কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : কুষ্টিয়ার মিরপুরে এক ভূয়া এসআই আর সহযোগী ভূয়া তিন কনস্টেবল নিয়েই চলছে কাতলামারীর সন্ত্রাসী গ্রুপের কর্মকান্ড। ভূয়া পুলিশের পরিচয় দিয়ে তারা কুষ্টিয়া-মেহেরপুর মহসড়কে করছে নানান অপকর্ম। ডাকাতি, ছিনতাই, মাদক ব্যবসা, অস্ত্রবাজিসহ ধর্ষনের মতো কর্মকান্ড করছে তারা। 

এরা হলেন- কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার সদরপুর ইউনিয়নের কাতলামারী গ্রামের শাহীন খন্দকারের ছেলে ভূয়া এসআই জাহিদ, একই এলাকার ভূয়া কনস্টেবল ইউসুফ খন্দকারের ছেলে সুনাহার, তমজেল খন্দকারের ছেলে উজ্জল, রমজান খন্দকারের ছেলে মোমিন।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাদক ও চোরাচালান রোধে কুষ্টিয়া-মেহেরপুর মহসড়কের কাতলামারী মাঠ এলাকায় পুলিশ বক্স তৈরী করে। উক্ত এলাকায় ডাকাতি ও মাদক পাচার রোধে যা অগ্রনী ভূমিকা পালন করে আসছে। তবে পুলিশের নাম ভাঙ্গিয়ে স্থানীয় কয়েকজন করেছে চক্রবদ্ধ গ্রুপ।

গত ২০ আগষ্ট সন্ধ্যায় কুষ্টিয়া থেকে এক তরুনী তার মামার বাড়ীতে দৌলতপুরের মৌবাড়ীয়া যাচ্ছিলো। পথিমধ্যে কাতলামারী মাঠ এলাকা থেকে গাড়ী থামিয়ে পুলিশ পরিচয় দিয়ে ওই তরুনীতে তুলে নিয়ে যায়। পরে মাঠের মধ্যে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষন করে ভূয়া এসআই জাহিদ, ভূয়া কনস্টেবল সুনাহার, উজ্জল এবং মোমিন।

পরে স্থানীয়দের সহায়তায় অসুস্থ্য অবস্থায় ঐ তরুনীকে উদ্ধার করে বাড়ীতে নিয়ে আসে শফি নামের এক ব্যক্তি।

নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক শফির প্রতিবেশী এক মহিলা জানান, সেদিন সন্ধ্যায় এক তরুনীকে খুবই অপৃতিকর অবস্থায় নিয়ে আসে শফি এবং এলাকার কিছু লোক। পরে আমি তাকে পরীস্কার করে দেয়। এসময় সে বলে চারজন তাকে খারাপ কাজ করেছে।

তিনি আরো জানান, স্থানীয় জাহিদ, সুনাহার, উজ্জল এবং মোমিন এরা তার এ অবস্থা করেছে।

সরোজমিনে দেখা গেছে, জাহিদ, সুনাহার, উজ্জল এবং মোমিনসহ আরো কয়েকজন মিলে এলাকায় বেশ কিছু অপকর্ম করেছে। কয়েকদিন আগে তারা পুলিশ পরিচয় দিয়ে মোটর সাইকেলের গতি রোধ করে মোবাইল ছিনতাই করেছে। বাস ডাকাতিও করে মাঝে মাঝে তারা। এলাকায় তারা এ ধরনের কর্মকান্ড চালালেও প্রভাবশালী এবং সন্ত্রাসী হওয়ায় কেউ মুখ খুলতে চাই না। এরা গত ২০ আগষ্ট এক তরুনীকে গণধর্ষন করেছে।

অভিযুক্ত মোমিন জানায়, আমি কিছু করিনি। জাহিদ, সুনাহার, উজ্জল এরা আগে থেকেই করেছে। আমাকে পড়ে ডেকেছিলো। আমি সেখানে গিয়ে মেয়েটাকে উদ্ধার করেছি। আমরা মেয়েটার পরিচয় জানি না। তাকে আমরা আরো ২টা ছেলেসহ ধরেছিলাম। পরে ছেলেদের চলে যেতে বলি।

মেয়েটাকে উদ্ধারকারী শফি জানায়, আমি আহত অবস্থায় মেয়েটাকে উদ্ধার করে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছি। তবে তার নাম পরিচয় আমি জানি না। শুধু বাড়ী বলেছিলো কুষ্টিয়া শহরে।

এর আগেও জাহিদ, সুনাহার, উজ্জল এবং মোমিনের বিরুদ্ধে মহাসড়কে পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের অভিযোগ রয়েছে বলে জানায় স্থানীয়রা। তাছাড়া তারা সরাসরি ভারত থেকে ফেন্সিডিল আমদানী করে বলেও জানা গেছে। এবং তারা বিভিন্ন সময়ে ভারতে এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতারনার মাধ্যমে অর্থ আদায় করে। এছাড়া তাদের নামে একাধিক পাসপোর্ট আছে বলেও জানা গেছে।

আমলা পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই আব্দুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এই ঘটনার পর থেকেই জাহিদ, সুনাহার, উজ্জল এবং মোমিন পলাতক রয়েছে। আমি ২দিন তাদের বাড়ীতে অভিযান চালিয়েছি। তবে তাদের কাউকে আটক করতে পারিনি। অভিযান অব্যহত রয়েছে।

তবে এ ঘটনা যাতে আর পূর্নাবৃত্তি না ঘটে এজন্য এদের আটক করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছে স্থানীয়রা।

(কেকে/এসপি/সেপ্টেম্বর ০২, ২০১৮)