আগৈলঝাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধি : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শৈশবের বিদ্যাপিঠ বরিশালের আগৈলঝাড়ার ১শ ২৫ বছরের ঐতিহ্যবাহী গৈলা মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় জাতীয় করনের লক্ষ্যে প্রায় ১১কোটি টাকার সম্পত্তি সরকারের নিকট হস্তান্তর করেছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা অনুযায়ি উপজেলা পর্যায়ে একটি করে মাধ্যমিক বিদ্যালয় জাতীয় করণের ঘোষণা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার গৈলা মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়কে জাতীয় করনের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

এর আগে সরকার থেকে উপজেলা পর্যায়ে একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়কে ‘মডেল বিদ্যালয়’ রূপান্তরিত করতে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ এমপি’র সর্বোচ্চ অবদানের কথা স্মরণ করে গৈলা মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি গিয়াস উদ্দিন মোল্লা ও প্রধান শিক্ষক জহুরুল হক জানান, শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রাপ্ত পত্র অনুযায়ী শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক অনুমোদনকৃত তাদের গৈলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি চূড়ান্তভাবে জাতীয় করণের অংশ হিসেবে বিদ্যালয়ের ৫একর ৫৫শতক জায়গাসহ নির্মিত ভবনসমুহ, গাছপালা, আসবাবপত্র, স্থাবর-অস্থাবরসহ সরকারী মূল্য হিসেবে ১০কোটি ২৩লাখ ১৬হাজার ৬শ ১৭টাকার মূল্যের সম্পত্তি বিদ্যালয় সভাপতি গিয়াস উদ্দিন মোল্লা ও প্রধান শিক্ষক জহিরুল হক দাতা হিসেবে স্বাক্ষর করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, (মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ) এর বরাবরে ৯অক্টোবর (রবিবার) আগৈলঝাড়া সাব-রেজিষ্ট্রার এমএ জলিল “ডিড অফ গিফট” দলিল সম্পাদন করেন। যার দলিল নং-১৭০০। উল্লেখিত সম্পত্তি হস্তান্তরের পর সংশ্লিষ্ঠ মন্ত্রণালয় জিও প্রদানের মাধ্যমে বিদ্যালয়টি সরকারী করণ চূড়ান্তভাবে বাস্তবায়িত হবে।

সচিব বরাবরে দলিল সম্পাদনের পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপুল চন্দ্র দাস সচিবের পক্ষে (মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ) দলিল গ্রহণ করেন। এসময় তাঁর অফিসে দোয়া ও মিলাদ অনুষ্ঠিত হয়।

১শ ২৫ বছর আগে শিক্ষানুরাগী কৈলাশ চন্দ্র সেন ১৮৯৩সালের ২৩জানুয়ারি বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠার পর কৈলাশ চন্দ্র সেন নিজে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের দ্বায়িত্বে থেকে বিদ্যালয়ের প্রাতিষ্ঠানিক ঐতিহ্যর রূপ প্রদান করেন। কালক্রমে গৈলা বিদ্যাপিঠ হয়ে ওঠে বিট্রিশ বিরোধী আন্দোলন, সংস্কৃতি চর্চা ও জেলার মধ্যে রাজনীতি চর্চার অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর বড় দুলাভাই ’৭৫এর ১৫আগষ্ট শহীদ মন্ত্রী আব্দুর রব সেরনিয়াবাতের সেরাল গ্রামের বাড়িতে থাকা অবস্থায় শৈশবে এই বিদ্যালয়ে অধ্যায়ন করেছেন।

দলিল হস্তান্তরের সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপুল চন্দ্র দাস, দলিলের পরিচিতি বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রইচ সেরনিয়াবাত, দলিলের স্বাক্ষী উপজেলা আওয়ামী লীগ সমন্বয়ক আবু সালেহ লিটন, উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান জসীম সরদার, গৈলা ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল হোসেন টিটু। অন্যান্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল হক সরদার, উপজেলা শ্রমিকলীগ সভাপতি এ্যাডভোকেট আবুল কাশেম সরদার, সাধারণ সম্পাদক সরোয়ার দাড়িয়া, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড আহ্বায়ক আবদুল্লাহ লিটন, আ’লীগ নেতা মানিক মোল্লা প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।

প্রসঙ্গত, বিদ্যালটিতে বর্তমানে ১৯জন শিক্ষক, ৩জন তৃতীয় শ্রেণি ও ৪জন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীসহ মোট ২৮জন ষ্ঠাফ ও ১৪০২ শিক্ষার্থী রয়েছে।

(টিবি/এসপি/সেপ্টেম্বর ০৯, ২০১৮)