রাজশাহী প্রতিনিধি : রাজশাহী মহানগরীতে বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। রাজশাহী ওয়াসার বেশির ভাগ গভীর নলকূপ দিয়ে পানি কম ওঠায় এবং ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লাটগুলো নষ্ট হয়ে যাওয়ায় পানির সংকট প্রকট হয়ে উঠছে।

রাজশাহী নগরীর হেতেমখাঁ ছোট মসজিদ এলাকায় দেখা গেল অনেকেই ওয়াসার পানির জন্য রাত দেড়টার দিকে কলস নিয়ে পানির লাইনের কাছে বসে আছেন।
জানা যায়, রমজানের শুরু থেকে লাইনে পানির গতি নেই। এক কলসি পানি পেতে আধা ঘণ্টা বসে থাকতে হয়। দিনের বেলাতেও চাহিদা মতো পানি মিলছে না।
জানা যায়, রাজশাহীর বিভিন্ন এলাকায় সহজে ওয়াসার সাপ্লাই পানি পেতে স্থানীয় কাউন্সিলরকে তারা একাধিকবার ট্যাপকল স্থাপনের আবেদন জানান। আজ হবে কাল হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেয়া হলেও তার বাস্তবায়ন নেই। ট্যাপকল তো দূরের কথা এখন দিনের বেলায় সাপ্লাই পানি বন্ধ হয়ে গেছে। এ কারণে পানি সংগ্রহ করতে তাদের অনেক কষ্ট করতে হয়। সব কাজ ফেলে তারা এখন পানির জন্য হাহাকার করছেন।
জানা গেছে, সাপ্লাই পানির সংকট শুধু নগরীর হেতমখাঁ এলাকায় নয়। নগরীর ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাধুর মোড়, বালিয়াপুকুর, টিকাপাড়া ও রানীনগরসহ পুরো এলাকায় এখন পানির জন্য হাহাকার।
জানা যায়, নগরীর ৩০টি ওয়ার্ড এলাকায় বর্তমানে প্রায় ৭ লাখ ৮৭ হাজার ১৮০ জন মানুষের বসবাস। কিন্তু পাইপলাইনে পানি সরবরাহের আওতাভুক্ত এলাকায় জনসংখ্যা ৫ লাখ ২৭ হাজার ৪১০ জন। শতকরা হিসাবে প্রতিদিনের পানি সরবরাহ মোট চাহিদার মাত্র ৪৭ ভাগ। এখনও ওয়াসার পানি সরবরাহের আওতার বাইরে নগরীর ৩৩ ভাগ মানুষ। মহানগরীর পূর্ব-উত্তর ও পশ্চিম পাশের প্রায় ২ লাখ ৬২ হাজার মানুষ বর্তমানে ওয়াসার পানি সরবরাহ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। এসব এলাকার মানুষ হস্তচালিত নলকূপ অথবা পাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিনের পানি সংগ্রহ করেন।
ওয়াসার হিসাব মতে, নগরীরজুড়ে সাপ্লাই পানির গ্রাহক প্রায় ৩৫ হাজার। পানি সরবরাহ নিতে ১৮শ’ টাকা ফি জমা দিতে হয়। পরে প্রত্যেক মাসে ৪০ টাকা পানির বিল পরিশোধ করতে হয়। এছাড়া প্রত্যেক ওয়ার্ডে প্রায় ৭০টি করে উন্মুক্ত ট্যাপকল রয়েছে। এসব ট্যাপকল পাঁচ বছর আগে স্থাপন করা হয়েছে। উন্মুক্ত ট্যাপকল থেকে পানির অপচয় বাড়ে। এ কারণে ট্যাপকল স্থাপন বন্ধ রাখা হয়েছে।
(ওএস/এএস/জুলাই ১৫, ২০১৪)