স্টাফ রিপোর্টার : তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের মামলায় গ্রেপ্তার আলোকচিত্রী ও দৃক গ্যালারির প্রতিষ্ঠাতা শহিদুল আলমের বিষয়টি খাটো করে দেখার কোনো সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। তিনি বলেছেন, ‘শহিদুল আলম আন্তর্জাতিকভাবে বহু লোকের সঙ্গে কানেক্টেড। ফেসবুক থেকে যদি একটি লাইভ পোস্ট করা হয় এবং তা যদি স্পর্শকাতর, মিথ্যা ও উস্কানিমূলক বিষয় হয়, তবে এটাকে খাটো করে দেখার কোনো অবকাশ নেই।’

শহিদুল আলমের জামিন শুনানিতে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ বিব্রতবোধ করার পর মঙ্গলবার এক প্রতিক্রিয়ায় এসব কথা অ্যাটর্নি জেনারেল।

নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে গত ৫ আগস্ট রাতে দৃক গ্যালারি প্রতিষ্ঠাতা ও আলোকচিত্রী শহিদুল আলমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে ‘উসকানিমূলক ও মিথ্যা’ অপপ্রচারের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে মামলা করা হয়।

ঢাকার হাকিম আদালত শহিদুলের জামিন আবেদন নাকচ করে দিলে তার আইনজীবীরা ১৪ আগস্ট মহানগর দায়রা জজ আদালতে যান। বিচারক আবেদনটি ১১ সেপ্টেম্বর শুনানির জন্য রাখলে তারা শুনানির তারিখ এগিয়ে আনার জন্য আরেকটি আবেদন করেন।

কিন্তু বিচারক তা গ্রহণ না করলে ২৬ আগস্ট শহিদুলকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন চেয়ে ওই আদালতেই ফের আবেদন করা হয়। আদালত তা শুনানির জন্য গ্রহণ না করায় গত ২৮ অগাস্ট শহিদুলের জামিন আবেদন নিয়ে তার আইনজীবীরা হাইকোর্টে আসেন।

কয়েক দিন আটকে থাকার পর গত সোমবার আবেদনটি বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি খন্দকার দিলীরুজ্জামানের বেঞ্চের কার্যতালিকায় আসে। কিন্তু ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায় সময়ের আবেদন করে আদালতকে বলেন, অ্যাটর্নি জেনারেল নিজেই এ শুনানিতে থাকতে চান। এরপর আদালত বিষয়টি মঙ্গলবার শুনানির জন্য রাখে। কিন্তু মঙ্গলবার আদালত বিব্রতবোধ করায় শহিদুলের জামিন শুনানি আরও পিছিয়ে যায়।

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘শহিদুল আলমের মামলাটি আজ শুনানির জন্য তালিকাভুক্ত ছিলো। সকালে যখন তাদের আইনজীবী আবেদনটি শুনানির জন্য মেনশন করেছেন তখন বিচারপতি দু’জনের মধ্যে একজন বিব্রতবোধ করেছেন। ফলে মামলাটি আজকে শুনানি হয়নি। এ মামলাটি ও মামলার নথিপত্র এখন প্রধান বিচারপতির কাছে যাবে। প্রধান বিচারপতি আবার অন্য কোনো বেঞ্চে আবেদনটি শুনানির জন্য নির্ধারণ করবেন।’

মামলাটিতে শুনানির জন্য প্রস্তুত ছিলেন জানিয়ে মাহবুবে আলম বলেন, ‘আমি এ মামলায় শুনানি করতে চেয়েছিলাম। এজন্য প্রস্তুতিও নিয়েছিলাম। কিন্তু আদালত শুনলেন না। তাই আমার বক্তব্যও উপস্থাপন করা হয়নি।’

শুনানিতে হাইকোর্ট বেঞ্চের বিব্রত হওয়ার বিষয়ে মাহবুবে আলম বলেন, ‘বিব্রতের বিষয়ে আদালত কিছুই বলেননি। আমাদের কোর্টের মেটার অব প্রাকটিস অনুসারে বিব্রতের কারণ কখনো বলা হয় না।’

শহিদুল আলমকে বিনা কারণে আটকে রাখা হয়েছে বলে তার আইনজীবীরা যে দাবি করছেন সে বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘এটা ঠিক না। আমি যা পড়ে দেখলাম এখানে একটি লোক আন্তর্জাতিকভাবে বহু লোকের সঙ্গে কানেক্টেড। তার ফেইসবুক থেকে যদি একটি লাইভ পোষ্ট করা হয় এবং যেখানে বিষয়টি স্পর্শকাতর, মিথ্যা ও উস্কানিমূলক বিষয় হয় তবে এটাকে তো খাটো করে দেখার কোনো অবকাশ নেই।’

(ওএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ০৪, ২০১৮)