লাইফস্টাইল ডেস্ক : সবকিছু ছাপিয়ে চুলের ফ্যাশনে বরাবরই রাজত্ব লম্বা চুলের। পিঠ ছাপানো দীঘল চুলেই যেন খুঁজে পাওয়া যায় সৌন্দর্যের দিশা। এখন খানিক লম্বা চুলের চলটা বেশ দেখা যাচ্ছে। তবে লম্বা চুলের জন্য চাই সঠিক যত্নে আত্তি এবং লম্বা চুলের জন্যও চাই কাটা ও বাঁধার ক্ষেত্রে বৈচিত্র্য…

তেলে সজীব চুল

সুন্দর ঝলমলে মসৃণ চুলের জন্য প্রয়োজন যত্ন। আর লম্বা চুলের জন্য চাই আরো বেশি যত্ন। এ ব্যাপারে বিউটি ওয়েবসাইট থেকে পাওয়া গেছে, ‘সপ্তাহে অন্তত দুদিন জলপাই ও নারিকেল তেল সমপরিমাণ নিয়ে হালকা গরম করে তার সঙ্গে দুটি ভিটামিন-ই ক্যাপসুল মিশিয়ে মাথায় ম্যাসাজ করতে পারেন।’ আর খুশকির সমস্যা থাকলে এই দুই ধরনের তেলের সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে তারপর চুলের গোড়ায় ম্যাসাজ করতে হবে। তারপর গরম পানিতে তোয়ালে ভিজিয়ে সেই পানি ঝরিয়ে তোয়ালে মাথায় পেঁচিয়ে পাঁচ মিনিট গরম ভাপটা নিতে হবে। এরপর চুলে যেকোনো ধরনের প্যাক লাগিয়ে শ্যাম্পু করতে হবে।

চুলের যত্নে শ্যাম্পু

চুলের যত্নে শ্যাম্পু করা অবশ্যই দরকার। তবে নিয়ম অনুসারে চুলের ধরন বুঝে শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে। আবার সপ্তাহে অন্তত এক দিন শ্যাম্পু করার আগে চুলের ধরন বুঝে প্যাক লাগিয়ে নিতে পারেন। ডিম, পাকা কলা ও মধু একসঙ্গে মিশিয়ে চুলে লাগিয়ে ঘণ্টাখানেক পর শ্যাম্পু করতে হবে। খুশকি থাকলে মসুরের ডাল বাটার সঙ্গে টক দই মিশিয়ে একইভাবে চুলে লাগিয়ে এক ঘণ্টা রাখতে হবে। তারপর কোনো একটি হারবাল শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলতে হবে। বিউটি ওয়েবসাইট ঘেটে জানা যায়, ‘রিঠা সারা রাত পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে ফুটিয়ে ঠান্ডা করে ভালো করে কচলিয়ে সেই পানি দিয়ে চুল ধোয়া যেতে পারে। কারণ রিঠা প্রাকৃতিক শ্যাম্পু হিসেবে কাজ করে।’

ঘুমানোর সময় লম্বা চুলের যত্ন

যাদের লম্বা চুল, রাতে ঘুমানোর সময় তাদের বিশেষভাবে চুলের যত্ন নিতে হবে। যেমন- ‘ঘুমানোর আগে ভালো করে মোটা দাঁতের চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়িয়ে বেণী করে ঘুমাতে হবে। যারা বেণী করে ঘুমাতে পারেন না, তারা একটি পাতলা কাপড়ে চুল পেঁচিয়ে ঘুমাতে পারেন। এতে চুল ফাটবে না, পড়বেও না এবং চুল হয়ে উঠবে ঝলমলে উজ্জ্বল।

ধরন বুঝে স্টাইল

লম্বা চুলের জন্যও চাই কাটা ও বাঁধার ক্ষেত্রে বৈচিত্র্য। লম্বা চুল কাটার ক্ষেত্রে টিপস হলো, পেছনে স্ট্রেট কাট করে সামনে লেয়ার কাট করা। আবার সামনে ও পেছনে লেয়ার করলেও ভালো দেখাবে। কাঁধ পর্যন্ত ভলিউম লেয়ার করে পেছনের নিচের অংশে লেয়ার কাটও করানো যায়। এ ধরনের কাটই এখন বেশ চলছে।

একই সঙ্গে জেনে নেয়া যায় চুল বাঁধার ঢংটা কেমন, সে বিষয়টিও। অনুষ্ঠানে যেতে চুল বাঁধা নিয়ে অনেকেই সমস্যায় পড়েন। লম্বা চুলে সামনের অংশ ষাটের দশকের স্টাইলে বেঁধে তারপর পেছনে একটা বেণী করা যেতে পারে। বেণীর একপাশে ফুল লাগিয়ে আনতে পারেন উৎসব আমেজ। যারা চুল খুলে রাখতে চান তাদের জন্য আফরোজা কামাল-এর পরামর্শ হলো, আয়রন করে স্ট্রেট লুক দেয়া অথবা স্পাইরাল বা ক্রিম্প করে চুল সেট করা। আবার চাইলে বেণী খোঁপা, ষাটের দশকের খোঁপা, রিং খোঁপা বা বড় ওয়ান বান খোঁপাও করা যেতে পারে। সঙ্গে মানানসই ফুল তো আছেই।

চুলে চাই বাড়তি যত্ন

বাতাসে আর্দ্রতা কমে যায়। প্রকৃতির সঙ্গে সঙ্গে মানুষের চুল ও ত্বকে এর প্রভাব পড়ে। তাই ঋতু বদলের এ সময় চাই লম্বা চুলের বিশেষ যত্ন। বিউটি ওয়েবসাইট সূত্র অনুসারে, যাদের লম্বা চুল তাদের সপ্তাহে অন্তত এক দিন চুলে তেল ম্যাসাজ করতে হবে। চুল শুকানোর সমস্যা হলে হালকা করে হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার করতে পারেন। তবে হেয়ার ড্রায়ার কম ব্যবহার করাই ভালো। নিয়মিত তেল তো ব্যবহার করতেই হবে।

এ ছাড়া সপ্তাহে অন্তত এক-দুই দিন টক দই, ডিম, লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে এই প্যাক মাথায় লাগানো উচিত। এ সময় চুলের রুক্ষভাব দূর করার জন্য পাকা কলা ও মধু মিশিয়ে প্যাক করে চুলে লাগিয়ে ঘণ্টাখানেক রাখার পর শ্যাম্পু করতে হবে। শ্যাম্পু করার পর কন্ডিশনার হিসেবে এক মগ পানিতে দুই টেবিল চামচ সিরকা বা চায়ের লিকার দিয়ে চুল ধুয়ে ফেললে তা কন্ডিশনারের কাজ করবে।

নিয়মিত চুলের এভাবে যত্ন করলে এবং দুই মাস পরপর চুলের আগা সামান্য ছেঁটে নিলে বা ট্রিম করলে ঝলমলে লম্বা মসৃণ চুল রাখা কোনো ব্যাপারই না।

(ওএস/এসপি/আগস্ট ২০, ২০১৮)