চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি : পাবনার চাটমোহরে আলোচিত শিশু আব্দুল্লাহ আল নুর অপহরণ ও হত্যা মামলায় স্কুল শিক্ষিকা আজিজা আখতার রুপাকে গ্রেফতারের পর দুইদিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। রুপা এ মামলায় গ্রেফতারকৃত অন্যতম আসামী সোহেল বিশ্বাসের স্ত্রী।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই এসএম ময়েনুদ্দীন জানান, সোহেল বিশ্বাসের অন্ত:সত্ত্বা স্ত্রী স্কুল শিক্ষিকা আজিজা আখতার রুপাকে আদালতে সোপর্দ করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচদিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় রিমান্ড শুনানী শেষে পাবনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল এর বিচারক শফিকুল ইসলাম দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

চাটমোহর পৌর এলাকার চৌধুরীপাড়া মহল্লার বাসিন্দা সোহেলের পিতা নজরুল ইসলামের বাড়ি থেকে স্কুল শিক্ষিকা আজিজা আখতার রুপাকে গত শনিবার দুপুরে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ। তিনি পৌর সদরের শালিখা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
এর আগে স্কুল শিক্ষিকা আজিজা আখতার রুপার স্বামী সোহেল বিশ্বাসকে গ্রেফতারের পর তিনদিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। পরে তিনি হত্যার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে পাবনার আমলী আদালত-১ এর বিচারক অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আবু সালেহ মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন খাঁ’র আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি প্রদান করেন। এছাড়া এই মামলায় গ্রেফতারকৃত আসামী শিশু নুরের ফুফা আব্দুস সামাদকে দুই দফায় ৫ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। তিনিও এই মামলার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন বলে পুলিশ জানায়।

প্রসঙ্গত: গত ২৫ জুন বুধবার সকালে চাটমোহর পৌরসভার ছোটশালিখা হারান মোড় এলাকার বাসিন্দা গ্রীস প্রবাসী আবুল হোসেনের ৪ বছরের ছেলে আব্দুল্লাহ আল নূরকে অপহরণ করে দুর্বৃত্তরা। অপহরণকারীরা ওই দিনই বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে শিশুটির পিতার কাছে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে মুক্তিপণ হিসেবে ১৫ লাখ টাকা দাবি করে। দুই দিন পর ২৭ জুন উপজেলার ভাদড়া এলাকা থেকে শিশুটির তিন টুকরো লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

গ্রেফতারকৃত সোহেল বিশ্বাস ও তার স্ত্রী, আবুল হোসেনের বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে থাকতেন। হত্যার দুদিন পর সোহেলের বাড়ি থেকে রক্তমাথা দা, বটি, চাকু, স্কুল ব্যাগ ও পলিথিন উদ্ধার করে পুলিশ এবং সোহেল বিশ্বাসকে গ্রেফতার করে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত মোট ৮জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুব্রত কুমার জানান, আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে শিশু নুর হত্যা মামলাটিকে তদন্ত করছি। ইতোমধ্যে মামলার তদন্তের ৮০ ভাগ অগ্রগতি হয়েছে। কারা হত্যার সাথে জড়িত ও হত্যার কারণ সম্পর্কে আমরা নিশ্চিত হয়েছি।

শালিখা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা আনোয়ার খাতুন জানান, আমাদের স্কুল রমজান ও ঈদের ছুটির জন্য ৭ আগষ্ট পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। স্কুল খোলার পর নুর হত্যার অভিযোগে গ্রেফতার সহকারি শিক্ষিকা আজিজা আখতার রুপার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

(এসএইচ/জেএ/জুলাই ১৫, ২০১৪)