স্টাফ রিপোর্টার : আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় যেতে পারে-মানছেন বিএনপি নেতা আবদুল মঈন খান। তবে তারা এ দেশের মানুষের মন খনও জয় করতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ২০ দলের শরিক জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপার যুব সংগঠন ‘যুব জাগপা’র কেন্দ্রীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখছিলেন বিএনপির সাবেক মন্ত্রী।

২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে জয়ের পর টানা প্রায় ১০ বছর ধরে ক্ষমতায় আওয়ামী লীগ। এর মধ্যে মাঝে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে তারা আগের নির্বাচনের চেয়ে সহজ জয় পায়। বিএনপি-জামায়াত জোটের বর্জন এবং ভোট প্রতিহতের আন্দোলনের মধ্যে তিনশ আসনের মধ্যে ১৫৩ জন সংসদ সদস্য জয় পান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়।

বিএনপির দাবি, আওয়ামী লীগ জোর করে ক্ষমতায় টিকে আছে। আর আগামী নির্বাচনেও তারা আবারও একই প্রক্রিয়ায় জয়ের চেষ্টা করছে।

মঈন খান বলেন, ‘আওয়ামী লীগ জোর করে হয়তো আবারো ক্ষমতায় যেতে পারবে কিন্তু এদেশের মানুষের মন জয় করতে পারবে না।’

ক্ষমতাসীন দল জনগণের ভোটাধিকার ছিনিয়ে নিয়েছে অভিযোগ করে বিএনপি নেতা বলেন, ‘এদেশে এটা আর হতে দেয়া যাবে না।... একটা কথা মনে রাখবেন বেগম জিয়া কখনও পেছনের দরজা দিয়ে রাজনীতিতে আসে নাই যে, তাকে ছাড়া নির্বাচন করে ফেলবেন। নির্বাচন করতে হলে তাকে নিয়েই করতে হবে।’

‘দেশের মানুষের এখন একটাই চাওয়া। একটা অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটা গ্রহণযোগ্য, স্বচ্ছ নির্বাচন। কিন্তু আওয়ামী লীগ সেটা চায় না। কারণ, তারা জানে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তাদের ভরাডুবি হবে। তাই ভয় পাচ্ছে।’

সম্মেলনে প্রধান অতিথি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেন, ‘এদেশ স্বাধীন হয়েছিল দুটি আদর্শের উপর ভিত্তি করে। সেটা হলো, গণতন্ত্র এবং এদেশের মানুষের অর্থনীতির সমৃদ্ধি। আজকে সেই গণতন্ত্রকেও হত্যা করার পাঁয়তারা চলছে এবং কয়লা চুরি, ব্যাংক চুরি, সোনা চুরি, পাথর চুরির মধ্যে দিয়ে এদেশের অর্থনীতিকেও ধংস করা হচ্ছে।’

‘মুক্তিযুদ্ধের ডাক দেন জিয়া, ফায়দা লুটেন শেখ মুজিব’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, বাংলাদেশের জন্মের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দানকারী দল আওয়ামী লীগের কোনো সম্পর্ক নেই। আওয়ামী লীগ সেখানে ছিল শুধুই পর্যবেক্ষক।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানেরও কোনো ভূমিকা ছিল না-এমন দাবি করে আলাল বলেন, ‘প্রকৃত যুদ্ধের ডাক দিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। কিন্তু তার ফায়দা লুটেছে শেখ মুজিব এবং এখন লুটছে তার কন্যা।’

‘১৯৭৫ সালে গণতন্ত্রেরের আলো নিভে গিয়েছিল শেখ মুজিবের হাতে। তখনি এদেশের গণতন্ত্র রক্ষা পুরুষ হিসেবে আবির্ভাব হন জিয়াউর রহমান এবং তিনি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেন। কিন্তু এখন আবার নতুন করে এদেশে গণতন্ত্রের হত্যাকারীর আবির্ভাব হয়েছে।’

‘এখন এদেশের সকল প্রকার নির্বাচনে ভোট জালিয়াতি হয়। ভোট জালিয়াতি থেকে সামান্য স্কুল কলেজের নির্বাচনগুলোও রক্ষা পায় না।’

সরকারের ফাঁদে বিএনপি পা দেবে না উল্লেখ করে আলাল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ভেবেছিল, বেগম জিয়াকে জেলে পুরে দিলে বিএনপি ভেঙে যাবে এবং তারা জ্বালাও পোড়াও আন্দোলন করবে এবং জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। না, বোকার রাজ্যে বসবার করছেন আপনারা। বিএনপি কখনো আপনাদের পাতা ফাঁদে পা দেয়নি আর কখনও দেবেও না।‘

যুব জাগপার সভাপতি তাসমিয়া প্রধান, সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুৎফর রহমান প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

(ওএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ০৮, ২০১৮)