কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : প্রতারক সুজন লস্কার এবং তার স্ত্রী নাজমা সুলতানা জুঁইয়ের প্রতারনার ফাঁদে পড়ে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার বহু মানুষ এখন সর্বশান্ত।

কবিরাজি চিকিৎসার আড়ালে নানা প্রলোভন দেখিয়ে তারা সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারনা করে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে।
এ দিকে স্থানীয় ভাবে এবং বহালবাড়ীয়া ইউপির চেয়ারম্যান তৌহিদ’র কাছে সুবিচার না পেয়ে এক ব্যক্তি কুষ্টিয়ার বিজ্ঞ আদালতে মামলা করলে আদালত প্রতারক সুজন লস্করের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারী করেন। পুলিশ ওই প্রতারক কে খুঁজছে।
জানা গেছে, প্রতারক সুজন লস্কর গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার উজানী ইউনিয়নের বাসুদেবপুর ৮ নং ওয়ার্ডের আবেদ লস্কারের পুত্র।
সে মিরপুর উপজেলার বহালবাড়িয়া ইউপির বহালবাড়ীয়া গ্রামের মৃত তোফাজ্জেল হোসেন’র কন্যা নাজমা সুলতানা জুই ওরফে সাবানা খাতুনকে বিয়ে করে। এই ঠিকানাকে ব্যবহার করেই প্রতারক সুজন লস্কর প্রতারক চক্র গড়ে তুলে একের পর এক সাধারন মানুষের সাথে প্রতারনা শুরু করে।
তারা ভেড়ামারায় এসে নওদাপাড়ায় আস্তানা গড়ে তুলে বিভিন্ন বাড়িতে ভাড়া থাকতে শুরু করে। সর্বশেষ তারা আব্দুল বারী’র নওদাপাড়াস্থ বাড়ি ভাড়া নেয়। এখানে থাকাকালীন সময়ে বাড়ির মালিকের কাছ থেকে ঋন হিসেবে ভুয়া একটি চেক দিয়ে হাতিয়ে নেয় নগদ ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা।
এছাড়াও প্রতারক সুজন নওদাপাড়া এলাকার মসলেম উদ্দীনের কাছ থেকে কবিরাজি চিকিৎসার নাম করে ৩ লক্ষ টাকা, ফারাকপুর গ্রামের জনৈক দিনমজুর কেরামত আলীর শেষ সম্বল জমি ও গরু বিক্রির ১ লক্ষ ১৯ হাজার টাকাসহ স্থানীয় মাহাফুজ’র টিনের দোকান থেকে টিন, হবিবর এবং তার ভাই এর দোকান থেকে নগদ অর্থ এবং আসবাবপত্র হাতিয়ে নেয়।
তার স্ত্রী নাজমা সুলতানা জুই ওরফে সাবানা খাতুন ও স্বামীর চেয়ে কোন অংশেই কম না। সে স্থানীয় আশা এনজিও’র নওদাপাড়ার কোকিল দল’র কাছ থেকে নিজ নামে ১০ হাজার টাকা ঋন এবং অন্য এক মহিলার নামে ২০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে পালিয়ে গেছে। এতো কিছুর বিস্তর অভিযোগ নিয়ে নওদাপাড়ার আব্দুল বারী তথ্যমন্ত্রীর সুপারিশ নিয়ে মিরপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
পুলিশ দ্রুত অভিযান চালিয়ে প্রতারক সুজন লস্কর কে আটকও করে। এরপরই প্রতারক চক্রের পক্ষ নিয়ে মিরপুর উপজেলার বহালবাড়ীয়া ইউপি চেয়ারম্যান তৌহিদুল ইসলাম তৌহিদ, আব্দুল বারীসহ অন্যদের টাকা ফেরত দেওয়ার শর্তে তাকে থানা থেকে ছাড়িয়ে আনে। কিন্তু টাকা ফেরত দেওয়া তো দূরে থাক বহালবাড়ীয়া ইউপি চেয়ারম্যান তৌহিদ টাকা প্রত্যাশীদের হয়রানী করতে শুরু করে দেন।
পরবর্তীতে আব্দুল বারী কুষ্টিয়ার বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে (আমলী) দি নিগোশিয়েবল ইসট্রমেন্ট এ্যাকট এর ১৩৮ ধারা মোতাবেক ভেড়ামারা সি আর ৩৯/২০১৪ নং মামলা দায়ের করেন। ৩ টা তারিখ অতিবাহিত হলেও এখনও প্রতারক সুজন লস্কর আদালতে হাজির না হলে বিজ্ঞ আদালত তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারী করে। পুলিশ তাকে হন্যে হয়ে খুঁজছে।
এদিকে অভিযুক্ত সুজন লস্কার জানান, তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ মিথ্যা। আমার কাছে কয়েকজন টাকা পাবে,তাদের টাকা পরিশোধ করে দেব।
(কেকে/এএস/জুলাই ১৫, ২০১৪)