রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : অষ্টম শ্রেণীর এক স্কুল ছাত্রীকে অপহরণের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে এক ব্যক্তির যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড, এক লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। বৃহষ্পতিবার দুপুরে সাতক্ষীরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক হোসনে আরা আক্তার এক জনাকীর্ন আদালতে এ রায় ঘোষনা করেন।

সাজাপ্রাপ্ত আসামির নাম ভোলা নাথ মণ্ডল (৩৫)। তিনি সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণশ্রীপুর গ্রামের গোপীনাথ মণ্ডলের ছেলে।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, কালিগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ শ্রীপুর গ্রামের ভোলা নাথ মণ্ডলের সঙ্গে একই গ্রামের এক দিনমজুরের মেয়ে শ্রীকলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০০৬ সালের ৩০ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফল জানার জন্য ওই ছাত্রী বাড়ি থেকে বের হয়। পথিমধ্যে দক্ষিণ শ্রীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে থেকে দু’টি মোটর সাইকেলে করে ওই ছাত্রীকে তুলে নিয়ে যায় ভেলানাথ মণ্ডল ও তার সহযোগীরা। এ ঘটনায় বোনকে না পেয়ে ভাই বাদি হয়ে ২০০৭ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি কালিগঞ্জ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২০০০ সালের সংশোধিত ২০০৩ এর ৭/৩০ ধারায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন। মামলায় ভোলানাথ মণ্ডল, তার ভাই জয়দেব মণ্ডল, একই গ্রামের সুবোল মণ্ডলের ছেলে হরিদাস মণ্ডল, বসন্ত মণ্ডলের ছেলে গোপাল মণ্ডল ও ঘোজাডাঙা গ্রামের সন্তোষ বৈদ্যের ছেলে উৎপল বৈদ্যেকে আসামী শ্রেণীভুক্ত করা হয়।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কালিগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক আক্কাস আলী ২০০৭ সালের ২৫ এপ্রিল এজাহারভুক্ত ভোলানাথ মণ্ডলের নাম উল্লেখ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। দক্ষিণ শ্রীপুর ইউপি চেয়ারম্যান শেখ দিদারুল ইসলামের সহায়তায় ওই বছরের ২৬ জুন আশাশুনি উপজেলার হাড়িভাঙা গ্রামের একটি বাড়ি থেকে ওই স্কুল ছাত্রীকে উদ্ধার ও ভোলানাথ মণ্ডলকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযোগপত্র দাখিলের পর ভিকটিম উদ্ধার হওয়ায় ৫৪০ ধারায় দরখাস্ত করে আদালতে ভিকটিমের জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়। জামিনে মুক্তি পেয়ে ভোলানাথ মণ্ডল ভারতে পালিয়ে যায়।

মামলার নথি ও নয়জন সাক্ষীর জবানবন্দি পর্যালোচনা শেষে আসামী ভোলানাথ মণ্ডলের বিরুদ্ধে ওই স্কুল ছাত্রীকে অপহরণের অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক উপরোক্ত রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি ভোলানাথ মণ্ডল কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন না।

রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালণা করেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্রুনালের বিশেষ পিপি অ্যাড. জহুরুল হায়দার বাবু।

(আরকে/এসপি/আগস্ট ০৯, ২০১৮)