নাগরপুর (টাংগাইল) প্রতিনিধি : টাঙ্গাইলের নাগরপুরে প্রেমিককে বিয়ে করার জন্য চাপ দেওয়ার কারনে নিজ প্রেমিকের হাতেই খুন হতে হলো অষ্টম শ্রেণীর স্কুলছাত্রী খালেদা আক্তার পপিকে। খালেদা আক্তার পপিকে জবাই করে হত্যার ঘটনায় মূল আসামীকে গ্রেফতারের পর তার স্বীকরোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বেড়িয়ে এসেছে লোমহর্ষক কাহিনী।

নাগরপুর থানা পুলিশ রবিবার (২ সেপ্টেম্বর) ভোরে উপজেলার সহবতপুর উত্তরপাড়া এলাকা থেকে হত্যাকারী রাকিবকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত গোলাম মোস্তফা রাকিব (২২) একই এলাকার ওয়াজেদ আলী মিয়ার ছেলে। তার স্বীকারোক্তিতে পুলিশ এ হত্যাকানণ্ডে ব্যবহৃত গামছা ও চাকু, মৃতের পরিহিত বোরকা, গ্রেফতারকৃতর ১ টি স্কুল ব্যাগ, ওই ছাত্রীর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন উদ্ধার করে।

নাগরপুর থানার ওসি মাঈন উদ্দিন বলেন, পুলিশ গোপন সংবাদের ভিতিত্তে অভিযান চালিয়ে এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত প্রধান আসামিকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত আসামী এ ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। পরে দুপুরের দিকে তাকে টাঙ্গাইল আদালতে পাঠানো হয়।

তিনি আরো বলেন, গ্রেফতারকৃত গোলাম মোস্তফা রাকিব জানায় সে একজন রাজমিস্ত্রী। মোবাইল ফোনে বিগত প্রায় ৪ মাস ধরে পপির সঙ্গে তার প্রেমের সর্ম্পক গড়ে উঠে। মোবাইলে কথা বলা ও মেসেজ এর মাধ্যমে তাদের সর্ম্পক আরো গভীর হয়। এ অবস্থায় গত ৫ আগস্ট পপি রাকিবের সাথে দেখা করার জন্য এলাসিন শামসুল হক সেতুতে আসে। এক পর্যায়ে পপি রাকিবকে বিয়ে করার জন্য চাপ দেয়। পরে রাকিব জানায় সে নয় মাস আগে বিয়ে করেছে। কিন্তু তখন পপি জানায় সে বাড়ি থেকে একবারে বের হয়ে এসেছে। তবুও পপি বিবাহের জন্য চাপ দিলে তাকে শান্ত করার জন্য রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলে। রাতটা কাটিয়ে ভোর বেলা তারা এলাকা থেকে পালিয়ে যাবে বলে পপিকে আশ্বাস দেয়। পরে পপিকে নিয়ে সে টাঙ্গাইলে ঘুরতে যায়। সেখান থেকে সিএনজি করে উপজেলার নলসন্ধ্যা নামে। দুজনে হেটে একটি বাশঁঝোপে গিয়ে বসে। পরে গভীর রাতে রাকিব তার কাছে থাকা গামছা দিয়ে পপিকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য রাকিবের কাছে থাকা ব্যাগের ভিতর থেকে চাকু বের করে পপির গলা কেটে ফেলে। পরে পপির ব্যবহৃত মোবাইল ও বোরকা নিয়ে চলে আসে। পরে সে বোরকা, গামছা ও চাকু ঘটনাস্থলের কাছে নলসন্ধ্যা খালের পাশে ফেলে দেয়।

উল্লেখ্য, গত ৬ আগস্ট নাগরপুর উপজেলার সহবতপুর ইউনিয়নের নলসন্ধ্যা বাশঁঝাড়ের ভিতরে থেকে পুলিশ পপির গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে। পরে গত ৭ আগস্ট নিহতের পিতা আবুল কালাম বাদী হয়ে নাগরপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে এ ঘটনায় পুলিশ ৩ জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে মূল আসামির সন্ধান পায়।

(আরএসআর/এসপি/সেপ্টেম্বর ০২, ২০১৮)