শরীয়তপুর প্রতিনিধি : কিছুতেই থামানো যাচ্ছেনা। প্রতিনিয়ত ভাঙছে নদী, ভাংছে মানুষের স্বপ্ন। শতাব্দীর ভয়াবহতম ভাঙনে দিশেহারা শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার লাখো মানুষ। গত কয়েক দিনের ভাঙনে বিলীন হয়েছে অন্তত দুই হাজার বসতি, ৫ শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, পাকা সড়ক, বিদ্যুৎ লাইন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ ফসলী জমি। নদী ভাঙনকে দুর্যোগ বিবচনায় এনে দুর্গত এলাকা ঘোষণার দাবি জানিয়েছন এলাকাবাসী।

আজ সকালে বিলীন হয়েছে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সীমানা প্রাচীর, হাসপাতাল মসজিদের একাংশ ও হাসপাতালের এ্যাম্বুলেন্স রাখার গ্যারেজটি। পদ্মা নদী ভাঙতে ভাঙতে ঢুকে গেছে হাসপাতালের সীমানায়।

হাসপতালের তিনটি মুল ভবন, পরিবার পরিবল্পনা কার্যালয়, চিকিৎসক কোয়াটার, কর্মচারী কোয়াটারসহ মোট ১২টি বহুতল ভবন পরেছে ভাঙন ঝুঁকিতে। হাসপতালের চিকিৎসা সরঞ্জাম ও আসবাবপত্র সরিয়ে নেয়া হয়েছে অন্যত্র। একটি পরিত্যাক্ত ভবনে কোন রকমে দেয়া হচ্ছে হাসপাতালের বহির্বিভাগ চিকিৎসা সেবা। একটি আবাসিক কোয়াটারের নিচ তলায় কোন রকমে দেয়া হচ্ছে জরুরী বিভাগের সেবা।

তিন শত বছরের পুরনো মুলফৎহঞ্জ বাজারের অন্তত ২ হাজার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মধ্য প্রায় ৩ শত দোকান ইতমধ্যে বিলীন হয়ে গেছে। এই বাজারের দেড় হাজারেরও বেশী দোকান এখন ভাংগন ঝুকিতে রয়েছ। এছারাও নড়িয়ার ওয়াপদা বাজার, সাধুর বাজার ও বাঁশতলা বাজারের দুই শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ গোটা এলাকা বিলীন হয়েছে গত একমাসে।

নড়িয়া পৌরসভার মেয়র শহিদুল ইসলাম বাবু জানিয়েছেন, পৌরসভার দুইটি ওয়ার্ডের প্রায় এক হাজার সাত শত পরিবারের সহায় সম্বল সব কিছু হারিয়েছেন নদী বক্ষে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে কিছু শুকনা খাদ্য, নগদ টাকা, ত্রানের চাল দেয়া হয়েছে। তিন শতাধিক পরিবারকে ঢেউ টিন দেয়া হবে।

এদিকে নদী ভাঙনের অস্থায়ী প্রতিরক্ষার জন্য তিন দফায় পৌনে সাত কোটি টাকার বালু ভর্তি জি ব্যাগ ফেলা হচ্ছে নদীতে।

স্থানীয়দের দাবি, সাত কোটি টাকার বালু ভর্তি ব্যাগ পানিতেই খেয়েছে। ভাঙন রোধে এক পয়সারও কোন কাজে আসেনি।

মেয়র বাবু এ বিষয়ে জানান, যতটুকু শুনেছি জিো ব্যাগ ডাম্পিং এর জন্য একটি কমিটি হয়েছে। কাকে নিয়ে কমিটি হয়েছে জানিনা। কত টুকু বা কি পরিমানে বালু ফেলা হচ্ছে তা জানিনা।

নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা ইয়াছমিন বলেন, নড়িয়া উপজেলার প্রায় চার হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নদী ভাঙনে। এখনো অব্যাহত আছে ভাঙন। আমরা সাড়ে ৩ হাজার পরিবারকে ৩০ কেজি করে ত্রাণের চাল দিয়েছি। আরো সাড়ে তিনশত পরিবারকে দুই বান্ডেল করে ঢেউ টিন দেয়া হবে। তিনি বলেন, উদ্ধতনদের সাথে কথা বলছি দুর্গত এলাকা ঘোষণার জন্য।

(কেএনআই/এসপি/সেপ্টেম্বর ০৯, ২০১৮)