স্টাফ রিপোর্টার: ফেসবুক লাইভে গুজব ছড়ানোর মামলায় মডেল অভিনেত্রী কাজী নওশাবা আহমেদের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে ওই মামলায় রবিবার বিকালে ঢাকা মহানগর হাকিম মাজহারুল হক এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন। একই সঙ্গে এ আসামির জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেন।

এর আগে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উত্তরা পশ্চিম থানার এসআই বিকাশ কুমার পাল নওশাবাকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন।

রিমান্ড শুনানিকালে নওশাবাকে আদালতের কাঠগড়ায় ওঠানো হয়। ওই সময় তাকে ভীত ও অশ্রুসিক্ত দেখা যায়।

রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, আসামি তার নিজের মোবাইল থেকে ফেসবুক আইডিতে শনিবার বেলা ৪টার দিকে উত্তরার ১৩নং সেক্টরের ৪নং রোডের ২নং বাড়ি থেকে অত্যন্ত আবেদনময়ী কণ্ঠে লাইভ ভিডিও সম্প্রচার করে বলেন, জিগাতলায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করে একজনের চোখ উঠায়া ফেলছে, আর চারজনকে মেরে ফেলছে। আপনারা যে যেখানে আছেন কিছু একটা করেন। তার এই আহ্বান মুহূর্তের মধ্যে দেশি বিদেশি সামাজিক ও ইলেকট্রনিক্স মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ফলে জনমনে আতঙ্ক ও বিদ্বেষ ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মীরা তার এই মিথ্যা প্রোপাগান্ডার উৎস জানার জন্য ফোন করলে তিনি তার সপক্ষে সঠিক কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারেননি। প্রকৃতপক্ষে এসময় জিগাতলায় ওই ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। সে ইচ্ছাকৃতভাবে ও পূর্ব পরিকল্পিতভাবে রাষ্ট্র ও রাষ্ট্রের ভাবমূতি ক্ষুণ্ন করার জন্য এবং জনসাধারণের অনুভূতিতে আঘাত করার জন্য এরূপ মিথ্যা ও মানহানিকর বক্তব্য প্রকাশ করেন। তিনি কোনো কলেজ বা ভার্সিটির শিক্ষার্থী নন এবং কোনো অভিভাবকও নন।

রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, এই আসামি গত ২৯ জুলাই বাসের চাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার পর থেকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে ফেসবুকে বিভিন্ন স্ট্যাটাস প্রকাশ করে আসছেন। এছাড়া তিনি গত ৩ আগস্ট রূপসী বাংলা হোটেলের সামনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মাঝে পানি বিতরণ করেন এবং বিভিন্নভাবে শিক্ষার্থীদের রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন বলে স্বীকার করেছেন। এমতাবস্থায় এই আসামি কোন কোন ব্যক্তিদের প্ররোচণায় এই মিথ্যা তথ্য ফেসবুক লাইভে প্রকাশ করে ভাইরাল করেন সেসব তথ্য জানার জন্য আসামিকে সাত দিন পুলিশ রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।

রিমান্ড শুনানিকালে আসামিপক্ষে রিমান্ড বাতিল করে জামিনের আবেদন করেন আইনজীবী এ এইচ ইমরুল কাউছার। তিনি বলেন, ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলনটি কোনো রাজনৈতিক আন্দোলন নয়। প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে সবাই তাদের সাথে সহমত প্রকাশ করেছেন। এই আসামিও তাই। তিনি ঘটনার সময় শুটিংয়ে ছিলেন। ওই সময় জনৈক রুদ্র তাকে ফোন করে ওই তথ্য দেন। তিনি সরল মনে তা প্রকাশ করেন।

এই সময় বিচারক বলেন, তিনি তো খ্যাতনামা অভিনেত্রী, মডেল ও সমাজের একজন সচেতন ব্যক্তি। তিনি কোনো কিছু যাচাই না করে কীভাবে এমনটি করলেন।

এই সময় আইনজীবী বলেন, তিনি তাৎক্ষণিকভাবে শুনে ইমোশনাল হয়ে কাজটি করেছেন। পরে ভুল বুঝতে পেরে ফেসবুকে রিজয়েন্ডারও দিয়েছেন।

গতকাল শনিবার রাতে রাজধানীর উত্তরা এলাকা থেকে নওশাবাকে আটক করে র‌্যাব। এরপর র‌্যাব-১ বাদী হয় মামলাটি করে।

(ওএস/পিএস/০৫ আগস্ট, ২০১৮)