স্টাফ রিপোর্টার : তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের মামলায় আলোকচিত্রী ড. শহিদুল আলমকে কারাবিধি অনুযায়ী প্রথম শ্রেণির ডিভিশন দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। শহিদুল আলমের স্ত্রী ড. রেহনুমা আহমেদের দায়ের করা এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি বোরহানউদ্দীন ও বিচারপতি মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার সারা হোসেন। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া।

এর আগে গত ২৭ আগস্ট ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম সাইফুজ্জামান হিরো আলোকচিত্রী শহিদুল আলমকে কারাবিধি অনুযায়ী ডিভিশন দেয়ার নির্দেশ দেন। তবে সে আদেশটি প্রতিপালন না হওয়ায় রিটটি দায়ের করা হয় বলে জানান ব্যারিস্টার সারা হোসেন। স্বরাষ্ট্র সচিব ও কারা কর্তৃপক্ষ এই আদেশ বাস্তবায়ন করবে বলেও জানান তিনি।

সারা হোসেন সাংবাদিকদের আরো বলেন, আমাদের কারাবিধি অনুযায়ী বিচারাধীন কারাবন্দিদের দুই ধরনের শ্রেণিতে রাখা হয়। প্রথম শ্রেণি ও দ্বিতীয় শ্রেণি। সেখানে বলা আছে, কারো সামাজিক বা শিক্ষগত যোগ্যতার কারণে তাকে প্রথম শ্রেণির কারাবন্দি হিসেবে গণ্য করা যায়। ড. শহিদুল আলমের পক্ষে গত ২৭ আগস্ট আমরা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে তাকে প্রথম শ্রেণির ডিভিশন চেয়ে একটি আবেদন করেছিলাম। আদালত তখন ডিভিশনের আদেশ দিলেও গত কয়েকদিনে তা প্রতিপালন হয়নি। তাই আমরা তার ডিভিশন চেয়ে হাইকোর্টে একটি আবেদন জানাই। সে আবেদনের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট শহিদুল আলমকে ডিভিশন দিতে নির্দেশ দেন। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে এই ডিভিশন সুবিধা দিতে বলা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, দৃক গ্যালারির প্রতিষ্ঠাতা শহিদুল আলম নিরাপদ সড়কের দাবিতে ছাত্র আন্দোলন নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দেন। ওই ঘটনায় রমনা থানার তথ্যপ্রযুক্তি আইনে দায়ের করা মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখায় পুলিশ। গত ৬ আগস্ট ডিবি (উত্তর) পরিদর্শক মেহেদী হাসান বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের (পরিদর্শক) আরমান আলী। শহিদুলের পক্ষে আইনজীবী ব্যারিস্টার সারা হোসেন ও জোতির্ময় বড়ুয়া রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে এর বিরোধিতা করা হয়। পরে উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক শহিদুল আলমকে সাত দিনের রিমান্ডে রাখার আদেশ দেন। এরপর গত ২৮ আগস্ট হাইকোর্টে শহিদুল আলমের জামিন বিষয়ে আবেদন করেন তার আইনজীবীরা। কিন্তু হাইকোর্ট সে জামিন আবেদন শুনতে বিব্রত প্রকাশ করেন। ফলে নিয়ম অনুসারে আবেদনটির শুনানির জন্য প্রধান বিচারপতি নতুন বেঞ্চ গঠন করে দেবেন।

(ওএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ০৫, ২০১৮)