গাইবান্ধা প্রতিনিধি: খাদ্যে ভেজাল রোধ ও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে অভিযান জোরদার করার দাবিতে সোমবার গাইবান্ধা প্রেসক্লাব সংলগ্ন ষ্টেশন রোড কাচারী বাজার মোড়ে এক মানববন্ধনের কর্মসূচী পালিত হয়। পরে প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধন চলাকালে ও সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক অশোক সাহা, উপাধ্যক্ষ জহুরুল কাইয়ুম, প্রবীর চক্রবর্ত্তী, সাজেদা পারভীন রুনু, মাজেদা খাতুন, সনজীবন কুমার, আব্দুস সালাম প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দেশের সর্বত্র ভেজাল খাদ্যের ভয়াবহতা মারাত্মক আকারে ছড়িয়ে পড়েছে।

সম্প্রতি জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (ফাও) এবং বাংলাদেশ সরকারের যৌথ ব্যবস্থাপনায় গড়ে তোলা দেশের সর্ববৃহৎ এবং সর্বাধুনিক খাদ্য নিরাপত্তা গবেষণাগারের পরীক্ষায় দেশের ৪০% খাদ্যেই ভয়ংকর সব ভেজাল ও বিষাক্ত রাসায়নিক দব্য উপস্থিতির প্রমাণ মিলেছে। বিশেষ করে ফলমূল, শাকসবজি, মাছ-মাংস, দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য থেকে শুরু করে চাল, হলুদের গুড়া এমনকি লবণে পর্যন্ত এ সকল ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্যের মিশ্রণ করা হয়।

এই সকল খাদ্যে মিশ্রিত করা হচ্ছে নিষিদ্ধ ডিডিটি থেকে শুরু করে বেনজয়িক এসিড, অ্যালড্রিন, ক্রোমিয়াম, আর্সেনিক, সিসা, কার্বাইড, ফরমালিন ইত্যাদির মত ভয়ংকর উপাদান। এইসব ভয়ংকর উপাদান মিশ্রিত খাবার গ্রহণের ফলে মরণব্যাধি ব্লাড ক্যান্সার, লিভার, কিডনি, হার্ট, ব্রেন ও চোখের রেটিনার কোষ নষ্টসহ শরীরের বিভিন্ন মারাত্মক রোগ সৃষ্টি হচ্ছে।

সরকারের পক্ষ থেকে আইন প্রণয়নসহ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হলেও মাঠ পর্যায়ে এসবের যথাযথ বাস্তবায়ন নেই। ফলে অসাধু ব্যবসায়িদের দ্বারা খাদ্যে ভেজাল ও দ্রব্য মূল্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি রোধ হচ্ছে। বিশেষ করে গাইবান্ধায় রমজান মাসে এই ভেজালের পরিমাণ আরও ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। একই সাথে মূল ̈ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। স্থানীয় প্রশাসন এসব নিয়ন্ত্রণে পর্যাপ্ত ও কার্যকর অভিযান পরিচালনা না করায় মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি ও উচ্চ মূল্যে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য কিনতে বাধ্য হচ্ছে। সেজন্য রমজান মাসে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির মূল্য স্বাভাবিক রাখা এবং খাদ্য দ্যব্য ভেজালমুক্ত রাখতে প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক পদক্ষেপ গ্রহণের জোর দাবি জানানো হয়। স্থানীয় বেসরকারি সংগঠন জন উদ্যোগ ওই কর্মসূচীর আয়োজন করে।

(এইচআই/জেএ/জুলাই ১৪, ২০১৪)