স্টাফ রিপোর্টার : আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার ও কেনা নিয়ে ‘ধীরে চল নীতি’ গ্রহণ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বিএনপিসহ বিভিন্ন মহলের সমালোচনার পরও ইভিএম প্রস্তুত রাখার জন্য আইন পরিবর্তনের প্রস্তাব করেছে ইসি। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনে দেয়া বক্তব্যের পর ইসি এই নীতি অবলম্বন করেছে।

মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রধানমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, তোড়জোড় করে ইভিএম চাপিয়ে দেয়া ঠিক হবে না। তবে স্বল্প পরিসরে তা ব্যবহার করা যেতে পারে। এরপর নড়েচড়ে বসে ইসি। পরদিন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেন, ইভিএম ব্যবহার নিয়ে ভোটার ও রাজনৈতিক মহলে উৎকণ্ঠা থাকা স্বাভাবিক। কারণ এটির ব্যবহার, উপকারিতা সম্পর্কে আমরা এখনও তাদের জানাতে পারিনি। পর্যায়ক্রমে তারা সব জানতে পারবেন। তবে ইভিএম ব্যবহারের প্রস্তুতি রাখব আমরা। আসন্ন নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার হবে কি-না সে বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।

জানা যায়, বিএনপিসহ বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল আপত্তি করলেও ৩৮২৯ কোটি টাকার কেনার পরিকল্পনা করেছে। এ টাকায় দেড় লাখ ইউনিট ইভিএম কেনার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।

নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপে প্রায় সব দলই ইভিএমের বিপক্ষে মত দেয়। তবে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট শুরু থেকেই ইভিএম ব্যবহারের পক্ষে মত দিয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো না চাইলে নির্বাচনে এই পদ্ধতির প্রয়োগ হবে না বলে আশ্বস্ত করেছিল প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা। তিনি বলেছিলেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের সুযোগ নেই। কিন্তু কতিপয় উৎসাহী কর্মকর্তার কারণে আবার ইভিএমের দিকে ইসি ঝুঁকছে বলে অভিযোগ ওঠে। এখন এই ইভিএম ব্যবহার করতে গণপ্রতিধিত্ব অধ্যাদেশে সংশোধনী আনারও উদ্যোগ নিয়েছে ইসি। পাঁচ নির্বাচন কমিশনারের একজন মাহবুব তালুকদার এ বিষয়ে নোট অব ডিসেন্ট দিলেও তা আমলে নেয়নি ইসি। আরপিও এর সংশোধনী এখন আইন মন্ত্রণালয়ে আছে। পরে এটি সংসদে তোলা হবে।

তবে এখন ইসি বুঝে শুনে এ ব্যাপারে এগুবে বলে জাগো নিউজকে জানান নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম। তিনি বলেন, ইভিএম চাপিয়ে দেয়া হবে না। সবার মতামত নিয়েই এটি বাস্তবায়ন করা হবে।

এ বিষয়ে সিইসি বলেন, স্থানীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারে আইনগত কাঠামো আমাদের রয়েছে। এজন্য প্রশিক্ষণের প্রয়োজন। জাতীয় সংসদে যদি আইন পাস হয় তখন আমাদের প্রশিক্ষিত লোক যারা রয়েছেন, তাদের সক্ষমতা অর্জন, ইভিএম যদি জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য বিবেচিত হয়; কেবল তখনই যতখানি ব্যবহারযোগ্য ততখানি করা হবে।

প্রসঙ্গত, ২০১০ সালের পর বিভিন্ন সময় কেনা ১ হাজার ৮০টি ইভিএম কিনেছিল ইসি। প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) তৈরি এসব ইভিএম তৈরি পর রক্ষণাবেক্ষণ ও কারিগরি ক্রুটি সারানোর জন্য প্রায় সাত কোটি টাকা খরচ হয়। পরে অকোজো হয়ে গেলে সম্প্রতি এগুলো ধ্বংস বা পরিত্যক্তের ঘোষণা করেছে ইসি।

(ওএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ০৪, ২০১৮)