রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : বিকল্প চালকের গাড়ি চালানোর ফলে দু’ যাত্রীবাহি বাস নিয়ন্ত্রন হারিয়ে লাইটপোষ্টের সাথে ধাক্কা খাওয়ায় পথচারি এক আইনজীবী সহকারি মারাত্মক জখম হয়েছেন। বৃহষ্পতিবার সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে সাতক্ষীরা শহরের পলাশপোল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। আহত আইনজীবী সহকারিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আহতের নাম আমিরুল ইসলাম (৩৮)। তিনি সাতক্ষীরা শহরের পলাশপোল মধুমোল্লারডাঙির নুর ইসলাম ওরফে আনুর ছেলে।

সাতক্ষীরা থেকে চাপড়াগামি যাত্রীবাহি বাস ঢাকা মোট্রো-জ-১১-১৭৯১ ‘প্রভা’ এর যাত্রী স্কুল শিক্ষক সাবিনা খাতুন, মাছ ব্যবসায়ি হারুন অর রশিদসহ কয়েকজন জানান, পুরাতন সাতক্ষীরা থেকে চালক উঠবে এমন কথাটি তারা বাস টার্মিনাল থেকে শুনতে পান। ইতিমধ্যে হেলপার ওই গাড়িটি নিয়ে বৃহষ্পতিবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে যাত্রা শুরু করেন। গাড়িটি পলাশপোল হাইস্কুলের সামনে আসা মাত্রই বিপরীত দিক কালিগঞ্জ থেকে টার্মিনালগামি যাত্রীবাহি বাস ঢাকা মোট্রো-জ-১১-০১৩৩ তামিম নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তাদের গাড়ির মুখোমুখি হলে ‘প্রভা’র চালক বাম দিকে কাটাতে গেলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এক পথচারিকে চাপা দিয়ে সামনের একটি লাইট পোষ্ট এর সঙ্গে ধাক্কা লাগায় সামনের গ্লাসসহ নম্বার প্লেট ভেঙে চুরে যায়।

যাত্রীবাহি বাস ‘তামিম’ এর যাত্রী কালিগঞ্জের পূর্ব নারায়নপুরের সবুজ হোসেন, সোনামনি সরদারসহ কয়েকজন জানান, বিকল্প চালক দিয়ে তাদের বহনকারি গাড়িটি সাতক্ষীরা শহরের পলাশপোল হাইস্কুলের সামনের মোড় ঘোরার সময় বিপরীত দিক থেকে আসা ‘প্রভা’ গাড়িটির সঙ্গে ধাক্কা মারার উপক্রম হয়। এ সময় ‘প্রভা’ গাড়িটির চালক নিয়ন্ত্রন হারিয়ে এক পথচারিকে চাপা দেয়। তাদের গাড়িটিও একটি লাইট পোষ্টের সঙ্গে লেগে দুমড়ে মুচড়ে যায়। সাতক্ষীরা জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলামসহ কয়েকজন শ্রমিক নেতা তড়িঘড়ি করে তামিম পরিবহনটি ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ আসার আগেই অন্যত্র নিয়ে চলে যায়।

সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের ১নং ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আইনজীবী সহকারি আমিনুল ইসলাম জানান, ‘তামিম’ পরিবহনের কারণে সংঘর্ষ এড়াতে যেয়ে প্রভা গাড়িটি তাকে চাপা দেয়। তিনি বৃহষ্পতিবার সকালে পলাশপোল হাইস্কুলে স্মার্ট কার্ড নিতে যাচ্ছিলেন।

সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ মাহাবুবর রহমান জানান, আমিরুল ইসলামের বাম হাত, বাম হাটু ও ডান হাতের কুনই মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তার বাম হাটু গুড়িয়ে যাওয়ায় রক্তক্ষরণ হচ্ছে। তাকে জরুরী ভিত্তিতে খুলনা ২৫০ শয্যা হাসপাতাল অথবা ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে স্থানান্তরের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

‘প্রভা’ গাড়ির মালিক প্রাণনাথ দাশ, ‘তামিম’ গাড়ির মালিক আলীপুরের স্কুল শিক্ষক সাইফুল ইসলাম ও সাতক্ষীরা জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম জানান, তারা ক্ষতিগ্রস্তের চিকিৎসার সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছেন।

সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ‘প্রভা’ গাড়িটি আটক করা হলেও ‘তামিম’ গাড়িটি আটক করা যায়নি।

(আরকে/এসপি/সেপ্টেম্বর ০৬, ২০১৮)