কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : এটি একটি জনগুরুত্বপূর্ণ সড়ক, এটি কোন খাল নয়। দীর্ঘদিন সংস্কার না থাকায় বর্ষাকালের বৃষ্টিতে কুষ্টিয়া থেকে আলমডাঙ্গা পর্যন্ত দীর্ঘ এই আঞ্চলিক মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে এভাবেই বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।

দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চালের মোকাম এই সড়কের খাজানগরে। ফলে প্রতিদিন হাজার হাজার মালবাহী, যাত্রীবাহী বিভিন্ন যানবাহন চলাচলের কারণে রাস্তার ইট সুরকি উঠে ব্যস্ততম এই সড়কে অসংখ্য স্থানে খানাখন্দে ভরে গেছে।
এসব গর্তে আটকে যাচ্ছে যানবাহন। দুর্ঘটনাও যেন নিত্যদিনের। এর প্রভাব পড়েছে দেশের বৃহত্তম চালের মোকাম খাজানগরের চাল কল-কারখানার উপর।
কুষ্টিয়া-আলমডাঙ্গা-চুয়াডাঙ্গা আঞ্চলিক এই মহাসড়কটিতে প্রায় প্রতিবছরই বর্ষায় খানাখন্দ সৃষ্টি হয়।
২০১১ সালে যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সড়কটি পরিদর্শন করে চলাচলের উপযোগী করার প্রতিশ্রুতি দিলেও এখন পর্যন্ত জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটির চেহারা ভাল হয়নি।
জানা গেছে, ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে এক হাজার ৪১০ কোটি টাকার একটি বিশেষ প্রকল্পের আওতায় কুষ্টিয়া-আলমডাঙ্গা-চুয়াডাঙ্গা সড়কটির কাজ শুরু হয়। কিন্তু ওই সময় মাত্র পাঁচ কিলোমিটার কাজ হওয়ার পর তা বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে ঐ সড়কের বটতৈল থেকে বল্লভপুর মোড় পর্যন্ত অংশের অবস্থা একেবারেই বেহাল। এই অংশের মধ্যে রয়েছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চালের মোকাম খাজানগর। বর্ষায় এই সড়কে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় যাত্রী সাধারণের সাথে সাথে চাল ব্যবসায়ীরাও চরম ভোগান্তিতে পড়ছে।
খাজানগরের ব্যবসায়ী রহমান আলী বলেন, এই সড়ক দিয়ে এখন চলাচল করার কোন উপায় নেই। প্রতিনিয়ত এখানে সড়ক দুর্ঘটনা হচ্ছে।
ট্রাক চালক বাদল হোসেন বলেন, ট্রাক গর্তের মধ্যে পড়লে আর উঠতে চায়না। তিনি বলেন, বোঝাই ট্রাক নিয়ে দুই কিলোমিটার যেতে তার সময় লেগেছে প্রায় এক ঘন্টা। এদিকে, সামান্য বৃষ্টি হলে সড়কের খানাখন্দে পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এতে করে পোড়াদহ ও চুয়াডাঙ্গা এলাকার জনসাধারণ চরম দুর্ভোগে পড়েছে। রাস্তা জুড়ে পানি আর কাঁদা-মাটি থাকায় মানুষের চলাচল অনুপযোগী হওয়ায় স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরাও পড়েছেন চরম বেকায়দায়। একবার জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হলে পানি নেমে যাওয়ার সুযোগ না থাকায় মানুষের দুর্ভোগ চরমে উঠছে।
এদিকে, খাজানগর চালকল মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুল মজিদ বাবলু বলেন, অন্যরা চলাচল না করলেও আমাদের ধান চাল বোঝাই ট্রাক তো চালাতেই হচ্ছে। তিনি বলেন, সম্প্রতি তার একটি ট্রাক কাত হয়ে একপাশে পড়ে যাওয়ায় তার কয়েকশ’ মন ধানের ও ট্রাকের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তিনি বলেন আর সহ্য করা যাচ্ছে না, শিঘ্রই এই সড়ক সংস্কার করা না হলে ব্যবসা বন্ধ করতে বাধ্য হবো আমরা।
কুষ্টিয়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মেহেদী ইকবাল আঞ্চলিক এই মহাসড়কের দুরাবস্থার কথা স্বীকার করে বলেন, ক্ষয়ক্ষতির বিবরণ মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রোজেক্ট পাশ হলে আগামী অর্থ বছরে এ সড়কের কাজ হবে।
(কেকে/এএস/জুলাই ১৫, ২০১৪)