চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : ভক্তদের ঢল নেমেছিল সকাল থেকে। শিশু-কিশোরদের আকর্ষণীয় সাজের মধ্য দিয়ে ফুটে ওঠে শ্রীকৃষ্ণের জীবনের নানা ঘটনাবলি। প্রধান প্রধান সড়কের দুই পাশে হাজারো মানুষের অপেক্ষা। এভাবে বর্ণাঢ্য আয়োজনে চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হলো ‘ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী’র মহাশোভাযাত্রা।

নগরের আন্দরকিল্লা মোড়ে শ্রীশ্রী জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ বাংলাদেশ আয়োজিত এ শোভাযাত্রার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন সিলেটের মহাপ্রভু অঙ্গনের অধ্যক্ষ রাধা বিনোদ মিশ্র।

রোববার (২ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে মিনি ট্রাক, পিক-আপসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহনে শ্রীকৃষ্ণ ভক্তরা জড়ো হন জেএম সেন হল, আন্দরকিল্লা ও আশপাশের এলাকায়। এরপর তারা সুশৃঙ্খলভাবে অংশ নেন মহাশোভাযাত্রায়।

শোভাযাত্রার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পরিষদের সহ-সভাপতি অলক দাশ। বক্তব্য দেন ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, ভারপ্রাপ্ত মেয়র চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক বিমল কান্তি দে, সাবেক সভাপতি ও রাউজান পৌরসভার মেয়র দেবাশীষ পালিত, সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট চন্দন তালুকদার প্রমুখ।

বিমল কান্তি দে বলেন, শ্রীশ্রী গীতা ও শ্রীমদ্ভাগবতের মহান প্রবক্তা পুরুষ, সনাতন ধর্মের প্রাণপুরুষ, মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের অশেষ প্রেরণাময় ভাবসঞ্চারী শ্রীকৃষ্ণ আজ থেকে ৫২৪৫ বছর আগে দ্বাপর যুগের ক্রান্তিলগ্নে পৃথিবীতে অবতীর্ণ হয়ে দানবকুলের কুটিল ধূম্রজাল ও সংকটাবর্ত ধ্বংস করে তদানীন্তন সামাজিক ও ধর্মীয় অস্তিত্বকে রক্ষা করেছিলেন। তারই আধ্যাত্মিক ও সমাজকল্যাণমুখী কর্মকা-ের স্মারক অনুষ্ঠান জন্মষ্টমী মহোৎসব যা মধুরতম যোগলীলার ভাব উদ্দীপক। ৩৬ বছর ধরে চট্টগ্রামে এ উৎসব হয়ে আসছে।

এবার মহোৎসবের কর্মসূচিতে রয়েছে রোববার দুপুরে মাতৃসম্মেলন। উদ্বোধন করবেন রামকৃষ্ণ মিশনের অধ্যক্ষ শক্তিনাথানন্দজী মহারাজ। বিকেল তিনটায় ধর্মীয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বিকেল পাঁচটায় সনাতন ধর্মমহাসম্মেলন, মঙ্গলপ্রদীপ প্রজ্বলন করবেন ঋষিধাম ও তুলসীধামের মোহন্ত মহারাজ সুদর্শনানন্দ পুরী মহারাজ, উদ্বোধন করবেন কৈবল্যধামের মোহন্ত মহারাজ অশোক কুমার চট্টোপাধ্যায়, রাতে জন্মাষ্টমী পূজা, ষোড়শপ্রহরব্যাপী মহানাম সংকীর্তনের শুভ অধিবাস, সোমবার (৩ সেপ্টেম্বর) ভোর থেকে অহোরাত্রি মহানাম সংকীর্তন শুরু। সকাল নয়টা থেকে দুপুর পর্যন্ত ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প, চোখ পরীক্ষা ও ব্লাড গ্রুপিং। ৫ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্ম মুহূর্তে মহানাম সংকীর্তনের সমাপন। প্রতিদিন দুপুর ও রাতে মহাপ্রসাদ বিতরণ।

জন্মাষ্টমী উপলক্ষে নিরাপত্তার বিষয়ে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মাহাবুবর রহমান বলেন, জন্মাষ্টমী উপলক্ষে পুলিশের পক্ষ থেকে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নিয়মিত ফোসের্র পাশাপাশি সাদা পোশাকে গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যসহ প্রায় ৫০০ পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।

(জেজে/এসপি/সেপ্টেম্বর ০২, ২০১৮)