স্টাফ রিপোর্টার : আইন, বিচার ও সংসদবিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই কারাগারে আদালত বসানো হয়েছে। এটা ক্যামেরা ট্রায়াল নয়।

বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকায় সমকাল পত্রিকা অফিসে আয়োজিত ‘সমতলের ক্ষুদ্র জাতিসত্তা ও দলিত জনগোষ্ঠীর অধিকার সুরক্ষা : প্রাতিষ্ঠানিক নীতি কাঠামোর দাবি’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি। হেকস/ইপার বাংলাদেশ, ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেড এবং দৈনিক সমকাল এই বৈঠকের আয়োজন করে।

দৈনিক সমকাল পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোস্তাফিজ শফির সঞ্চলনায় বৈঠকে অংশ নেন সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. জাফর আহমেদ খান, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, সমতলের ক্ষুদ্র জাতিসত্তা ও দলিত জনগোষ্ঠীর নেতৃবৃন্দসহ অন্যান্যরা।

মন্ত্রী বলেন, একটা কথা উঠেছে এটা ক্যামেরা ট্রায়াল। যে প্রজ্ঞাপনটি জারি করা হয়েছে, সেই প্রজ্ঞাপনের মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারির কারণ স্পষ্ট করে বলা আছে। ক্যামেরা ট্রায়ালের সংজ্ঞা হলো- যেখানে কাউকে কোনো পাবলিক বা মিডিয়াকে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না। যেখানে শুধু বিচারক, আসামি আর প্রয়োজন হলে তার আইনজীবীকে রাখা হয়। এমনকি তার কোনো তথ্যাদি প্রকাশও করা যাবে না। একে ক্যামেরা ট্রায়াল বলা হয়।

মন্ত্রী বলেন, গতকাল আপনারা দেখেছেন, জিয়া চ্যারিটেবল মামলার আসামি বেগম খালেদা জিয়া সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাহলে এটা প্রমাণিত হয় যে, এই কোর্ট সকলের জন্য উন্মুক্ত ছিল। যেখানে আদালত বসানো হয়েছে, সেখানে কারও প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ নয়। এটা ক্যামেরা ট্রায়ালের সংজ্ঞায়ও পড়ে না।

তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন গত সাত মাসযাবৎ এই কোর্টটা বসছে। এই সাত মাসে মূল আসামি কোর্টে হাজিরা দিচ্ছেন না। নিরাপত্তাজনিত কারণে বা অন্য কোনো কারণে তিনি যখন হাজিরা দিচ্ছেন না তখন সেইটার সুবিধার্থে নিরাপত্তা আরও সুনিশ্চিত করার জন্য সেখানে কোর্ট বসানো হয়েছে। আমার মনে হয়, এতে কারও অধিকার খর্ব করা হয়নি।’

‘নিজেদের নির্দোষ প্রমাণ করার চেষ্টা না করে বিচারকে কীভাবে বয়কট করা যায় বিএনপির আইনজীবীরা সেই চেষ্টাই করছে’- এমন মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, এতে শুধু এটাই প্রমাণিত হয়, তারা নিজেরা নিজেদের দোষী সাব্যস্ত করছেন। সেই কারণে তারা বিচারের সম্মুখিন হতে চান না।

তিনি বলেন, আমি মনে করি, তারা যদি নিজেদের নির্দোষ প্রমাণিত করতে পারেন, তাতে কোনো অসুবিধা নেই। বিচার সুষ্ঠু হচ্ছে এবং সুষ্ঠু হবে। ন্যায়বিচার তারা পাবে।

আদালতে খালেদা জিয়ার বক্তব্যের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মন্ত্রী বলেন, এটা হয়তো তার ইমোশোনাল বক্তব্য। এটাকে আমি খুব একটা গুরুত্ব দেব না। খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের পাঠানো আইনি নোটিশের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, কপি হাতে পাইনি। হাতে পেলে সিদ্ধান্ত নেব।

নির্বাচনকালীন সরকারের ব্যাপারে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, আমি আগেও বলেছি, আজকেও বলছি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেহেতু বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি, পার্টির নেতা। তিনিই একমাত্র ঘোষণা দিতে পারেন কখন তিনি নির্বাচনকালীন সরকার করবেন।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচনকালীন সরকার বলে সংবিধানে কিছু নাই এটাও ঠিক। আবার নির্বাচনকালীন সরকার হতে পারবে না এমন কথাও কিন্তু সংবিধানে নেই।

নির্বাচনকালীন সময়ে যেহেতু নীতিনির্ধারণ হয় না। সেই সময়ে বাংলাদেশের জনগণের অর্থ যাতে নষ্ট না হয় সে কারণে তিনি তার মন্ত্রিপরিষদের আকার ছোট করে আনবেন। সেটাকেই তিনি বলছেন নির্বাচনকালীন সরকার। সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদে আছে, নির্বাচনের সময় নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্বাচন কমিশন সব দায়িত্ব পালন করবেন।

(ওএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ০৬, ২০১৮)