চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি : পাবনার চাটমোহর উপজেলার বিলচলন ইউনিয়নে ঈদুল আজহা উপলক্ষে সরকারের বরাদ্দকৃত জনপ্রতি ২০ কেজি ভিজিএফের চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। উপকারভোগীরা ওজনে কম দেয়ার প্রতিবাদ করলে ইউপি সচিব ও মেম্বররা অভিযোগকারীদের ধমক দিয়ে তাড়িয়ে দেন। 

সোমবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার বিলচলন ইউনিয়ন পরিষদে এ ঘটনা ঘটলেও ঘটনাস্থলে গিয়ে ট্যাগ অফিসার ও ইউপি চেয়ারম্যানকে পাওয়া যায়নি।

জানা যায়, সরকারি নিয়মানুযায়ী বিলচলন ইউনিয়নের মোট ৭৮৫ জন দুস্থ মানুষের মাঝে ২০ কেজি করে চাল বিতরণ করার কথা। কিন্তু নিয়ম না মেনে বালতি দিয়ে মেপে সংশ্লিষ্টরা প্রতিজনকে ১৬ থেকে সাড়ে ১৭ কেজি (বস্তাসহ) চাল দিচ্ছেন। বিষয়টি কুমারগাড়া গ্রামের জয়গন নেছা নামে এক বৃদ্ধার সন্দেহ হলে তিনি ইউনিয়ন পরিষদের সামনের একটি দোকানে গিয়ে ডিজিটাল মিটারে মেপে দেখেন তার বস্তায় ১৬ কেজি চাল রয়েছে। এরপর কুমারগাড়া গ্রামের মজনু রহমান, নাদের আলী শেখ, নাজমা খাতুন, রাশিদা খাতুন, সহ বেশ কয়েকজন বস্তা মেপে সাড়ে ১৭ কেজি (বস্তাসহ) চাল পান।

পরে তারা বিষয়টি ইউপি সচিব ও মেম্বরদের জানালে তাদের ধমক দিয়ে তাড়িয়ে দেয়া হয় বলে অভিযোগ করেন তারা। এদিকে চাল বিতরণের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ট্যাগ অফিসার উপজেলা দারিদ্র বিমোচন কর্মকর্তা মো. আবদুর রাজ্জাকের উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও তিনি অজ্ঞাত কারণে সেখানে উপস্থিত ছিলেন না।

সরেজমিনে পরিষদে গিয়ে ইউপি সচিব কামরুল হাসানকে অভিযোগের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ‘রিলিফ ফাংশানটাই এ রকম। গোডাউন থেকে বস্তায় চাল কম পাওয়া যায়। যে কারণে কিছুটা সমন্বয় করে দেয়া হয়। তবে চাল কম দেওয়ার দায় আমার নয়।’

এ বিষয়ে ট্যাগ অফিসার উপজেলা দারিদ্র বিমোচন কর্মকর্তা মো. আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘আমি চাল বিতরণের শুরুতে ছিলাম। বালতি দিয়ে চাল মেপে দিলে ৪০০ গ্রাম ওজনে কম হয় এটা আমি দেখেছি। অফিসে কাজের চাপ থাকায় চলে এসেছি।’ তিনি সংবাদটি প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ জানান।

বিলচলন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী জানান, ‘প্রতি বস্তা মেপে ২ কেজি করে চাল কম পাওয়ার গেছে। এই বিষয়টি আমি ট্যাগ অফিসারকে জানালে তিনি সমন্বয় করে চাল বিতরণ করতে বলেছিলেন।’

উপজেলা নির্বাহী অফিসার সরকার অসীম কুমার বলেন, ‘বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

(এসএইচএম/এসপি/আগস্ট ১৩, ২০১৮)