পাবনা প্রতিনিধি : পাবনা প্রতিনিধি : পাবনায় ৯৩ কোটি টাকা ব্যায়ে সড়ক ও জনপদ বিভাগের বাধেঁরহাট থেকে খয়েরচর সড়ক যেন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। এ সড়ক নির্মাণে শুভঙ্করের ফাঁকি দেওয়ায় মাত্র ২ বছরের ব্যবধানে প্রকল্পের সাড়ে ১২ কিলোমিটার সড়ক পথে ব্যাপক ধ্বস নেমেছে। জাতীয় মহাসড়কের রুপান্তরের এ নতুন পথের ধ্বস দৃশ্যত ৩০টি স্থানে সামরিক যুদ্ধ বাঙ্কার। 

সরেজমিন অনুসন্ধানে জানাগেছে, পাবনার ঢালারচর নরদহ প্রান্ত থেকে ঢাকা আরিচা প্রান্তে ফেরি সার্ভিস চালুর পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রাথমিক স্তরে পাবনার বেড়া উপজেলার বাধেঁরহাট থেকে খয়েরচর পর্যন্ত সাড়ে ১২ কিলোমিটার পাকা রাস্তার জন্যে ৯৩ কোটি টাকা বরাদ্ধ দেয়।

এ প্রকল্পে ৩টি ব্রিজ সাওে ১২ কিলো মিটার রাস্তা এবং ৩টি কালভাট ৩২ মিটার নির্মাণ শুরু হয় ২০০৬ সালে। পাবনার প্রভাবশালী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ধ্রুব কনষ্ট্রাকশন ২০১৬ সালের ৩০ জুন সড়ক ও জনপদ বিভাগের অধীনে এ কাজটি সম্পন্ন করে। তারপর থেকে এ সড়কে কোন ভারী যান চলাচল শুরু না হতেই এবং রাস্তা তৈরি মেয়াদকাল ২ বছর উত্তীর্ণ হতে না হতেই ব্যাপক ধ্বস দেখা দেয়।

স্থানীয়রা বলছেন, নির্মাণকাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় নেওয়া হয়েছে। যার ফলে এই নতুন রাস্তাটি জনগণের ব্যবহার অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। এ নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের নজর দেওয়া প্রয়োজন বলেও মনে করেন ভুক্তভোগী জন সাধারণ।

৬৯ পাবনা ২(বেড়া-সুজানগর) আসনের সংসদ সদস্য খন্দকার আজিজুল হক আরজু বলেন, এ অনিয়মের সাথে তৎসময়ে কতব্যরত সড়ক বিভাগের অসাধু কর্মকর্তা ও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সরাসরি যোগসাজস রয়েছে।

স্থানীয়রা বলছেন,উন্নয়নের নামে এ ভাবে শুভঙ্করের ফাঁকি দিয়ে কোটি কোটি টাকার হরিলুট চলবে আর কত কাল। এ ব্যাপারে ক্ষতিয়ে দেখার কী কেউ নেই।

বেড়ার মাসুমদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মিরোজ হোসেন সহ স্থানীয়রা অভিযোগ করেন রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে শুধু বালি দিয়ে, রাস্তা পাকা হওয়ার পর থেকেই বার বার ভেঙ্গ যাচ্ছে আর জন ভোগান্তির সৃষ্টি হচ্ছে।

বেড়ার ঢালারচর ইউপি চেয়ারম্যান কোরবান আলী বলেন,আমাদের রাস্তাটি প্রায় ২০/৩০ জায়গায় ভেঙ্গে গেছে। বাইক নিয়ে যাওয়া গেলেও রিক্সা ভ্র্যান নিয়ে যাওয়া আসা মুশকিল। বেড়ার রুপপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হাশেম উজ্জ্বল বলেন, রাস্তাটি দিয়ে একটি ভ্যান রিক্সা চলাচলের মতো অবস্থা নেই, তিনি এ ব্যাপারে তাঁর দলের কেন্দ্রিীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক এবং বর্তমান সড়ক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়েদুল কাদেরের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

পাবনা সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সমীরণ রায়,সংশ্লিষ্ট ঠিকাদরী প্রতিষ্ঠানের কাজের মান নির্ণয় করার জন্য বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলীর বিভিন্ন দিকে পরীক্ষা নিরিক্ষা করার প্রয়োজন আছে। সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার পাশাপাশি ধ্বসে যাওয়া সড়কের মেরামত কাজ চলছে।

এদিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানই রাস্তার পাশ থেকে ভেকু মেশিনের মাধ্যমে মাটি তুলে শ্রমিক দিয়ে খালি বস্তায় মাটি ভরে ধ্বসে যাওয়া স্থান ঢাকতে শুরু করেছে। এ রাস্তাটির ব্যাপারে সড়ক মন্ত্রীর হস্তক্ষেপে সহ দ্রুত উচচ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি স্থানীয়দের।

(পিএস/পিএস/আগস্ট ০৬, ২০১৮)