কবীর চৌধুরী তন্ময়


যেকোনো অঘটনের আগে বিশেষ বিশেষ শ্রেণি পেশার মানুষকে টার্গেক করে ষড়যন্ত্রকারীরা। মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস যাঁদের জানা, তাঁরা আমার চেয়েও বেশ ভালো বলতে পারবেন। সেই সময় থেকে আজ পর্যন্ত এই বিশেষ শ্রেণির মধ্যে সাংবাদিক মহলও। তাই হেফাজতের তান্ডব বলেন আর তথাকথিত কোটা সংস্কারের আন্দোলনের নামে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল ও সরকার পতনের জামাত-শিবিরের ষড়যন্ত্রের আন্দোলন থেকে সাম্প্রতিক বাচ্চাদের নিরাপদ সড়ক আন্দোলনকে ছিনতাই করা বিএনপি-জামাতের আন্দোলনে সাংবাদিক বাদ যাবে-এটা চিন্তা করা বোকামী।

কারণ, এই আন্দোলনগুলো স্বাধীনতাবিরোধী ও তাদের আদর্শগত ব্যক্তি-মহলের।

তাহলে আমাদের সাংবাদিক মহলের কাজ কী..?

সাংবাদিক মহল ফেসবুকে দুই-একটি প্রতিবাদী স্ট্যাটাস ছাড়া কিংবা দুই-একটি মানববন্ধন ছাড়া আর কী করতে পারে..?

পারে.. অনেক কিছু করতে পারে। কিন্তু করবে না। কারণ-বারণ সব কিছু আজ এই সাংবাদিক সমাজে বিদ্যমান।

শুধু সত্য কথাটা তুলে ধরতে পারলেই ষড়যন্ত্রকারীরা লেজ গুটিয়ে দৌঁড়ে পালাবে।

এই যে মিথ্যাচার আর গুজব ছড়িয়ে দেশের মানুষের জীবনহানীকর পরিস্থিতি তৈরি করেছিল-তখন মুল গণমাধ্যমের ভূমিকা কী ছিল..? কয়টা সংবাদ মাধ্যম অপপ্রচারের বিরুদ্ধে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রচার-প্রকাশ করেছে? কোন কোন সংবাদ মাধ্যম গুজবের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান প্রতিবেদন প্রচার-প্রকাশ করেছে..?

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর টিএসসিতে পরিকল্পিতভাবে চুম্বনের ছবি ভাইরাল করেছিল এই সাংবাদিক মহলের একজন। যদিও অন্য সাংবাদিকরা তাঁকে শারীরিক ও মানসিকভাবে অপমানও করেছে। কিন্তু কোন উদ্দেশ্য নিয়ে উন্মুক্ত ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ চুম্বনের দৃশ্য ভাইরাল করেছিল-তার উত্তর আজও জানা হয়নি।

বিভক্ত সাংবাদিক মহল তার পেশার অমর্যাদা করেছে বহুবার। সত্য তথ্যের জায়গায় পছন্দের তথ্য; আর সেটা যতই বিভ্রান্তকর হোক, প্রচার-প্রকাশ করতে দ্বিধা করেনি।

আর সাংবাদিক সমাজের সবচেয়ে কলঙ্ক আমার দেশ পত্রিকার তথাকথিত সম্পাদকের পক্ষে যাঁরা মত প্রকাশের স্বাধীনতার নামে সমর্থন করেছেন (!) তাঁরা কী সাংবাদিক মহলকে প্রশ্নবিদ্ধ করেননি?

নানান কথা বলা যায় কিন্তু সংশোধন হওয়া বা করা কঠিন।

যে কথাটি বলার জন্য আমার এই লেখা, মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকে বার বার নির্যাতনের শিকার হয়েছে সাংবাদিক মহল। কারণ বুদ্ধিচর্চার জায়গায় অন্যদের চেয়ে এগিয়ে আছে সাংবাদিক।
তাই এই সাংবাদিককে মানসিকভাবে দুর্বল করতে পারলেই ষড়যন্ত্রকারীরা তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে সহজ হবে। তাই অপমান-অপদস্থের পাশাপাশি শারীরিক আঘাত এখন মামুলি ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। মুল কারণ, সাংবাদিকের ভিতর ভয় ঢুকিয়ে দেওয়া।

সাংবাদিকের মতন আমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ করবো না। আমি প্রতিরোধ গড়ে তোলার পক্ষে। আমার হাতিয়ার হবে কলম এবং সত্য প্রচারে আপোষহীন ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক মহল যদি স্বাধীনতাবিরোধীদের সকল কর্মকান্ডের প্রচার-প্রকাশ বন্ধ করতে পারে, তাঁদের বয়কট করতে পারে তাহলেই প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।

আর সাংবাদিকের বিভিন্ন সংগঠন আছে। ওইসব সংগঠনের নেতাদের উচিত হবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে বসে সাংবাদিক নির্যাতনের বিষয় নিয়ে আলোচনা করা। ভিডিও ফুটেজ ও স্থিরচিত্রের মাধ্যমে সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার ব্যাপারে কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা।

লেখক : সভাপতি, বাংলাদেশ অনলাইন অ্যাক্টিভিষ্ট ফোরাম (বোয়াফ)