সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানার হাটিকুমরুলে অবস্থিত সাখাওয়াত এইচ মেমোরিয়াল হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলায় নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এঘটনার পর থেকেই উক্ত হাসপাতালের চিকিৎসক রবিউল ইসলাম গা ঢাকা দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। যেকোন সময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে মৃত নবজাতকের স্বজনদের সংঘর্ষের আশংকা রয়েছে। 

জানাগেছে, উল্লাপাড়া উপজেলার শ্রীকোলা গ্রামের হাসান আলীর স্ত্রী মারজিয়া খাতুন শাখাওয়াত এইচ মেমোরিয়াল হাসপাতালে সন্তান প্রসবের জন্য গত শুক্রবার দুপুর ১২ টার দিকে ভর্তি হন।

ভর্তির পর ডাক্তার রবিউল ইসলাম মারজিয়ার স্বজনদের জানান-অল্প সময়ের মধ্যে সিজারের মাধ্যমে সন্তান প্রসব করতে হবে । নইলে পেটে সন্তান মারা যাবে। চিকিৎসক রবিউল ইসলামের পরামর্শের সিজারের সম্মতি দেয় মারজিয়ার স্বজনরা। পরে শুক্রবার বেলা আড়াই টার দিকে সিজারের মাধ্যমে কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। সঠিকভাবে পরিচর্যার ব্যবস্থা না থাকায় ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উদাসিনতার কারনে শিশুটি জন্মের পর অসুস্থ্য হয়ে পড়ে।

এসময় শিশুটিকে ইনকিউবিটর নামক গ্লাসের মধ্যে রেখে সব ঠিক হয়ে যাবে এমন আশ^াস দেন চিকিৎসক। স্বজনেরা শিশুটিকে অন্য হাসপাতালে নিতে চাইলে কর্মরত চিকিৎসক তা নিষেধ করে। নবজাতকের মামা মাসুদ রানা জানান-রাতে শিশুটির ব্যাপক সমস্যা দেখা দেয়। সারারাত কোন ডাক্তার নার্স নবজাতকের কোন খোজখবর নেয়নি। ডাক্তার ডেকেও কাউকে পাওয়া যায়নি। শনিবার ভোরে সাখাওয়াত এইচ মেমোরিয়াল হাসপাতালের চিকিৎসক মোস্তাক আহমেদ জানান-বেবির অবস্থা ভালো নয়। আপনারা বেবিটিকে দ্রুত শিশু হাসপাতালে ভর্তি করান। উপায়ান্তর না দেখে আমরা শিশুটিকে সিরাজগঞ্জ নর্থবেঙ্গল হাসপাতালে ভর্তি করি। ভর্তির পর চিকিৎসক জানান-শিশুটি ভালো অবস্থায় নেই। ১২ ঘন্টা আগে শিশুটি এখানে নিয়ে আসলে বাচানো যেত। এর পর শনিবার দুপুর ১২ টার দিকে নবজাতকটি মারা যায়।

বিষয়টি নিয়ে কথা হয় সাখাওয়াত এইচ মেমোরিয়াল হাসপাতালের ম্যানেজার জাকির হোসেনের সাথে। তিনি বলেন প্রতিদিনই অনেক অপারেশন হচ্ছে, সবাইতো আর ভালো হয় না।

ডাক্তার না থাকার ও কর্তৃপক্ষের অবহেলার বিষয়ে তিনি বলেন উনার বাচ্চার সমস্যা উনি আমাদের না বললে আমরা তো ডাক্তার নিয়ে সারারাত তার কাছে বসে থাকতে পারি না।

অভিযোগ রয়েছে গত এক মাসে সাখাওয়াত এইচ মেমোরিয়াল হাসপাতালের চিকিৎসক রবিউলের সিজারে আরো ৩ টি নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। এব্যাপারে চিকিৎসক রবিউলের সাথে যোগাযোগ করতে গেলে তাকে হাসপাতালে পাওয়া যায়নি। চিকিৎসক রবিউল ইসলামের ভিজিটিং কার্ডে দেয়া ২ টি নাম্বারে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।

(এমএসএম/এসপি/আগস্ট ১৩, ২০১৮)