মির্জাগঞ্জ (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : এখন চলছে বর্ষাকাল। চারিদেকে বৃষ্টির পানিতে থৈ থৈ। একটু উচুঁজমিতে চারা রোপন করতে ব্যস্ত গ্রামের লোকজন। ‘আজকে একটি গাছ আগামীর ভষ্যিাৎ’’ একথাগুলো চিন্তা করে প্রত্যান্ত গ্রামের মানুষেরা চারা ক্রয় করতে প্রতিদিনই ভীর করছেন উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে। যে যার সামার্থ্য মতো চারা ক্রয়করে রোপন করছেন। 

বুধবার পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলা সদর সুবিদখালী বাজারের সাপ্তাহিক হাটের দিন গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন প্রকারের চারা বাণিজ্যিক ভিত্তিতে নার্সারিতে উৎপাদিত ফলদ ও বনজ গাছের চারা বিক্রি হচ্ছে দেদারছে।

বর্ষার মৌসুম হওয়ায় বেচাকেনা বেশ জমজমাট হয়ে উঠেছে। এলাকার উৎপাদিত চারা ছাড়াও পিরোজপুর ও ঝালকাঠি জেলার বিভিন্ন নার্সারিতে উৎপাদিত চারাগাছ বাজারজাত করার জন্য নার্সারি মালিক এবং স্থানীয় পাইকাররা এ হাটে নিয়ে এসেছেন বিক্রি করার জন্য।

নার্সারি মালিক স্থানীয় বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এ মৌসুমে এখানে রবিবার ও বুধবার দুইদিন সাপ্তাহিক হাটে নার্সারিতে উৎপাদিত রেইনট্রি, মেহগনি,চাম্বল ,আকাশমনি,কড়ই,সেগুনসহ ১০ থেকে ১৫ প্রজাতির বনজ চারা এবং আমড়া, পেয়ারা, জামরুল, আমলকি, জলপাই, বড়ই, কাঁঠাল, নারিকেল, সুপারি, আম, জাম, লিচু, ছফেদা, কমলা, মাল্টা, লেবু সহ ২০-২৫ প্রজাতির চারা এই হাটে বেচাকেনা হয়।

বাংলা বছরের বৈশাখ থেকে কার্তিক মাস পর্যন্ত চারা বেচাকেনা হলেও এই আষাঢ় থেকে আশ্বিন মাস পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি চারা বেচাকেনা হয়।

পিরোজপুর থেকে চারা গাছ বিক্রি করতে আসা নার্সারী ব্যবসায়ী মোঃ রোকন মিয়া জানান, তিনি প্রতিবছর এই বর্ষা মৌসুমে তার নার্সারিতে উৎপাদিত ফলদ ও বনজ চারা মির্জাগঞ্জের সাপ্তাহিক হাটের দুই দিন ছাড়াও উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের বিভিন্ন হাটে সাপ্তাহিক বাজারের দিন বিক্রির জন্য নিয়ে আসেন। তিনি প্রতিবছর চারা বিক্রি করে ৩ লক্ষ থেকে সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা আয় করেন।

পিরোজপুর, ঝালকাঠী থেকে ট্রলার যোগে আসা ও স্থানীয় নার্সারি থেকে সংগ্রহ করে বিক্রি করেন স্থানীয় বিক্রেতা মোঃ সালাম মিয়া জানান, স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত চারার পাশাপাশি পিরোজপুর ও ঝালকাঠি জেলার চারার বেশ চাহিদা রয়েছে এখানে, গাছ বিক্রি করে তিনি এ মৌসুমে ৫০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লাভ করে থাকেন। তবে এখানে হাটে কাদা-পানি থাকায় ক্রেতা-বিক্রেতাদেরকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এ জায়গাটুকু পাকা করা হলে নার্সারী মালিকরা আরও বেশী গাছ নিয়ে আসলে ক্রেতার সংখ্যাও আরও বাড়বে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

চারাগাছ কিনতে আসা উপজেলার পশ্চিম সুবিদখালী গ্রামের প্রবীন ব্যক্তি মোঃ ইসমাইল হোসেন মৃধা বলেন, এখানে বিভিন্ন প্রজাতির ফলদ ও বনজ চারা সহজলভ্য বলে প্রতি মৌসুমে এ হাট থেকে চারাগাছ ক্রয় করে চারা রোপন করে থাকি।

মির্জাগঞ্জ উপজেলা বন কর্মকর্তা মোঃ দেলোয়ার হোসেন বলেন, মির্জাগঞ্জে হাতে গোনা কয়েকটি নার্সারী রয়েছে। তবে এলাকার মানুষ গাছ লাগাতে বেশ উৎসাহী। এবারে আমারা ৫ হাজার গাছের চারা উৎপাদন করা হয়েছে। এসকল চারাগুলো উপজেলার দুই শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিতরন করা হয়েছে।

(ইউজি/এসপি/আগস্ট ০১, ২০১৮)