কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি : পাঁচ দিন অতিবাহিত হলেও থামছেনা দুই কলেজ ছাত্রের পরিবারের স্বজনদের কান্না। মা বাবার আশা ছিল তারা লেখা পড়া করে অনেক বড় হবে, গড়বে নিজের সুন্দর জীবন। কিন্তু বিধিবাম।

গত ১ সেপ্টেম্বর শনিবার বেলা অনুমান আড়াইটার দিকে কেন্দুয়া আঠারোবাড়ি ময়মনসিংহ সড়কে মাসকা সুয়েটার ফ্যাক্টরীর অদূরে কাঠালতলা নামক স্থানে বাস চাপায় নিভে গেল তাদের জীবন প্রদীপ। ওই কলেজ ছাত্রের মধ্যে মোহনগঞ্জ উপজেলার চেছড়াখালী গ্রামের (আদর্শনগর) আব্দুল হান্নান মাষ্টারের ছেলে মুরাদ উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। সে ময়মনসিংহের সৈয়দ নজরুল কলেজের ছাত্র। নিজ বাড়ি থেকে কেন্দুয়ায় আত্মীয়ের বাড়ী হয়ে সি.এন.জি অটো রিকশা যোগে রওয়ানা দিয়েছিল ময়মনসিংহে।

অপরদিকে কেন্দুয়া উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের কাউরাট গ্রামের জামাল উদ্দিনের ছেলে কেন্দুয়া সরকারি কলেজের ছাত্র শরিফ। সেও ময়মনসিংহে যাচ্ছিল তার ওই বন্ধু মুরাদের সঙ্গে। কেন্দুয়া উপজেলার বলাইশিমুল গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে অটো রিকশা চালক জামাল উদ্দিন তাকে সহ ৭ জন নিয়ে ময়মনসিংহের দিকে রওয়ানা দেয়।

পুলিশ জানায়, বেলা অনুমান আড়াইটার দিকে মায়ের দোয়া নামক যাত্রী বিহীন একটি বাস ঢাকা মেট্রো- ব-১১৬৪২৭ ঢাকা থেকে ছেড়ে কেন্দুয়া আঠারবাড়ী সড়ক ধরে নেত্রকোনার দিকে যাচ্ছিল। এসময় যাত্রীবাহী সি.এন.জি চালিত অটো রিকশাটি মাসকা কাঠাঁলতলা নামক স্থানে পৌঁছলে মুখমুখি সংঘর্ষ হয় পরে অটো রিকশাটি বাসের নিচে চাঁপা পড়ে দুমরু মুচরে যায়। ফায়ার সার্ভিসের লোকজন বাসের কিছু অংশ কেটে ৪ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করে। ৪ জনের মধ্যে নওপাড়া ইউনিয়নের কুতুবপুর গ্রামের হাদিস মিয়ার ছেলে নজির উদ্দিনও রয়েছে। নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে এ দূর্ঘটনার বিষয়ে নিহত কলেজ ছাত্র শরিফের বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে কেন্দুয়া থানায় মামলা দায়ের করেছে। পুলিশ বাসটিকে আটক করে রাখলেও বাসের চালক এখনও গ্রেফতার হয়নি।

বুধবার দুই কলেজ ছাত্রের পরিবারে নিহতদের স্মরণে মিলাদ মাহফিল ও দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে। অপরদিকে কলেজের পক্ষ থেকেও দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। যোগাযোগ করা হলে মুরাদের বাবা হান্নান মাষ্টার ও শরিফের বাবা জামাল উদ্দিন কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, অনেক স্বপ্ন ছিল ছেলের ভবিষ্যত নিয়ে, কিন্তু আমাদের সে স্বপ্ন আর পূরণ হলো না।

কেন্দুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ ইমারত হোসেন গাজী বলেন, বাস আটক করে পুলিশি হেফাজতে রাখা হয়েছে এবং চালককে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

(এসবি/এসপি/সেপ্টেম্বর ০৫, ২০১৮)