শফিকুল ইসলাম মিন্টু, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) : ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের গৌরীপুর উপজেলার কলতাপাড়া বাজারে সড়ক ও জনপদ (সওজ) বিভাগের কোটি টাকা মূল্যের জায়গা দখল করে দোকান নির্মাণ করে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে স্থানীয় তিন প্রভাবশালী।

স্থানীয়দের অভিযোগ, সওজের কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে ওই তিন প্রভাবশালী কোটি টাকার জায়গা দখল করে নির্বিঘ্নে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। দখলদার উচ্ছেদে কোনো কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেনা স্থানীয় প্রশাসন ও সওজ কর্তৃপক্ষ। তবে অভিযুক্ত ওই তিন দখলদারের দাবি, সওজের ভবন ঘেঁষেই তাদের জায়গা রয়েছে। ভবনটি খালি পড়ে থাকায় তারা এখানে দোকান নির্মাণ করে ব্যবসা করছে। জায়গা দখলের অভিযোগ সত্য নয়।

স্থানীয় ও সওজ সূত্রে জানা গেছে, ষাঁটের দশকে ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের পাশে কলতাপাড়া বাজারে প্রায় তিন শতক জমির ওপর চৌকিদার শেড নির্মাণ করে তৎকালীন সিঅ্যান্ডবি (বর্তমান সওজ)। পাকাভবনে নির্মিত চৌকিদার শেডটিতে সওজের নির্মাণ শ্রমিকরা থাকতো। ১৯৮৬ সাল থেকে এই চৌকিদার শেডটি পরিত্যাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। তিন বছর আগে উপজেলার ডৌহাখলা ইউনিয়নের নন্দীগ্রামের দুই ভাই নাজিম উদ্দিন ও শামছুল ইসলাম, চুড়ালি গ্রামের আব্দুল হেকিম ওই চৌকিদার শেডটি দখল করে দোকান নির্মাণ করে ব্যবসা শুরু করেন।

শনিবার সরজমিনে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, চৌকিদার শেডটির পাকাভবন দখল করে একপাশে নাজিম উদ্দিন মুরগির দোকান দিয়েছেন, মাঝখানের অংশ দখল করে চায়ের দোকান দিয়েছেন শামছুল ইসলাম। অপরদিকে পাকা ভবনের একাংশ সংস্কারের পাশাপাশি টিনের চালা নির্মাণ করে হার্ডওয়্যায়ের দোকান নির্মাণ করেছেন আব্দুল হেকিম। বর্তমানে ওই দোকান দেখভাল করছেন তার ছেলে আশরাফুল।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে দখলদার নাজিম উদ্দিন বলেন, সিঅ্যান্ডবি’র ভবনটি পরিত্যাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকায় ঈশ্বরগঞ্জ সওজের এক কর্মকর্তা আমার বোন জামাইকে এখানে দোকান করতে বলেছিলো। কিন্তু উনি ভয় পেয়ে দোকান নির্মাণ না করায় আমরা দুই ভাই দোকান করেছি।

অপর দখলদার আব্দুল হেকিমের ছেলে আশরাফুল বলেন, সিঅ্যান্ডবি’র এই ভবনের পাশেই আমাদের জায়গা রয়েছে। তাছাড়া এটি খালি পড়ে থাকায় আমরা সংষ্কার করে দোকান করেছি। সিএন্ডবি জায়গায় চাইলেই দিয়ে দিবো। দখলের অভিযোগ সত্য নয়।

ঈশ্বরগঞ্জ সড়ক ও জনপদ বিভাগের (সওজ) উপ-সহকারী প্রকৌশলী বাবুল হোসেন বলেন, কলতাপাড়া বাজারে আমাদের একটি পাকা ভবনের চৌকিদার শেড পরিত্যাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। তবে ভবনটি দখল হয়ে গেছে কিনা জানিনা। খোঁজ নিয়ে দখলদারদের উচ্ছেদের জন্য নোটিশ করা হবে।

কিশোরগঞ্জ সড়ক ও জনপদ বিভাগের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদুল আলম বলেন, সওজের জায়গা দখলের বিষয়টি আমারা জেনেছি। যারা সরকারি জায়গা দখল করেছে জায়গা ছেড়ে দেয়ার জন্য তাদের নোটিশ দেয়া হবে। না ছাড়লে ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে উচ্ছেদ করা হবে।

(এসআইএম/এসপি/সেপ্টেম্বর ০৮, ২০১৮)