সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা, কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) : এলাকায় আধিপত্য বিস্তার  ও বিদ্যুতের মিটার স্থাপনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে নেত্রকোনার কেন্দুয়া পৌর শাখার ১ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর অঞ্জন সরকারকে (৫০) এলোপাতাড়ী কুপিয়ে মারাত্বক রক্তাক্ত জখম করেছে ছাত্রলীগ নেতা ইলিয়াছ কাঞ্চন ফেরদৌস ও তার লোকজন।

সোমবার সকাল অনুমান ১০ টার দিকে পৌরশহরের আদমপুর মহল্লায় এ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। ঘটনার পর সমগ্র এলাকাবাসীর মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ অভিযান চালিয়ে দুপুরেই ছাত্রলীগ নেতা ফেরদৌসকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও অঞ্জন সরকারের স্ত্রী শিল্পী রাণী সরকার জানান, সকাল অনুমান পৌনে ১০ টার দিকে অঞ্জন সরকার আদমপুর মহল্লার নিজ বাড়ি থেকে সাইকেল যোগে কেন্দুয়া উপজেলা সদরে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে ওই মহল্লার অবসরপ্রাপ্ত ইদ্রিস পুলিশের বাড়ি পর্যন্ত পৌছামাত্রই পূর্ব থেকে ওত পেতে থাকা ফেরদৌস ও তার লোকজন অঞ্জন সরকারের ওপর হামলা চালায়। এ সময় অঞ্জন সরকার দৌঁড়ে ইদ্রিস পুলিশের বাড়িতে আশ্রয় নিলে সেখানেও রেহাই পাননি তিনি। পরে সেখানথেকেও জীবন বাচাতে দৌঁড়ে বাড়ির পিছন দিকে যেতে থাকেন অঞ্জন। ডাক চিৎকার করে হামলাকারীরা দৌড়ের মধ্যেই অঞ্জন সরকাকে এলোপাতাড়ী কুপিয়ে মারাত্বক জখম করে।

এসময় তার আর্তচিৎকারে আশেপাশের লোকজন তাকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তার অবস্থা আশংকা জনক দেখে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর নির্দেশ দেন। হাসপাতাল ও তার পারিবারিক সূত্রে জানা যায় হামলায় আহত অঞ্জন সরকারের অবস্থা খুব ভাল নেই, আশংকাজনক।

তার স্ত্রী শিল্পী রাণী সরকার কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমার স্বামীকে এর আগেও ফেরদৌস ও তার লোকজন বাড়িতে এসে মেরে ফেলতে চেয়েছিল। কি কারণে মেরেছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গ্রামে বিদ্যুতের মিটার স্থাপন করতে চেয়েছিল ফেরদৌস। কিন্তু গ্রামের মানুষ তাকে বেশি টাকা না দিয়ে কম টাকা দিয়ে যাদের মাধ্যমে মিটার স্থাপন করা যায় সে ব্যবস্থাই করেছেন। এ নিয়ে গ্রামে বেশ কয়েকটি শালিস বৈঠকও হয়েছে। আমার স্বামী শালিস বৈঠকে উপস্থিত থেকে গ্রামবাসীর পক্ষেই কম টাকায় মিটার স্থাপনের জন্য মতামত দেয়ায় আমার স্বামীর প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে হত্যার জন্য এ হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে।

শিল্পী রাণী সরকার বলেন, আমরা হিন্দু সংখ্যালঘু মানুষ এ জন্যেই আমাদেরকে ভিটেবাড়ি থেকে উচ্ছেদের জন্য বার বার অত্যাচার নির্যাতন করছে। হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের নেতা ও সাবেক কাউন্সিলর অঞ্জন সরকারের ওপর হামলার ঘটনায় এলাকায় সকল মহলে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। কেন্দুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি ইমারত হোসেন গাজী হামলার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অঞ্জন সরকারকে কুপিয়ে মারাত্মকভাবে জখম করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইলিয়াস কাঞ্চন ফেরদৌসকে আটক করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে মামলা নেয়া হবে।

(এসবি/এসপি/সেপ্টেম্বর ০৩, ২০১৮)