাঠে সার্কাসের আড়ালে রক্তচোষা রমরমা জুয়ার আসর চলার ব্যাপারে পুলিশ প্রশাসন ও জেলা প্রশাসনকে মঙ্গলবার রাতে অবহিত করলেও তারা কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। উপরন্তু বুধবার রাত আটটা থেকে জুয়াড়ী ও আয়োজক কমিটির সদস্যরা আরো জোরে সোরে জুয়ার আসর শুরু করে। 

তুজুলপুর গ্রামের আরাফাত হোসেন, ইমন ও আকাশ জানান, তুজুলপুর কৃষি ক্লাবের আয়োজনে তুজুলপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে গত ১৭ জুলাই থেকে শুরু হয়েছে ‘দি বাংলাদেশ গোল্ড সার্কাস’। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্কাস চালানোর জন্য ১২ দিনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সার্কাস এর পাশাপাশি সন্ধ্যার পর থেকে প্যাণ্ডেলের মধ্যে ক্যাসিনো (চরকি) জুয়া ও রাত ১১ টা থেকে পরদিন ভোর চারটা পর্যন্ত চলে ওয়ান টেন চালানোর বিষয়টি এলাকাবাসী ও সাংবাদিকদের মাধ্যমে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমানকে মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চারবার ও সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার সাজ্জাদুর রহমানকে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টায় অবহিত করা হয়। এরপরও পুলিশ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।

বিষয়টি বুধবার স্থানীয় কয়েকটি পত্রিকায় ছাপা হয়। ফলে আয়োজক কমিটির সভাপতি স্থানীয় কৃষি ক্লাবের সভাপতি ইয়ারব হোসেনসহ তার সহযোগীরা বুধবার রাত ৮টা থেকে আরো ব্যাপক আকারে জুয়ার বোর্ড চালু করেছে। জুয়ার বোর্ড চালানোর জন্য এলআর ফাল্ড, পুলিশ ফাণ্ড, সাংবাদিক ফাণ্ড, ক্ষমতাসীন দলের নেতা ফাল্ডসহ বিভিন্ন স্থানে বিনিয়োগ করে খেলা বন্ধ করার কোন প্রশ্নই আসে না বলে ওই চাক্রটি প্রকাশ্যে বলে বেড়াচ্ছে। এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তুজুলপুর মাধমিক বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি আলী হোসেনসহ কয়েকজন শিক্ষক ও স্থানীয়রা।

এ ব্যাপারে গ্রামবাসির মাধ্যমে খবর পাওয়ার পর এ প্রতিবেদক জানতে চাইলে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, শুরু হলে বলা মাত্রই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরবর্তীতে খেলা শুরু হওয়ার পর দু’ বার তাকে অবহিত করলে তিনি পুলিশ পাঠাচ্ছেন বলে মোবাইল সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। রাত ৯টার দিকে তাকে আবারো অবহিত করলে তিনি বলেন, এসপি সাহেব, সার্কেল সাহেবসহ কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা এইমাত্র মিটিং সেরে চলে যাচ্ছেন। এখুনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত কোন পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে না যাওয়ায় বা ব্যবস্থা না নেওয়ায় এ প্রতিবেদক বিষয়টি পুলিশ সুপার সাজ্জাদুর রহমানকে অবহিত করা হলে তিনি করণীয় সম্পর্কে কোন মন্তব্যনা করে বলেন, জুয়াড়ীদের বিরুদ্ধে যে ধারায় মামলা নেওয়া হয় তাতে আদালত ৫০ টাকা জরিমানা করলেই তা পরিশোধ করে তারা রেহাই পেয়ে যায়। এ জন্য এ আইন সংশোধন হওয়া দরকার। এজন্য সাংবাদিকদের লেখনীকে জোরদার করার আহবান জানান তিনি। তবে বুধবার রাত সোয়া ৮টার দিকে সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

(আরকে/এসপি/জুলাই ২৫, ২০১৮)