রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : মুক্তিযুদ্ধকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশ ভাবা যায় না। সাতক্ষীরা জেলা মুক্তিযোদ্ধা সাংসদের সাবেক কমাণ্ডার মুক্তিযোদ্ধা ইনামুল হক বিশ্বাস ১৯৯০ সাল থেকে অসহায়, নির্যাতিত ও অসংগঠিত মুক্তিযোদ্ধাদের অধিকার আন্দোলনের লক্ষ্যে সংগঠণ শুরু করেন। 

২০০১ সালের অক্টোবর মাসে চারদলীয় জোট ক্ষমতায় আসার পর তারা জামায়াতকে মন্ত্রীত্ব দিয়ে দেশের মুুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে নিশ্চিহ্ন করার তৎপরতা শুরু করেন। তাদের রক্তচক্ষুকে ভয় না করে ইনামুল হক রাজপথে থেকেছেন বীরের মতো। ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্র“য়ারি থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত সাতক্ষীরা জেলাজুৃড়ে জামায়াতের যে তাণ্ডব তার বিরুদ্ধে সর্বশক্তি দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা ও জনতাকে নিয়ে আকাশ বাতাস কাপানো স্লোগান দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের পতাকা ও জাতীয় পতাকাকে সবার মাঝে তুলে ধরে রেখেছিলেন অকুতোভয় সৈনিক ইনামুল।

তিনি ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটির জেলা কমিটির আহবায়ক হিসেবে মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরবর্তী বংশধরদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে সকলের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার আহবান জানিয়ে ছিলেন। তার অসম্পূর্ণ কাজকে সম্পন্ন করার জন্য সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।

শনিবার সকাল ১০টায় সাতক্ষীরা সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে সাতক্ষীরা নাগরিক মঞ্চ আয়োজিত বীর মুক্তিযোদ্ধা ইনামুল হক বিশ্বাসের স্মরনসভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক মঞ্চের আহবায়ক অ্যাড. ফাহিমুল হক কিসলুর সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন সাংসদ অ্যাড.মুস্তফা লুৎফুল্লাহ। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর বিশ্বাস সুদেব কুমার, সিটি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ সুভাষ সরকার, জেলা জাসদের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা কাজী রিয়াজ, সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক ইদ্রিস আলী, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবু, তালা উপজেলা চেয়ারম্যান ঘোষ সনৎ কুমার, কলারোয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ফিরোজ আহম্মেদ স্বপন, জজ কোর্টের পিপি অ্যাড. ওসমান গনি, মুক্তিযোদ্ধা কমাণ্ডার মোশাররফ হোসেন মশু,সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি অ্যাড. আবুল কালাম আজাদ, ইনামুল হক বিশ্বাসের ছেলে রুবেল, সিপিবি নেতা আবুল হোসেন, জাসদ নেতা ওবায়দুস সুলতার বাবলু, বাসদ নেতা অ্যাড. আজাদ হোসেন বেলাল, নিত্যানন্দ সরকার, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমাণ্ডের সদস্য সচিব লায়লা পারভিন সেজুতি, আওয়ামী লীগ নেতা রাজিদুজ্জামান রাশি, জাসদ নেতা মুক্তিযোদ্ধা অ্যাড. মোস্তফা নুরুল আলম, মুক্তিযোদ্ধা ও ফিংড়ি ইউপি’র সাবেক চেয়ারম্যান আবুল খায়ের সরদার, জেলা সাংস্কৃতি পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হেনরি সরদার, ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা স্বপন কুমার শীল, নাগরিক মঞ্চের সদস্য সচিব আলী নুর খান বাবুল, উদীচি শিল্পগোষ্ঠীর সাতক্ষীরা শাখার সভাপতি ছিদ্দিকুর রহমান, ইনামুলের সহপাঠী আব্দুর রাজ্জাক প্রমুখ।

তবে কয়েকজন বক্তা আক্ষেপের সঙ্গে বলেন, চলতি বছরের ১৫ এপ্রিল ইনামুল হক বিশ্বাস মারা যাওয়ার পর প্রায় চার মাস অতিক্রান্ত। অথচ মুক্তিযোদ্ধা কমাণ্ডের পক্ষ থেকে তার জন্য কোন স্মরণসভা করা হয়নি। দেরীতে হলেও জেলা নাগরিক মঞ্চ যে উদ্যোগ নিয়েছে তা সকলের প্রশাংসার দাবি রাখে।

সভা শুরুতেই জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন শেষে ইনামুল হক বিশ্বাসসহ সকল প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

সমগ্র অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন হাফিজুর রহমান মাসুম।

(আরকে/এসপি/সেপ্টেম্বর ০৮, ২০১৮)