উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ ডেস্ক : ২নং সেক্টরে মুক্তিবাহিনীর ৫০ জন যোদ্ধার একটি দল সুবেদার আবদুল ওয়াহাবের নেতৃত্বে এবং সুবেদার শামসুল হকের নেতৃত্বে এক সেকশন যোদ্ধা চালনা গ্রামে পাকবাহিনীর ডিফেন্সের ওপর চারদিক থেকে আক্রমণ চালায়। সারাদিনব্যাপী এ যুদ্ধে পাকবাহিনীর একজন ক্যাপ্টেন, ১৫ জন সিপাই, ২৯ জন রাজাকার নিহত হয় এবং ১৩ জন রাজাকার ও কয়েকজন পাকসেনা পালিয়ে যায়। মুক্তিবাহিনী পাকসেনাদের ৭টি বড় নৌকা মালামালসহ দখল করে এবং ৬টি এল-এম-জি, ম্যাগাজিন বাক্স ৬টি, এল-এম-জি ম্যাগাজিন ৭২টি, রাইফেল ১২টি ও ৮১০ টি বুলেট উদ্ধার করে।

পাকবাহিনী বেগমগঞ্জ থানার সোনাপুর ও গোপালপুরের কাছে মুক্তিবাহিনীর অবস্থানের ওপর হামলা চালায়। মুক্তিবাহিনী পাল্টা আক্রমণ চালালে ৩/৪ ঘন্টা প্রচন্ড গুলিবিনিময় হয় এবং পরে পাকসেনারা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। এ যুদ্ধে ৪০ জন পাকসেনা নিহত হয় এবং মুক্তিযোদ্ধারা ২০টি অস্ত্র দখল করে। অপরদিকে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।

লাকসাম থেকে পাকসেনাদের একটি শক্তিশালী দল চৌদ্দ গ্রামের দিকে অগ্রসর হয়। পাকসেনাদের এই দলটি মুক্তিবাহিনীর এ্যামবুশ দলের ২০০ গজের মধ্যে পৌঁছালে মুক্তিযোদ্ধারা তাদের ওপর আক্রমণ চালায়। সমস্তদিন গুলিবিনিময়ের পর পাকসেনারা সম্মুখদিকে অগ্রসর হতে না পেরে পিছু হটে এবং আক্রোশে রাস্তার চারদিকের সমস্তগ্রাম জ্বালিয়ে দেয়। এই যুদ্ধে ২০ জন পাকসৈন্য নিহত ও অনেক আহত হয়।

মুক্তিবাহিনীর গেরিলা দল আড়াই হাজার থানা আক্রমণ করে। এই আক্রমণে থানার দারোগা নিহত হয়। গেরিলা যোদ্ধারা থানার সমস্ত অস্ত্রশস্ত্র দখল করে এবং নিরাপদে নিজ ঘাঁটিতে ফিরে আসে।

খুলনায় পাকবাহিনীর ৪০০ জন সৈন্য উকসা-গোবিন্দপুর মুক্তিবাহিনীর শক্তিশালী ঘাঁটির ওপর হামলা চালায়। মুক্তিযোদ্ধারা পাল্টা আক্রমণ চালালে উভয় পক্ষের মধ্যে প্রায় নয় ঘন্টা গোলাবিনিময় হয়। পরে পাকবাহিনীর একজন মেজর গুরুতর আহত হলে পাকসেনারা পালিয়ে যায়। এ যুদ্ধে ৮ জন পাকসেনা নিহত ও অনেক সৈন্য আহত হয়।

পাকিস্তান সরকার বৃটেন ও বৃটিশ উপনিবেশগুলোর বিরুদ্ধে বৃটিশ সরকারের কাছে এক প্রতিবাদ লিপি পেশ করে। প্রতিবাদ লিপিতে বলা হয় : বৃটিশ সরকার ও হংকং প্রশাসন সেখানে আশ্রয় প্রার্থী বাঙালী বিদ্রোহীদের প্রতি নমনীয় মনোভাব প্রদর্শন করছেন এবং বিদ্রোহীদের বৃটেনে থাকার অনুমতি দিয়েছেন। বিদ্রোহীদের বি.বি.সি বেতার ও টেলিভিশন ব্যবহার করতে দেয়া হয়েছে। বহু বৃটিশ নাগরিক পাকিস্তান ধ্বংসাত্মক কাজ চালানোর জন্য তহবিল সংগ্রহ ও অস্ত্র ক্রয় করতে বিদ্রোহীদের সাথে হাত মিলিয়েছেন।

রাওয়ালপিন্ডিতে কাউন্সিল মুসলীম লীগের খাজা খয়রুদ্দিন ও মওলানা শফিকুল ইসলাম প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খানের সাথে দেখা করেন।

তথ্যসূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর।
(ওএস/এএস/আগস্ট ৩০, ২০১৮)