আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে প্রতিষ্ঠিত অস্থায়ী হাসপাতাল ও পাঠাগারের স্মৃতি রক্ষায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে রবিবার দুপুরে লিখিত আবেদন করেছেন এলাকাবাসী ও ব্যবসায়ীরা। তাৎক্ষনিক ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনার ভূমি রূম্পা সিকদার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দখলদারদের নির্মানকাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। ঘটনাটি জেলার উজিরপুর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী শিকারপুর বন্দরের।

এর আগে সকালে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি রক্ষায় ভূমিদস্যু মাহফুজুর রহমান মাসুম গংদের হাত থেকে ওই জমি উদ্ধার করে সংরক্ষনের দাবি জানিয়ে ঘন্টাব্যাপী এলাকাবাসী ও বন্দরের ব্যবসায়ীদের উদ্যোগে মানববন্ধন চলাকালীন অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তারা বলেন, ১৯৭০ সালে শিকারপুর বন্দর সংলগ্ন সড়ক ও জনপদের সম্পত্তিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে এলাকার সাধারন মানুষের অর্থায়নে একটি অস্থায়ী চিকিৎসা কেন্দ্র ও পাঠাগার নির্মাণ করেন স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক আয়ানাল হক। সেই থেকে স্থানীয়দের কাছে ওই চিকিৎসা কেন্দ্রটিকে বঙ্গবন্ধু হাসপাতাল হিসেবে পরিচিত।

বক্তারা আরও বলেন, সম্প্রতি পল্লী চিকিৎসক আয়নাল হকের মৃত্যুর পর ওই কেন্দ্রে আয়নালের পুত্র মাহবুবুর রহমান চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছেন। অতিসম্প্রতি মাহবুবুর রহমানের মৃত্যুর পর সরকারী ওই সম্পত্তির ওপর লোলুপ দৃষ্টি পরে ভূমিদস্যু মাহফুজুর রহমান মাসুমের।

শিকারপুর বন্দরের ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হেমায়েত হোসেন মুন্সীর সভাপতিত্বে সভায় বক্তারা আরও বলেন, মাসুম শিকারপুর বন্দরের ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসীর মন থেকে বঙ্গবন্ধুর নামে প্রতিষ্ঠিত হাসপাতালের নাম ও পাঠাগারের স্মৃতি মুছে ফেলার জন্য উপজেলা ভূমি অফিসের কতিপয় কর্মকর্তার যোগসাজসে ওই সম্পত্তি লিজ নিয়ে থানার ওসি শিশির কুমার পালের সহযোগীতায় পাকা স্থাপনা নির্মাণ কাজ শুরু করেন। এসময় বন্দরের ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী নির্মান কাজে বাঁধা প্রদান করলে ওসি শিশির কুমার ব্যবসায়ীদের চাঁদাবাজি মামলায় জড়ানোর হুমকি প্রদর্শন করেন।

সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম করিম খান, ব্যবসায়ী মোঃ খোকন, শামিম সরদার, মঞ্জু সরদার, সমাজ সেবক হারুন হাওলাদার, সুমন মৃধা, নাসির মৃধা প্রমুখ। সমাবেশে শেষে বক্তারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে প্রতিষ্ঠিত অস্থায়ী হাসপাতাল ও পাঠাগারের স্মৃতি রক্ষার দাবীতে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) রূম্পা সিকদারের কাছে লিখিত আবেদন করেন। তাৎক্ষনিক তিনি (রূম্পা সিকদার) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দখলদারদের নির্মানকাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। একইসাথে তিনি (রূম্পা সিকদার) জরুরি ভিত্তিতে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি রক্ষায় চিকিৎসা কেন্দ্র ও পাঠাগারের ভবন সংস্কারের জন্য বন্দর ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দকে নির্দেশ দিয়েছেন।

বরিশাল সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার গোলাম মোস্তফা জানান, শিকারপুর বন্দরের ১৩৫ ও ১৩৬নং দাগের সম্পত্তি সড়ক ও জনপথ বিভাগের। আর দখলদাররা ১৩৬ নং দাগের সম্পত্তি দখল করে ভবন নির্মানের কাজ শুরু করেছে। এ ব্যাপারে দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

(টিবি/এসপি/আগস্ট ১৯, ২০১৮)