উত্তম গোলদার, মির্জাগঞ্জ (পটুয়াখালী) : কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে ব্যবসায়ীরা এখন গাছের গুড়িঁ তৈরী করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। কোরবানির পশুর মাংস টুকরো করতে গাছের গুড়িঁর প্রয়োজন হয়। এ গুড়িঁগুলো প্রকার ভেদে দাম হাকা হয়েছে।

তবে ব্যবসায়ীরা বলেন, এ গাছের গুড়িঁ বানাতে তেতুঁল গাছের প্রয়োজন। তবে তা আগের মতো আর নেই। জ্বালানি হিসেবে বন থেকে কেটে বিক্রি করছে মালিকরা। কোন বাড়িতে তেতুঁল গাছ পাওয়া গেলেও দুই থেকে তিনগুন টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে। মাংস বানাতে শক্ত গাছের গুড়ির দরকার। তাই এখন তেতুঁল গাছের চাহিদাও বেড়ে গেছে। অন্যদিকে কোরবানির পশু জবাই ও মাংস টুকরো করতে ধারালো অস্ত্রই একমাত্র ভরসা।

এজন্য এগুলো তৈরী এবং পুরানো গুলোতে শান দিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কামার শিল্পের কারিগররা। তাই কাজের ধুম পড়েছে মির্জাগঞ্জ উপজেলার প্রতিটি কামারের দোকানে। দিন রাত পরিশ্রম করছেন শ্রমিকরা। আথচ বছরের অধিকাংশ সময়ই এই শিল্পের লোকজন বলতে গেলে প্রায় বেকার সময় কাটান।

উপজেলার কামারদের সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চাপাতি, দা, বঁটি,চাকু তৈরী এবং পুরানো অস্ত্রে শান দিতে তারা এখন দারুন ব্যস্ত। প্রতি বছর কুরবানির ঈদের মৌসুমে তাদের ব্যবসা হয়।

মির্জাগঞ্জ উপজেলার সুবিদখালী বাজারের কামার শিল্পী নেপাল কর্মকার জানান, ১৫-২০ টাকার লোহার দাম এখন বেড়ে হয়েছে ৫০-৬০ টাকা। ভাতির দাম ৩ হাজার টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ১২ হাজার টাকা। শ্রমিকদের মজুরি কয়েকগুন বেড়ে গেছে। বছর জুড়ে এ শিল্পে মন্দা ভাব থাকলেও প্রতি বছর কুরবানির ঈদের আগে এদের কদর বাড়ে অত্যাধিক। এ ছাড়া ধান কাটার মৌসুমে কাচিঁ তৈরিতে কিছুটা ব্যস্ততা বাড়ে বলে একই কথা বললেন অনেক কামার শিল্পিরা। বিশেষ করে মসজিদ ও মদ্রাসার চাকু এবং ছোরায় শান দেওয়ার ব্যস্ততা বেড়েছে।

তিনি আরো বলেন, দিনদিন সব কিছুর দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে সে হারে আমাদের শিল্পের মান কমছে। আগে ৪০-৫০ টাকায় এক বস্তা কাঠ কয়লা পাওয়া যেতো। এখন তা বেড়ে দাড়িয়েছে ১৫০-১৭০ টাকায়। কামার শিল্পের কারিগর, পাইকার ও ব্যবসায়ীরা বলেন, প্রতি বছর এক ঈদ মৌসুমেই যতো কেনা বেচার ধুম আর এ থেকে অর্জিত টাকাই সারা বছরের খেরাক যোগায়। কাজের ব্যস্ততায় সময় কাটছে কামারদের।

অপর দিকে দা, বঁটি, চাকু সোরা, চাপাতির পাশাপাশি মাংশ বানানোর জন্য গাছের গুড়ির চাহিদাও ব্যাপক। স’মিল গুলাতে গুড়ি কিনতে এখনই ভিড় জমাতে শুরু করেছেন। ১২০ টাকা থেকে ৩০০টাকার মধ্যে মিলছে এসব গাছের গুড়ি। স’মিলগুলো ছাড়া লাকড়ির দোকান গুলোতে থাকা কাঠের খন্ড কিনতে শুরু করেছেন অনেকেই।

(ইউজি/এসপি/আগস্ট ১৯, ২০১৮)