কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : আর মাত্র তিনদিন পরই পবিত্র ঈদুল আযহা। তাই শেষ মুহুর্তে জমে উঠেছে কুষ্টিয়ার পশু হাটগুলো। বিকিকিনিও হচ্ছে ধুমছে। তবে হতাশার কথা হলো চাহিদার তুলনায় হাটে সরবরাহ কম থাকায় চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে গরু। যারা পশু নিয়ে আসছেন তারা কদরের সাথে বিক্রি করে খুঁশিমনে চলে যাচ্ছেন।

কুষ্টিয়ার চড়াইকোল, বাঁশগ্রাম ও আইলচারা পশুহাটে গিয়ে দেখা গেছে তুলনামুলক গরু সরবরাহ কম। তবে জেলার অন্যতম বৃহত্তম পশুহাট আলামপুর-বালিয়াপাড়া হাটের চিত্র কিছুটা ভিন্ন। প্রতি শনিবারে এই হাট বসার কারনে ঈদের আগে আর কোন হাট থাকছেনা। তাই শেষ হাটে ক্রেতাবিক্রেতাদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে।

কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ঝালুপাড়া গ্রামের হাফিজ উদ্দিন বিশ্বাস এবার কোরবানী উপলক্ষে বাড়িতে দু’টি গরু পেলেছেন। দেশী প্রজাতির গরু হওয়ায় দু’টি গরুর বিক্রি করে দামও পেয়েছেন বেশ ভালো। তিনি দু’টি গরু বিক্রি করেছেন ১৪০ হাজার টাকা। তাতে খরচ খরচা বাদ দিয়ে ৫০হাজার টাকা আয় করেছেন। তিনি জানান, ছোট গরুর চাহিদা বেশি। তাই বাজারে নেয়ার পর খুব একটা বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়নি।

আরেক ক্রেতা জুবায়ের হোসেন জানান, প্রতিবছর পরিবারের সবাই মিলে কোরবানী দেন। এবার মাঝারী নয়, একটু বড় সাইজের গরু কিনবেন। আলামপুর বালিয়াপাড়া পশুহাটে গেছেন শনিবারে। দুপুরের পরে হাটে গরুর সরবরাহ বাড়ে তাই দুপুরের পরেই গিয়েছেন হাটে। ছোট এবং বড় গরুর জন্য আলাদা জায়গা করা আছে। বড় গরুর স্থলে ক্রেতাদের খুব একটা ভিড় নেই। তাই বেশ স্বাচ্ছন্দেই ১২০হাজার টাকা দিয়ে একটি গরু কিনে ফিরেছেন বাড়িতে। তাতে তিনি বেশ ভালো পর্তায় কিনেছেন বলে দাবী করেছেন।

কুষ্টিয়া সদর উপজেলার খামার মালিক ওমর ফারুক গরু নিয়ে এসেছেন আলামপুর বালিয়াপাড়া হাটে। তিনি ছোট বড় মিলিয়ে ১২০টি গরু পুষেছেন তাঁর খামারে। ছোট গরু বেশ আগেই তার খামার থেকে বিক্রি হয়ে গেছ। বড় গরু কিছু ঢাকা এবং স্থানীয় হাটে তুললেও তাতে ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছেনা। যদিও ক্রেতা মিলছে তাতে দাম সন্তোষজনক বলছেননা তারা। এতে বেশ হতাশ তিনি। তবে ছোট গরুতে তিনি বেশ লাভবান হয়েছেন। তাতে দামও ভালো পেয়েছেন।

কুষ্টিয়া তথা খুলনা বিভাগের অন্যতম বৃহত্তম পশুহাটখ্যাত আলামপুর-বালিয়াপাড়া হাট মালিক আনিছুর রহমান জানান, গতবারের তুলনায় এবার হাট খুব একটা জমেনি। আগের দু’টি হাট অনেকটাই ফাঁকা ছিল। তবে শেষ হাটে তাদের বিকিকিনি বেশ ভালো বলে জানান তিনি।

তিনি জানান, বড় গরুর প্রতি ক্রেতাদের আকর্ষণ কম এই হাটে। তবে ছোট গরুর প্রতি কদর সবার। ক্রেতারা স্বাচ্ছন্দে নির্বিঘ্নে বিকিকিনি করছেন বলে জানান তিনি।

এদিকে পশুহাটে ক্রেতা-বিক্রেতাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এমএম মেহেদী হাসান।

জেলা পশু সম্পদ অফিসের হিসেবে এবার জেলায় ৮০ হাজার গরু ও ৬৪ হাজার ছাগল উৎপাদন হয়েছে।

(কেকে/এসপি/আগস্ট ১৯, ২০১৮)