স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর বাজারে দুই মাসের বেশি সময় ধরে প্রতি কেজি ১০০ টাকার উপরে বিক্রি হওয়া কাঁচা মরিচের দাম কমে তিন ভাগের এক ভাগে দাঁড়িয়েছে।

শুক্রবার কারওয়ান বাজার, রামপুরা, মালিবাগ হাজীপাড়া, খিলগাঁও, সেগুনবাগিচা ও শান্তিনগরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে রাজধানীতে কাঁচা মরিচ ১২০-১৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। সেই মরিচ এখন ৪০ টাকায় নেমে এসেছে।

বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মান ও বাজার ভেদে কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৩০-৬০ টাকা কেজি। একই মানের মরিচও বাজার ভেদে ভিন্ন ভিন্ন দামে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

শুক্রবার কারওয়ান বাজারে গিয়ে দেখা যায় ভালো মানের কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৪০ টাকা কেজি। একই মানের কাঁচা মরিচ শান্তিনগর বাজারে ৬০-৭০ টাকা এবং রামপুরা ও খিলগাঁও অঞ্চলে ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মরিচের দামের বিষয়ে কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী মো. আফজাল বলেন, দুই মাসের বেশি সময় ধরে কাঁচা মরিচ ১০০ টাকার উপরে কেজি বিক্রি করেছি। গত সপ্তাহেও মরিচের কেজি ১০০ টাকা ছিল। এখন তা ৪০ টাকায় বিক্রি করছি।

এমন দাম কমার কারণ হিসেবে এই ব্যবসায়ী বলেন, এখন মরিচের ভরা মৌসুম। এখন না তুললে কিছুদিন পর পেকে যাবে। এ জন্য অধিকাংশ চাষি একসঙ্গে মরিচ তুলছেন। ফলে বাজারে সরবরাহ বাড়ায় দাম কমে গেছে।

খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী খায়রুল মিয়া বলেন, গত সপ্তাহে এক পোয়া (২৫০ গ্রাম) কাঁচা মরিচ বিক্রি করেছি ৩০ টাকা। আর এখন বিক্রি করছি ১৫ টাকা পোয়া। কেজি নিলে ৫০ টাকায় দেয়া যাবে।

হঠাৎ কাঁচা মরিচের এমন দাম কমার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা আড়ৎ থেকে কম দামে আনতে পারছি এ জন্য বিক্রিও করছি কম দামে। কিছুদিন আগেও আড়তে পছন্দমত মরিচ পাওয়া যেতো না। আর এখন ভালো মানের মরিচ ভরপুর, যোগান অনেক বেড়েছে। এ কারণেই হয়তো আড়তে দাম পড়ে গেছে।

এদিকে কোরবানির ঈদের প্রভাবে গত সপ্তাহে কমে যাওয়া বয়লার মুরগির দাম আজও অপরিবর্তিত রয়েছে। সাদা বয়লার মুরগি আগের সপ্তাহের মতো বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৩০ টাকা কেজি, যা ঈদের আগে ১৫০-১৬০ কেজি দরে বিক্রি হয়।

বয়লার মুরগির মতো অপরিবর্তিত রয়েছে অধিকাংশ সবজির দাম। তবে শিমের দাম কিছুটা বেড়েছে। গত সপ্তাহে ১০০-১২০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া শিমের দাম বেড়ে ১৪০-১৫০ টাকা হয়েছে।

বাজারের আর এক দামি সবজি পাকা টমেটোর দাম কিছুটা কমেছে। বাজার ভেদে ৭০-১০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। আগের সপ্তাহে এ সবজিটির কেজি ছিল ১০০-১২০ টাকা। অপরিবর্তিত রয়েছে গাজরের দাম। এ সবজিটি আগের সপ্তাহের মতো বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকা কেজি।

ছোট আকারের প্রতিপিস ফুলকপি আগের সপ্তাহের মতো বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩৫ টাকায়। পাতাকপির দামও অপরিবর্তিত রয়েছে। আজও এ পণ্যটি ২৫-৩০ টাকা পিস বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া গত সপ্তাহের দামে বিক্রি হওয়া সবজির মধ্যে রয়েছে- বেগুন, উস্তা, বরবটি, কাঁকরোল, করলা, পটল, ঝিঙা, ধুন্দল, ঢেঁড়স, লাউ। বাজার ভেদে বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৩০-৫০ টাকা কেজি। উস্তার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা কেজি।

এছাড়া বরবটি ৫০-৬০ টাকা, চিচিংগা, পটল, ঝিঙা, ধুন্দল, কাঁকরোল ও করলা বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকা কেজি। পেঁপে আগের মতো ২০-৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। ঢেঁড়স পাওয়া যাচ্ছে ২০-৩০ টাকা কেজির মধ্যে।

এদিকে গত সপ্তাহের মতোই দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫৫ টাকা কেজি। আর আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২৫-৩০ টাকা কেজি।

কারওয়ানবাজারের ব্যবসায়ী সাইদুর মিয়া বলেন, বাজারে শিমের সরবরাহ কমেছে। এ কারণে দাম কিছুটা বেড়েছে। তাছাড়া বাকি প্রায় সব সবজিই আগের দামে বিক্রি হচ্ছে।

রামপুরার মুরগি ব্যবসায়ী ময়নুল বলেন, এখনও বেশিরভাগ মানুষের ফ্রিজে কোরবানির মাংস রয়েছে। যে কারণে মুরগির চাহিদা কম। তাই দামও কিছুটা কম। তবে চাহিদা বাড়লে মুরগির দাম আবার বেড়ে যেতে পারে।

(ওএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ০৭, ২০১৮)