আন্তর্জাতিক ডেস্ক : নিয়োগকর্তার অনুমতি ছাড়াই দেশে ফিরতে পারবেন কাতার প্রবাসীরা। মঙ্গলবার কাতার বাসস্থান আইনে এ-সংক্রান্ত একটি সংশোধন এনেছে। আইনটি সংশোধনের ফলে কাতার ত্যাগে প্রবাসীদের আর বাধা-নিষেধ থাকল না।

আগে কাতার ত্যাগে নিয়োগকর্তার অনুমতি নেয়ার বিষয়ে বাধ্যবাধকতা ছিল। শ্রমিক অধিকার কর্মীরা দীর্ঘদিন ধরে এ আইনের সংশোধন দাবি করে আসছিলেন।

কাতারের এ উদ্যোগকে ‘যুগান্তকারী পদক্ষেপ’ বলে আখ্যায়িত করেছেন আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা আইএলও। আইএলওর দোহা অফিসের প্রধান হাওতান হোমায়ুনপোর এক বিবৃতিতে জানান, আইএলও বাসস্থান আইনের সংশোধনকে স্বাগত জানায়। এ আইন সংশোধনের ফলে কাতারে অবস্থানরত প্রবাসী শ্রমিকদের ওপর প্রত্যক্ষ ও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

বাসস্থান আইনের সংশোধনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে কাতারের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা। সংস্থাটি জানিয়েছে, কাতারে গমন, বহির্গমন ও প্রবাসীদের বসবাসের বিষয় সংক্রান্ত আইনের কিছু ধারায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। তবে সুনির্দিষ্ট কোন ধারায় পরিবর্তন আনা হয়েছে সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি সংস্থাটি।

গ্যাস-সমৃদ্ধ কাতারে ২০ লাখের বেশি প্রবাসী শ্রমিক কর্মরত রয়েছে। এর মধ্যে ১৬ লাখই এশীয়। দেশটির মোট শ্রমিকের ৪০ ভাগ নির্মাণ কাজে জড়িত।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শ্রমিকদের দেশত্যাগের বিষয়টি ছাড়াও নির্দিষ্ট বেতন কাঠামো ও অভিযোগ জানানোর পদ্ধতি বিষয়েও পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে কাতার।

বিশ্বকাপ ফুটবল-২০২২ কাতারে অনুষ্ঠিত হবে। এ উপলক্ষে কাতারে উন্নয়নমূলক কাজের ধুম পড়ে গেছে। বিশ্বকাপ ঘিরে এসব উন্নয়নমূলক কাজে ব্যাপক সংখ্যক শ্রমিক নিয়োগ দিয়েছে দেশটি। বিশ্বকাপ আয়োজনের ঠিক আগে কাতারের এ পদক্ষেপ প্রবাসী শ্রমিকদের বেশ আকৃষ্ট করবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

উল্লেখ্য, কাতার, সৌদি আরব, লেবানন, জর্ডান, বাহরাইন, ইরাক, কুয়েত, ওমান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে নির্মাণ প্রতিষ্ঠানে তদারক ও অভিবাসী শ্রমিকদের দেখভালের জন্য যে ব্যবস্থা চালু রয়েছে তাকে বলা হয় ‘কাফালা সিস্টেম’। একে ইংরেজিতে স্পন্সরশিপ সিস্টেমও বলা হয়। এই ব্যবস্থার অধীনে অদক্ষ সব শ্রমিকের কাজের জন্য প্রয়োজন হয় স্পন্সর। বিশেষ করে সেটা হতে পারে তাদের নিয়োগকারী।

এসব শ্রমিকদের ভিসা ও তার আইনগত অবস্থানের জন্য দায়ী থাকে ওই নিয়োগকারী বা স্পন্সর। তবে অভিযোগ রয়েছে, অনেক নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান শ্রমিকদের পাসপোর্ট তাদের কব্জায় নিয়ে নেয়। অনেক শ্রমিককে নির্যাতন করা হয়। এমনকি তারা যাতে আইনি ব্যবস্থা নিতে না পারেন, সে জন্য তাদের পাসপোর্ট কেড়ে নেয় নিয়োগকারীরা। এসবের তীব্র সমালোচনা করে আসছে আন্তর্জাতিক সব মানবাধিকার সংস্থা।

(ওএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ০৫, ২০১৮)